কাতারে বিশ্বকাপ দেখতে গিয়ে যেসব কারণে হতে পারে জেল
শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্ব ফুটবলের মহারণ ‘ফিফা বিশ্বকাপ ২০২৩’। আসছে ২০ নভেম্বর পর্দা উঠছে কাতার ফুটবল বিশ্বকাপের। মনে করা হচ্ছে দেশ-বিদেশ থেকে ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে কাতারে ভিড় জমাবেন প্রায় ১০ লাখ মানুষ। আর সে কারণেই আরও সতর্ক হচ্ছে ফিফা এবং কাতারের প্রশাসন। ফুটবল বিশ্বকাপ চলাকালীন কাতার যেন ‘বেআইনি’ কাজের আঁতুড়ঘরে পরিণত না হয়,সেদিকেও বিশেষ নজর রয়েছে কর্তৃপক্ষের। আর সেই কারণে আগে থেকেই বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
ফুটবল বিশ্বকাপের জন্য কাতারে প্রবেশ করতে চলা ফুটবল প্রেমীদের যেন অন্য কিছুর প্রতি ‘প্রেম’ বা আসক্তি না তৈরি হয়,সেজন্য কড়া বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। আর সেই বিধি মেনে না চললে দীর্ঘ দিন কাতারের জেলেও থাকতে হতে পারে ফুটবল প্রেমীদের।
উদ্বেগ তৈরি হয়েছে কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে আসা নারী ও সমকামীদের নিয়েও। কাতারে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বাদ দিয়ে সহবাস এবং সমকামী সম্পর্ক নিষিদ্ধ। তাদের যেন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার মুখোমুখি না হতে হয়, সেজন্যও বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে কাতারের পুলিশ।
পাশাপাশি ফুটবল দেখতে আসা মানুষদের জন্যও কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আরও বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।
কাতারের প্রশাসন পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, বেশ কিছু জিনিসপত্র নিয়ে কাতারে প্রবেশ করতে পারবেন না বিশ্বকাপ দর্শকেরা। তালিকায় রয়েছে কী কী?
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুল্কমুক্ত মদ নিয়ে কোনওভাবেই কাতারে প্রবেশ করা যাবে না।
কোনও ফুটবল প্রেমী ‘সেক্স টয়’ নিয়ে কাতারে প্রবেশ করলে তাদেরও কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে বলে কাতারের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
কাতার বিমানবন্দরে প্রবেশ করা যাবে না শূকরের মাংস নিয়েও। শূকরের মাংস নিয়ে কাতারে প্রবেশ করলেই কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে আগতদের।
সেদেশে এক রাতের ‘অবৈধ’ সম্পর্ক (ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড) জন্য হতে পারে সাত বছরের জেল। বিশ্বকাপ ফুটবল মানেই দেখা যায় ম্যাচ শেষে রাতভর পার্টি। কিন্তু কাতারে তা নিষিদ্ধ। সমর্থকদের সাবধান করে দেওয়া হয়েছে, এই ধরনের কোনও আশা যেন না রাখা হয় এবারের বিশ্বকাপে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্বামী-স্ত্রী জুটি না হলে বিশ্বকাপ দেখতে এসে সহবাস করা যাবে না। এই প্রতিযোগিতায় ‘এক রাতের সহবাস’ থাকবে না। কোনও পার্টি করা যাবে না। নিয়ম না মানলে জেল হতে পারে।
পর্নোগ্রাফি বানানো এবং জনসমক্ষে পর্নোগ্রাফি দেখার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, যাতে ফুটবল দেখতে আসা মানুষেরা স্থানীয় ঐতিহ্য ও রীতিনীতিকে সম্মান করেন। প্রকাশ্যে যৌনকর্ম এবং মাতলামি না করা এবং অশালীন পোশাক না পরার জন্যও আবেদন জানানো হয়েছে। যেকোনও ধরনের ধর্মীয় বই নিয়ে আসার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
বিমানবন্দরে জিনিসপত্র তল্লাশি করার সময় প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোনও ওষুধ পাওয়া গেলেও হাজতবাস করতে হতে পারে আগত ব্যক্তিদের।
কাতারে নির্দিষ্ট কিছু হোটেল এবং সমুদ্রের ধারের নির্দিষ্ট কিছু জায়গা ছাড়া মদ্যপানে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। তাই এই বিষয়টিও বিশ্বকাপ দেখতে আসা দর্শকদের নজরে রাখতে বলা হয়েছে। ওই সময় কাতারে বিক্রি হওয়া মদের দাম বাড়ানো হতে পারে বলেও গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা গেছে।
জুয়া খেলার জন্য ধরা পড়লেও কারাবাস হতে পারে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কাতারে ইতোমধ্যেই নিরাপত্তারক্ষীদের সংখ্যা অনেক পরিমাণে বাড়ানো হয়েছে।
ফুটবলপ্রেমীরা কোনও অসুবিধার সম্মুখীন যাতে না হন, সেদিকেও বিশেষ নজর দিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। পাশাপাশি স্থানীয়দেরও এই বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য, কাতার হল পশ্চিম এশিয়ার প্রথম দেশ, যারা ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজন করছে।
সূত্র: ডেইলি মেইল, ডেইলি স্টার ইউকে, ইউকে ডেইলি নিউজ
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)