প্রার্থনা আর আনন্দ উৎসবে বড়দিন উদযাপিত
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদা, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, প্রার্থনা ও আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে শুভ বড়দিন উদযাপিত হয়েছে।
খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উপলক্ষ্যে বুধবার দেশের গির্জায় গির্জায় ছিল প্রার্থনা ও আনন্দ-উৎসবের নানা আয়োজন। শিশুদের উপহার দেওয়া এবং স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ ছিল উৎসবের মূল অনুষঙ্গ।
এদিন রঙিন বাতি দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়। অনেকে পারিবারিকভাবেও নানা কর্মসূচি পালন করেন।
এদিকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত এবং ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও মজবুত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার বঙ্গভবনে খ্রিষ্ট সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিনে রাষ্ট্রপতির দেওয়া এক সংবর্ধনা ও শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে খ্রিষ্টান নেতাদের ও দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেওয়া শুভেচ্ছা ভাষণে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ।
এদেশে সব ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম ও আচার-অনুষ্ঠানাদি স্বাধীনভাবে ও আনন্দঘন পরিবেশে আবহমানকাল থেকেই পালন করে আসছে। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন দেশের খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রীতি ও ঐক্য স্থাপনসহ যুদ্ধ-বিগ্রহপূর্ণ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যিশুখ্রিষ্টের শিক্ষা ও আদর্শ ফলপ্রসূ অবদান রাখতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
রাষ্ট্রপতি যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন উপলক্ষ্যে শুভ বড়দিনের একটি কেক কাটেন। তিনি খ্রিষ্ট ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় তিনি ফটোসেশনে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির সহধর্মিণী ড. রেবেকা সুলতানা, অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ক্রুজ, ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত কেভিন এস রান্ডেল, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, ফাদার আলবার্ট রোজারিও এবং রেভারেস্ট মার্থা দাস, সংশ্লিষ্ট সচিবরা বিভিন্ন ক‚টনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিরা, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এবং ধর্মীয় নেতারা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার বড়দিনের সকাল সাড়ে ৬টায় রাজধানীর তেজগাঁও হলি রোজারি চার্চে প্রধান যাজক, ফাদার জয়ন্ত এস গমেজ প্রার্থনার মধ্য দিয়ে এ উৎসব শুরু করেন। শুরুতে প্রার্থনায় যিশুর মহিমাকীর্তন এবং ইউক্রেন-রাশিয়া, ইসরাইল-ফিলিস্তিন, সিরিয়াসহ সারাবিশ্বের সব যুদ্ধ বন্ধ ও বিশ্বশান্তি কামনা করা হয়। এ উপলক্ষ্যে প্রার্থনা হয়েছে দেশের সব গির্জায়।
বুধবার ছিল সরকারি ছুটির দিন। দিনটি উপলক্ষ্যে রাজধানীর গির্জা ও হোটেলগুলো বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। গোশালা স্থাপন এবং রঙিন কাগজ, ফুল ও আলোর বিন্দু দিয়ে দৃষ্টিনন্দনভাবে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়। গির্জা ও অভিজাত হোটেলগুলোতে শিশুদের জন্য ছিল নানা আয়োজন।
গির্জাগুলো পরিদর্শনে দেখা যায়, বড়দিন উপলক্ষ্যে গির্জায় প্রদর্শন করা হয়েছে সদ্যজাত যিশু, যিশুর মা ও পূর্ণবয়স্ক যিশুর মূর্তি। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা সেখানে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। বড়দিন উপলক্ষ্যে দেশের সব গির্জার ভেতরে ও বাইরে সাজানো হয়। বাহারি রঙের বেলুন, ফুল ছাড়াও আলোকসজ্জায় বর্ণিল একাধিক ক্রিসমাস ট্রি। রাজধানীর গির্জাগুলোর পাশাপাশি পাঁচতারকা হোটেল সোনারগাঁও, লা মেরিডিয়ান, র্যাডিসন ও ওয়েস্টিনসহ বিভিন্ন হোটেলে সুসজ্জিত ক্রিসমাস ট্রি স্থাপন করা হয় এবং কেক কাটা হয়। দিনটি উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ধর্মীয় আসর বসে।
যিশুখ্রিষ্ট ফিলিস্তিনের বেথলেহেমে ২৫ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন-সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার এবং মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথ দেখাতে যিশুর এ ধরায় আগমন। পাপের শৃঙ্খলে আবদ্ধ মানুষকে মুক্তির বাণী শুনিয়েছেন যিশুখ্রিষ্ট।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)