সন্তান বুদ্ধিদীপ্ত হয় কার জিনে মায়ের না বাবার? জেনে নিন বৈজ্ঞানিক সত্য


বিশ্বের প্রতিটি বুদ্ধিদীপ্ত মানুষের বুদ্ধিমত্তার নেপথ্যে কার অবদান থাকে? মা না বাবার? এ নিয়ে ঝগড়া-তর্ক-বিতর্ক চলতেই থাকে! কারও মত বাবার, কারও মায়ের, কেউ কেউ দু পক্ষেরই সঙ্গ দেন! কিন্তু আসল সত্যিটা কী? গবেষণা বলেছে, একজন শিশুর বুদ্ধিমত্তা নির্ভর করে তার মায়ের জিনের ওপর! সেখানে বাবার জিনের কোনও ভূমিকা নেই।
মায়ের জিন থেকেই শিশুর মস্তিষ্কে বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটে। দীর্ঘ বিতর্ক ও সমীক্ষা শেষে এই রায় দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ডিম্বাণুতে তার উপস্থিতি একজোড়া। কিন্তু শুক্রাণুতে মাত্র একটি এক্স ক্রোমোজোম থাকে।
জিন বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র এক্স ক্রোমোজোমই বহন করে বুদ্ধিদীপ্ত জিন। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, বাবার থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জ্ঞান সম্পর্কীয় উন্নত আচরণ যুক্ত জিন নিজে থেকেই অকেজো হয়ে যায়। এই কারণে শিশুমনে বুদ্ধির বিকাশ ঘটার পিছনে একমাত্র প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে তার মায়ের থেকে পাওয়া জিন।
পরীক্ষাগারে ইঁদুরের শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে মায়ের জিন প্রবেশ করিয়ে দেখা গেছে, মাথা ও মস্তিষ্কের আকারে বৃদ্ধি ঘটলেও তাদের শরীরের বাকি অংশ তুলনায় ছোট হয়। অন্যদিকে, বাবার জিনের পরিমাণ বেশি থাকলে শরীর বড় হলেও মাথা ও মগজ ছোট হয়।
১৪ থেকে ২২ বছর বয়সী ১২,৬৮৬ জন তরুণের ওপর করা সমীক্ষায় দেখা গেছে, মায়ের আইকিউ’র ওপরই নির্ভর করে সন্তানের বুদ্ধিমত্তার দৌড়। বিজ্ঞানীরা দেখেন, ইঁদুরের মস্তিষ্কের ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন অংশে বাবা ও মায়ের জিন কার্যকর হয়। বাবার জিন দেহের লিম্বিক সিস্টেমে কাজ করে। এই অংশটি সেক্স, খাবার ও আগ্রাসী মানসিকতা তৈরিতে কাজ করে। বিজ্ঞানীরা সেলেব্রাল কর্টেক্সে বাবার কোনো জিন খুঁজে পাননি। এই অংশে কগনিটিভ ফাংশনের অধিকাংশটুকু কাজ করে। কারণ দর্শন, চিন্তাশক্তি, ভাষা এবং পরিকল্পনা তৈরির সঙ্গে যুক্ত। তবে গবেষণায় এটাও বলা হয়েছে, জিনতত্ত্বই মানুষের বুদ্ধিমত্তার একমাত্র নির্ধারক নয়। বুদ্ধিমত্তার ৪০-৬০ শতাংশ আসে বংশানুক্রমে। বাকিটুকু আসে পরিবেশ থেকে।
‘আন্ডারস্টছান্ডিং মাদারস জেনেটিকস’ নামের সমীক্ষায় দেখা যায়, মায়ের সঙ্গ, ছোঁয়া, আবেগও শিশুর আইকিউ উন্নত করে! মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০০ জন শিশুর ওপর একটি পরীক্ষা করা হয়। সেখানে দেখা যায়, যে সন্তানেরা মায়ের বেশি ঘনিষ্ঠ, মায়ের সঙ্গে বেশি সময় কাটায় তারা মাত্র দু’বছর বয়সেই, বয়সের তুলনায় কঠিন ও জটিল কোনও খেলা যেমন ‘পাজল’-এর সমাধান খুব সহজেই করে ফেলছে!
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় দেখা গেছে, মায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা শিশুর মস্তিষ্ক উন্নত করে। পাশাপাশি মায়ের ঘনিষ্ঠ শিশুরা কম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে।
সূত্র: ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউকে

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
