রাজগঞ্জে গাছে গাছে পাঁকা আম-কাঁঠালের মিষ্টি গন্ধ
আম আর কাঁঠাল, শুধু পুষ্টিগুণে ভরপুর ফলই নয়, অর্থকরী ফল হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ এদুটি ফল। আম-কাঁঠাল এখন ভরপুর পাওয়া যাচ্ছে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকা জুড়ে। কাঠালে বিদ্যমান ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস-আলসার, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে সক্ষম। আমে ও কাঠালে আছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্রিাডেন্ট যা দেহের ক্ষতিকার ফ্রির্যাডিকেলস থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও সর্দি কাশি রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। আম-কাঁঠাল গাছগুলোতে ঝুলন্ত অবস্থায় আম-কাঁঠালে ছেঁয়ে আছে। কোনো কোনো এলাকায় আগাম জাতের আম-কাঁঠালগুলি পাঁকতে শুরু করেছে। পাঁকা কাঁঠালের মিষ্টির মৌ মৌ গন্ধে পতঙ্গরা ভিড় করছে সু-স্বাদু রস পান করার জন্য গাছে গাছে। আর সেই আনন্দে বাগান মালিকরা গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত। তবে, কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করণের কোনো সুবিধা না থাকায় এ এলাকার মানুষেরা চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে রয়েছে।
রাজগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে- আম-কাঁঠাল গাছগুলো ফলে ফলে ভরে গেছে। প্রতটি গাছে পর্যাপ্ত পরিমানে ফল ধরেছে। বাড়ির আঙ্গিনায়, রাস্তার পাশে, বিভিন্ন বাগানে প্রচুর আম-কাঁঠাল গাছের দেখা মেলে। এছাড়াও রাজগঞ্জ এলাকায় আমের বাগানও রয়েছে। সেই বাগানে প্রচুর আমের ফলন হয়েছে।
রাজগঞ্জ এলাকার আম-কাঁঠাল ব্যবসায়ীরা জানান- হাট-বাজারগুলোতে পাঁকা আম-কাঁঠাল উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই আছেন প্রতি বছরই প্রায় এক থেকে এক-দেড় লক্ষাধিক টাকার আম ও কাঁঠাল বিক্রি করেন। দুই থেকে তিন মাস আম-কাঁঠালের ভরা মৌসুম। এ সময় পাইকার ও শ্রমিক শ্রেণির লোকদের বাড়তি আয়ের সুযোগ হয়। এবার আবহাওয়া অনুকূূলে থাকায় আম-কাঁঠালের ফলনও ভালো হয়েছে। গত বছরে আমের ফলন ভালো হলেও কাঁঠালের ফলন কম হয়েছিলো। এবার অনুকুল আবহাওয়ার কারণে ফলন বেশি হয়েছে।
এলাকার অনেকেই মন্তব্য করেছেন- অন্যান্য ফল ও গাছ নিয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে যতো তৎপরতা লক্ষ করা যায়, আম-কাঁঠাল নিয়ে তার সিঁকি ভাগও হয় না। অথচ আম-কাঁঠাল একটি অর্থকরী ফসল। কোনো পৃষ্ঠপোশকতা না থাকায় ও অবাধে আম-কাঁঠাল গাছ নিধন হওয়ায় এখন বাগান পাওয়া দুস্কর। বাড়ির আঙ্গিনাতে বা পারিবারিক বাগানে, রাস্তার পাশে অনেকেই গাছ লাগান। সরকার একটু নজর দিলেই অনেকেই আম-কাঁঠাল বাগানে উদ্বুদ্ধ হতো।
কাঁঠালের গুণাগুণ ও পুষ্টিগুণ নিয়ে পুষ্টিবিদদের মতে- কাঁঠাল একটি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধশালী ফল। একটি কাঁঠালে পৃথক কয়েক প্রকার ভিটামিন ও পুষ্টি রয়েছে। কাঁচা কাঁঠাল রান্না করে তরকারি হিসেবে খেলে আলাদা ভিটামিন পাওয়া যায়। কাঁঠালের বিচিতে পর্যাপ্ত পুষ্টি রয়েছে। তা ছাড়া কোনো প্রকার কীটনাশক ছাড়া প্রাকৃতিকভাবে গাছে কাঁঠাল হয়ে থাকে। প্রতিটি মৌসুমেই মানুষকে পর্যাপ্ত কাঁঠাল খাওয়া উচিত। কারণ কাঁঠাল একটি রোগ-প্রতিরোধক খাবার বলেও পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ভগীরত চন্দ্র জানান- কৃষিপণ্য আম-কাঁঠাল মুলত একটি মৌসুমী সু-স্বাদু ফল। কাঁঠালের বিচি তরকারীতেও সমান জনপ্রিয়। এলাকায় কোনো কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করার ব্যবস্থা না থাকায় কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হয়। কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত ব্যবস্থ্য গড়ে তুললে, রাজগঞ্জের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)