ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টা
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বৈঠকে বসেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, অধিকার সবার সমান। এসময় এদেশের মানুষ অধিকার আদায়ে বিভক্ত হয়ে নয়, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে এক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। হঠাৎ করেই ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে যান তিনি। দুপুর সোয়া ১২টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, এই পরিস্থিতিতে আসার কারণটা হলো, একটা বড় রকমের বিভেদের আওয়াজ শুনছি। বিমানবন্দরে নেমেই যেটা বলেছি, এমন বাংলাদেশ আমরা করতে চাচ্ছি যেখানে আমরা এক পরিবার। এটা হলো মূল জিনিস। পরিবারের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা, বিভেদ করা, এটার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমরা বাংলাদেশের মানুষ, এটাই আমরা নিশ্চিত করতে চাই। এটা নিয়ে যেন আর কোনো বাদ-বিবাদ না হয়।
তিনি বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক যে আকাঙ্ক্ষা, সেখানে আমরা মুসলমান হিসেবে নই, হিন্দু হিসেবে নই, বৌদ্ধ হিসেবে নই, মানুষ হিসেবে বিবেেচিত। আমাদের অধিকারগুলো নিশ্চিত হোক সবার। সব সমস্যার গোড়া হলো, আমরা যত প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজনগুলো করেছি, সব কিছু কিন্তু পচে গেছে। এই কারণেই গোলমাল হচ্ছে। কাজেই আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজনগুলো ঠিক করতে হবে।
ড. ইউনূস বলেন, ন্যায়বিচার হলে কেউ বিচার পাবে না কেন, আইনে কি বলা আছে এই সম্প্রদায়ের হলে এই আদালতে যাবে, ওই সম্প্রদায়ের হলে ওই আদালতে যাবে? আইন একটা, কার সাধ্য আছে সেখানে বিভেদ করে এর রকম একটা, ওর রকম একটা। এটা হতে পারে না।
এসময় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্য করে ড. ইউনূস বলেন, এটা এমন রোগ, এর মূলে যেতে হবে। আপনারা যদি বলেন, আমাদের সংখ্যালঘু হিসেবে এটা বলছে, এটা হলো মূল সমস্যা থেকে আপনারা দূরে সরে যাচ্ছেন। আমাদের বলতে হবে, আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেটা পেলে আমাদের বাক-স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে, যেগুলো আছে, আমরা নতুন কিছু বলছি না। আমাদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হলো আমাদের মূল লক্ষ্য।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনারা যদি টেনে নিয়ে আসেন, আমি অমুক, আমি তমুক আবার পুরোনো খেলায় চলে গেলেন। আপনাদের শিকার করার জন্য যারা বসে আছে, তারা এগুলো শিকার করে। আপনারা বলবেন, আমরা বাংলাদেশের মানুষ, আমার সাংবিধানিক অধিকার এই, আমাকে দিতে হবে। সব সরকারের কাছে এটাই চাইবেন, আর কিছু চাইবেন না আপনারা।
গ্রামীণ ব্যাংকের মাঠ পর্যায়ে কাজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আপনি শুনবেন না গ্রামীণ ব্যাংকের ইতিহাসে আমরা হিন্দু পাড়া বলে বাদ দিয়ে মুসলমান পাড়ায় গেছি। এক সঙ্গে গেছি, একভাবে গেছি।
তিনি বলেন, আমাদের মূল কাজটায় যেতে হবে। আপনাদের অনুরোধ, আপনারা বিভিন্ন খোপের মধ্যে চলে যাইয়েন না। এই খোপ হলেই মারামারি-কাটাকাটি লেগে যাবে। একত্রে আসেন, এক আইন। এক মানুষ, এক অধিকার। এর মধ্যে কোনো পার্থক্য করা যাবে না।
সবশেষ তিনি বলেন, আমাদের একটু সাহায্য করেন আপনারা, ধৈর্য ধরেন। করতে পারলাম কি পারলাম না সেটা পরে বিচার করবেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)