কাতার বিশ্বকাপই শেষ মেসির
ক্যারিয়ারে সবকিছুই পাওয়া হয়েছে লিওনেল মেসির। সাতবার ব্যালন ডি’অর জেতা চাট্টিখানি কথা নয়। কিন্তু সাতটি ব্যালন ডি’অর তার সোনালি ক্যারিয়ারেরই সাক্ষ্য বহন করছে। অথচ, এত কিছুর পরও কোথায় যেন তার আক্ষেপ, একটি বিশ্বকাপ শিরোপা জেতা হয়নি বিশ্বসেরা এই ফুটবলারের।
চারটি বিশ্বকাপ এরই মধ্যে খেলে ফেলেছেন। একবার ফাইনালেও উঠেছিলেন। ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে হেরে আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে। কিন্তু সোনালি ট্রফিটা আর ছুঁয়ে দেখা হয়নি।
আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে তার একমাত্র সাফল্য, ২০২১ সালে ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা জয়। কাতার বিশ্বকাপে খেলতে নামলেই সেটা হয়ে যাবে তার পঞ্চম বিশ্বকাপ আসর। বয়সটাও তো বেধে রাখার মত নয়, ৩৫ পেরিয়ে গেছে।
সুতরাং, লিওনেল মেসি জানিয়ে দিলেন- এটাই তার শেষ বিশ্বকাপ। এরপর আর্জেন্টিনার জার্সিকে গুডবাই জানিয়ে দেবেন তিনি।
নভেম্বরের ২০ তারিখ কাতারে শুরু হচ্ছে দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ, বিশ্বকাপের মূল আসর। মেসি স্বীকার করে নিয়েছেন, ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ খেলতে নামার আগে দারুণ স্নায়ুচাপে ভুগছেন তিনি।
স্টার প্লাসের সঙ্গে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে লিওনেল মেসি বলেন, ‘অবশ্যই এখানে বেশ কিছু উদ্বেগ এবং স্নায়ুর চাপ কাজ করছে। কারণ, এটাই আমার শেষ বিশ্বকাপ।’
এই প্রথম পিএসজির আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার বিশ্বকাপের পর তার ক্যারিয়ার নিয়ে সরাসরি মুখ খুললেন। তবে, মেসি এটা নিশ্চিত করেননি যে, কাতার বিশ্বকাপের পরপরই তিনি জাতীয় দল থেকে অবসরে যাবেন কি না। শুধু জানিয়ে দিলেন, এটাই তার শেষ বিশ্বকাপ। অর্থ্যাৎ, ২০২৬ বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং মেক্সিকোয় তাকে দেখা যাবে না।
টানা ৩৫টি ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে কাতার যাচ্ছে আর্জেন্টিনা। রেকর্ড ৩৫ ম্যাচ অপরাজিত থাকার ফলে বিশ্বকাপ নিয়ে এবার তাদের প্রত্যশাটাও আকাশছোঁয়া। তাছাড়া ব্রাজিলের মত শক্তিশালী দলকে হারিয়ে তারা কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতেছিল।
মেসি জানিয়ে দিলেন, অনেকগুলো সুযোগ মিস করার পর এবার আর্জেন্টিনা একটা টার্নিং পয়েন্টে এসে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, ‘একটা বিশ্বকাপে যে কোনো কিছুই ঘটতে পারে। প্রতিটি ম্যাচই হয় খুব কঠিন। ফেবারিটরা সব সময় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারে না।’
নিজেদের অবশ্য ফেবারিট ভাবছেন না মেসি। তিনি বলেন, ‘আমি জানি না, আর্জেন্টিনা ফেবারিট কি না। তবে, আর্জেন্টিনা সব সময়ই বিশ্বকাপ জয়ের দাবিদার। কারণ, দেশটির ফুটবল ইতিহাস। এখন তো বিশ্বকাপ জয়ের জন্য আরো বেশি দাবিদার। কারণ, আমরা এখন সে পথেই রয়েছি। তবে, আমরা ফেবারিট নই। আমি মনে করি, এখানে আরও দল আছে, যারা আমাদের ওপরে রয়েছে।’
১৯৭৮ এবং ১৯৮৬ সালে দুটি বিশ্বকাপ জয় করেছে আর্জেন্টিনা। এরপর ১৯৯০ এবং ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিল তারা। এবারের বিশ্বকাপে তারা রয়েছে গ্রুপ ‘সি’তে। ২২ নভেম্বর প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে সৌদি আরবের। এরপর তাদের বাকি দুই প্রতিপক্ষ মেক্সিকো এবং পোল্যান্ড।
নিজের অবস্থা নিয়ে মেসি বলেন, ‘শারীরিকভাবে আমি নিজেকে বেশ ভালো মনে করছি। এই বছর শুরুর আগে একটি ভালো একটি প্রি-মৌসুম কাটিয়েছি। যা আগের বছর আমি করতে পারিনি। ভালো শুরু করাটাই সবচেয়ে বড় কাজ। এখন যা করতেছি, তা হলো মানসিক দিকে অনেক বেশি ফোকাস করা এবং নিজের মধ্যে ইচ্ছাশক্তিকে আরও বাড়িয়ে তোলা।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)