নারী আইপিএল চ্যাম্পিয়ন সালমার ট্রেইলব্লেজার্স
উইমেনস টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জ তথা নারী আইপিএলের প্রথম আসরে ফাইনালে উঠেও শিরোপা জিততে ব্যর্থ হয়েছিল ট্রেইলব্লেজার্স। ফাইনাল ম্যাচের একদম শেষ বলে তারা হেরেছিল সুপারনোভাসের কাছে। নারী আইপিএলের পরের আসরের ফাইনালে ভেলোসিটিকে হারিয়ে পরপর দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয় সুপারনোভাস।
তবে তৃতীয় আসরে সব হিসেব বদলে দিলো ট্রেইলব্লেজার্স। ফাইনাল ম্যাচে তারা হারিয়েছে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন সুপারনোভাসকে, পেয়েছে প্রথমবারের মতো শিরোপার স্বাদ। ১১৮ রানের স্বল্প পুঁজি নিয়েও ১৬ রানের ব্যবধানে সহজ জয় পেয়েছে স্মৃতি মান্ধানার নেতৃত্বাধীন ট্রেইলব্লেজার্স।
প্রথম দুই আসরে না খেললেও, এবার নারী আইপিএলে নিজের অভিষেক মৌসুমেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেলেন বাংলাদেশ দলের তারকা খেলোয়াড় ও অধিনায়ক সালমা খাতুন। ফাইনাল ম্যাচে মাত্র ১৮ রান খরচায় প্রতিপক্ষ অধিনায়ক হারমানপ্রিত কাউরসহ দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেছেন সালমা।
শারজাহ ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১১৮ রান করেছিল সালমার ট্রেইলব্লেজার্স। সর্বোচ্চ ৬৮ রান করেন অধিনায়ক স্মৃতি। জবাবে সুপারনোভাসের ইনিংস থেমেছে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ১০১ রান করে। সালমার ৩ উইকেটের সুবাদে ১৬ রানের সহজ জয়ই পেয়েছে ট্রেইলব্লেজার্স।
রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই ট্রেইলব্লেজার্সের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে হাঁসফাঁস করতে থাকে সুপারনোভাসের ব্যাটাররা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মাত্র ১০ রানের মাথায় সাজঘরে ফিরে যান দুর্দান্ত ফর্মে থাকা চামারি আতাপাত্তু। তাকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন সোফি একেলেস্টোন।
দ্বিতীয় উইকেটে ২০ রানের জুটি গড়েন জেমাইমাহ রদ্রিগেজ ও তানিয়া ভাটিয়া। তবে রানরেটের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেননি তারা। সপ্তম ওভারে দিপ্তী শর্মার প্রথম শিকারে পরিণত হন ২০ বলে ১৪ রান করা তানিয়া। দলের রান যখন ৩৭ তখন দিপ্তীর বোলিংয়ে সাজঘরে ফিরে যান জেমাইমাহও।
এরপর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন অধিনায়ক হারমানপ্রিত ও শশীকলা সিরিবর্ধনে। দুজন মিলে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান করার দিকে মনোযোগ দেন, গড়ে ফেলেন ৩৭ রানের জুটি। ইনিংসের ১৩তম ওভারে প্রথমবারের মতো আক্রমণে আনা হয় সালমাকে। তার দ্বিতীয় ওভারে ভাঙে হারমান ও শশীকলার জুটি।
ইনিংসের ১৫তম ওভারে সালমার ওভারে প্যাডেল সুইপ করতে গিয়ে ফাইন লেগে ঝুলন গোস্বামীর হাতে ধরা পড়েন ১৯ রান করা শশীকলা। যা বাড়িয়ে দেয় ট্রেইলব্লেজার্সের সম্ভাবনা। পরে নিজের চতুর্থ ও শেষ ওভারে জয়ের পথে বাকি থাকা অন্য কাঁটা, সুপারনোভাস অধিনায়ক হারমানকে সরাসরি বোল্ড করে দেন সালমা।
এ দুই উইকেট নেয়ার মাধ্যমেই মূলত দলের নিশ্চিত করেন বাংলাদেশের এই তারকা ক্রিকেটার। তবে এখানেই থেমে থাকেননি তিনি, নিজের শেষ ওভারে শূন্য রানে ফেরান পুজা ভাস্ত্রাকারকেও। সবমিলিয়ে ৪ ওভারের স্পেলে কোনো বাউন্ডারি হজম না করে ১৮ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন সালমা।
ইনিংসের শেষ ওভারে জয়ের জন্য সুপারনোভাসকে করতে হতো ২৪ রান। একলেস্টোনের করা সেই ওভারে তারা করতে পেরেছে মাত্র ৭ রান, ফলে ১৬ রানের জয়ে শিরোপা জিতে নিয়েছে সালমার ট্রেইলব্লেজার্স।
এর আগে অধিনায়ক স্মৃতি মান্ধানা যেমন ঝড়ো ব্যাটিং করেছেন, আর একজনও যদি তেমন করতে পারতেন, তবে বিশাল পুঁজি পেয়ে যেত ট্রেইলব্লেজার্স। স্মৃতির ঝড়ো হাফসেঞ্চুরিতে ভর করেই নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ১১৮ রান তুলতে পেরেছে ট্রেইলব্লেজার্স।
অথচ স্মৃতি মান্ধানা রীতিমত কাঁদিয়ে ছাড়েন সুপারনোভাসের বোলারদের। ওপেনিংয়ে নেমে ৪৯ বলে ৫ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় তিনি করেন ৬৮ রান। এছাড়া দেয়ান্দ্রো ডটিন ৩২ বলে ২০ আর রিচা ঘোষ ১৬ বলে করেন ১০ রান।
স্মৃতির হাফসেঞ্চুরিতে এক পর্যায়ে ২ উইকেটেই ১১২ রান ছিল ট্রেইলব্লেজার্সের। সেখান থেকে রাধা যাদবের ঘূর্ণিতে আর ৬ রান যোগ করতে গিয়ে ৬টি উইকেট হারায় দলটি। প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের পর কেউ দুই অংক ছুঁতে পারেননি।
রাধা যাদব মাত্র ১৬ রান খরচায় নেন ৫টি উইকেট। এছাড়া পুনম যাদব আর সিরিবর্ধনে নেন ১টি করে উইকেট।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)