বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

৭১’এ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বাঘের খাঁচায় ছেড়ে দেয় পাকিস্থানি সেনারা

১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর। ঠাকুরগাঁওয়ের ইস্ট পাকিস্থান রাইফেলস (ইপিআর) ক্যাম্প। ভয়ংকর নির্যাতনের পর পাকিস্থানি সেনারা ক্যাম্পের বাঘের খাঁচায় ছুড়ে ফেলল এক তরুণকে। হুংকার দিয়ে দুটো বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ল তাঁর ওপর। টেনে ছিন্নভিন্ন করে খেয়ে ফেলল তাঁকে। ওই তরুণের নাম সালাহউদ্দিন। তিনি ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

মুক্তিযুদ্ধের সময় ঠাকুরগাঁও ছিল দিনাজপুর জেলার একটি মহকুমা। এই মহকুমার পীরগঞ্জ থানার কোষারানীগঞ্জ গ্রামের সন্তান শহিদ সালাহউদ্দিন।

শহিদ সালাহউদ্দিনের পরিবার, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও প্রামাণ্য সালাহউদ্দিন (বাঘের খাঁচায় মুক্তিযোদ্ধার প্রাণোৎসর্গ) গ্রন্থ থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে পাকিস্থান সেনাবাহিনী দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে বর্বর গণহত্যা চালায়। তারা ১৮ এপ্রিল পীরগঞ্জে গণহত্যা চালাতে গিয়ে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ-লুটপাট ও নারী নির্যাতন করে। গণহত্যার ভয়ে অনেকেই গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান। আবার অনেকেই যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। সে সময়ের দিনাজপুর সুরেন্দ্রনাথ কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র সালাহউদ্দিনও সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চলে যান ভারতে। প্রশিক্ষণ শেষ করে যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। অস্ত্র হাতে অপারেশন শেষে ছুটতে থাকেন একের পর এক এলাকায়।

১৯৭১ সালের ১০ নভেম্বর। সহযোদ্ধাদের সঙ্গে সালাহউদ্দিন ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জের জাবরহাট ক্যাম্পে অবস্থান করেছিলেন। সে সময় একটা দুঃসংবাদ এল। সালাহউদ্দিনের বাবাকে পাকিস্থানি সেনারা ধরে নিয়ে গেছে ইপিআর ক্যাম্পে। ভেঙে পড়লেন সালাহউদ্দিন। গভীর রাতে একজন সহযোদ্ধাকে জানিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলেন তিনি। ১১ থেকে ১২ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে সালাহউদ্দিন পৌঁছে গেলেন বাড়ি। ‘মা, মা…’ বলে ডাকতেই খুলে গেল ঘরের দরজার কপাট। পরিবারের সদস্যরা সালাহউদ্দিনকে দেখে আত্মহারা।

এদিকে সালাহউদ্দিন যখন গ্রামে ঢুকছিলেন, তখন রাজাকাররা তাঁকে দেখে ফেলে। খবর চলে যায় পাকিস্তানি সেনাদের দপ্তরে। সকাল ১০টার দিকে সালাহউদ্দিনের বাড়ি ঘিরে ফেলে পাকিস্থানি সেনারা। টের পেয়ে সালাহউদ্দিন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেও পারলেন না। সালাহউদ্দিনের মা নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও পাকসেনাদের কাছে ছেলের প্রাণভিক্ষা চেয়ে ব্যর্থ হন। এসময় তিনি ঘর থেকে কোরআন শরিফ এনে পাকসেনার ক্যাপ্টেনের হাতে দিয়ে বললেন, ‘আমার বাবাকে মারবে না, শুধু এটুকু কথা বলে যাও।’ কোরআন ছুঁয়ে ক্যাপ্টেন বলে, ‘নেহি মারুঙ্গা উনকো।’

এরপর পাকিস্তানি সেনারা সালাহউদ্দিনকে বন্দী করে নিয়ে যায় ঠাকুরগাঁওয়ের ইপিআর ক্যাম্পে (বর্তমান বিজিবি ঠাকুরগাঁও সদর দপ্তর)। সেখানেই পাকিস্তানি সেনাদের সদর দপ্তর। সেখানে এনে তাঁর কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের তথ্য বের করার চেষ্টা চালায় পাকসেনারা। কিন্তু সালাহউদ্দিন তাদের প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর তাঁর ওপর নেমে আসে ভয়ংকর নির্যাতনের স্টিম রোলার। প্রথমে ভয়ভীতি দেখানোর পর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে নির্যাতনের মাত্রা। চোখের মণিতে বড়শি বিঁধিয়ে নিষ্ঠুরভাবে টানার পরও অনড় থাকেন সালাহউদ্দিন। নির্যাতনের একপর্যায়ে কেটে নেওয়া হয় হাতের আঙুল। হাতে-পায়ে পেরেক ঠুকে তাঁকে ঝুলিয়ে রাখা হলো। তারপরও পাকসেনারা সালাহউদ্দিনকে বিন্দুমাত্র টলাতে পারেনি।

শেষপর্যন্ত সালাহউদ্দিনকে ঘিরে এক বর্বর সিদ্ধান্ত নেয় পাকসেনারা। শহরজুড়ে মাইকে প্রচারণা চালিয়ে মানুষজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ১২ নভেম্বর শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে পাকিস্তানি সেনারা তাঁর হাত বেঁধে ক্যাম্পে থাকা বাঘের খাঁচায় ছেড়ে দেয়। একটি বাঘ চোখের পলকেই সালাহউদ্দিনের বুক ও মুখে থাবা বসিয়ে দিল। সালাহউদ্দিন ‘মা, মা…’ বলে চিৎকার দিতেই খাঁচার দুই বাঘ মিলে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে লাগল তাঁর দেহ। আর এ দৃশ্য দেখে উল্লাসে ফেটে পড়ে রাজাকার ও পাকসেনারা।

সালাহউদ্দিনের চাচাতো ভাই মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, বিশ্বের ইতিহাসে কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে এভাবে হত্যার বর্বরতা আর আছে কি না, তা তার জানা নেই। এ ঘটনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক নির্মম ঘটনা। দেশের স্বাধীনতার জন্য সালাহউদ্দিন বাঘের খাঁচায় নিজের জীবন উৎসর্গ করলেও আজ সে ঘটনার খুব একটা আলোচনা নেই। বাঘের খাঁচায় সালাহউদ্দিনের জীবন উৎসর্গের ঘটনাটি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্তি এবং ১২ নভেম্বর শহিদ সালাহউদ্দিন দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবি করেন তিনি।

ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইব্রাহিম খান বলেন, ‘শহিদ সালাহউদ্দিনের বীরত্ব নিয়ে অনেক কিছু করার ছিল। কিন্তু আমরা তেমন কিছুই করতে পারিনি। এটা আমাদের কষ্ট দেয়।’
সৌজন্যে: আওয়ার নিউজ বিডি

একই রকম সংবাদ সমূহ

নড়াইলে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিহত- ২

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল: নড়াইলে মোটর সাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেল আরোহী আলসাহাব (২১)বিস্তারিত পড়ুন

কলারোয়ার ধানদিয়া ইউনিয়ন ইনষ্টিটিউশনে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

দেবাশীষ চক্রবর্ত্তী বাবু: কলারোয়ার ধানদিয়া ইউনিয়ন ইনষ্টিটিউশনে মহান স্বাধীনতা দিবসের মাস উপলক্ষেবিস্তারিত পড়ুন

জাতীয় শিশু পুরস্কার পেলেন সাতক্ষীরার মেয়ে নূনসাকিন বিনতে জামান (হৃদিতা)

নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার মেয়ে জাতীয় শিশু পুরস্কার অর্জন করেছে। জাতীয় পর্যায়েবিস্তারিত পড়ুন

  • রাজধানীর বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৬, শঙ্কামুক্ত নন দগ্ধরাও
  • জেএসসি-পিইসিই পরীক্ষার তথ্যটি বানোয়াট : শিক্ষা মন্ত্রণালয়
  • প্রধানমন্ত্রী বিদেশি নিষেধাজ্ঞা নিয়ে চিন্তিত নন : ওবায়দুল কাদের
  • কলারোয়ায় নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার ঘোষনা দিলেন লাল্টুসহ তার সমর্থিত নেতাকর্মীরা
  • শেখ হাসিনা পুনরায় সরকার গঠনের পথে : ইকোনমিস্টের নিবন্ধ
  • শ‌রিক দলকে স্বতন্ত্রদের সঙ্গে প্রতিযো‌গিতা ক‌রতে হবে : তথ্যমন্ত্রী
  • মনিরামপুরের রাজগঞ্জে রেসার উদ্যোগে কম্বল বিতরন
  • দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে এমপি রবির মতবিনিময়
  • কলারোয়ায় আ.লীগের আয়োজনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও আলোচনা সভা
  • নলতায় গরীব অসহায় ছাত্রছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা ভাতা ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
  • সাতক্ষীরায় স্বামীর লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সন্তানের জন্ম দিলেন স্ত্রী
  • কালিগঞ্জের নবাগত ইউএনও’র সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময়