তদবির ছাড়া সুযোগ হয়না সাতক্ষীরার বয়সভিত্তিক ক্রিকেট দলে, নেপথ্যে শক্তিশালী সিন্ডিকেট


আব্দুর রহমান, সাতক্ষীরা: বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের আয়োজনে এবং সাতক্ষীরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার ব্যবস্থাপনায় আগামী ২৫, ২৬ ও ২৭ আগস্ট সকাল ৯টায় সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে ২০২৫-২৬ মৌসুমের জেলা ক্রিকেট দল গঠনের লক্ষ্যে বয়সভিত্তিক (অ-১৪, অ-১৬ ও অ-১৮) খেলোয়াড়দের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।
তবে এ কার্যক্রমকে ঘিরে উঠেছে গুরুতর অভিযোগ। স্থানীয় ক্রিকেট মহলের দাবি, দল গঠনের প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব বিস্তার করে আসছে এক শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের কারণে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে আসা প্রতিভাবান ক্রিকেটাররা সুযোগ পাচ্ছেন না। বরং সুযোগ পাচ্ছেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত কোচদের নিজস্ব একাডেমির খেলোয়াড়রা, কর্মকর্তাদের ছেলে-আত্মীয় কিংবা রাজনৈতিক তদবিরে নির্বাচিত অযোগ্য ক্রিকেটাররা।
জেলার সাবেক ক্রিকেটার ও কোচদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা বহুদিন ধরেই দাবি করে আসছেন খেলোয়াড় বাছাই কেবল কাগজপত্র নির্ভর না করে প্রস্তুতি ম্যাচের মাধ্যমে হওয়া উচিত। তাদের মতে, মাঠের পারফরম্যান্সই একজন খেলোয়াড়ের প্রকৃত যোগ্যতা যাচাই করতে পারে। কিন্তু সিন্ডিকেটের প্রভাবে এই প্রক্রিয়া কার্যকর হচ্ছে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সাবেক ক্রিকেটার বলেন, আমরা বারবার বলেছি, প্রস্তুতি ম্যাচ খেলানোর মাধ্যমে বাছাই করা হোক। এতে প্রকৃত প্রতিভাবান ক্রিকেটাররা উঠে আসবে। কিন্তু এখানে কর্মকর্তাদের পছন্দসই খেলোয়াড়রাই সুযোগ পায়। ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছেলেরা চিরদিনই বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে।
আরেকজন সাবেক কোচের ভাষ্য, যাচাই-বাছাইয়ের নামে এখানে সবকিছুই অনেক আগেই ঠিক করা থাকে। যাদের নিয়ে আসা হয়, তাদেও বেশিরভাগই কারও না কারও ‘রিকমেন্ডেড। এভাবে চলতে থাকলে জেলার ক্রিকেট কখনোই এগোবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব ও জেলা ক্রীড়া অফিসার মো. মাহবুবর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যদি ম্যাচ খেলার মাধ্যমে যাচাই-বাছাইয়ের দাবি ওঠে, তাহলে আমরা সেটাই করব। তবে এখনো খেলার উপযুক্ত মাঠ প্রস্তুত হয়নি। গত বছর ক্রীড়া সংস্থার কোনো কমিটি না থাকায় আমি আমার অফিসের উদ্যোগে টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছিলাম এবং ম্যাচের মাধ্যমেই যাচাই-বাছাই করা হয়েছিল। তাই কারা এ ধরনের অভিযোগ তুলছে, তা আমার বোধগম্য নয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এখানে সাধারণত ২০০ থেকে ৩০০ খেলোয়াড় আসে। বিসিবি থেকে আসা নির্বাচকরা প্রথমে ৫০ জনকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করেন। এরপর আমরা তাদের প্র্যাকটিস করাই, ম্যাচ খেলাই এবং ধীরে ধীরে তাদের জেলা দলে খেলার উপযুক্ত করে তুলি। তবে একটি বাস্তবতা আছে এই ৫০ জন খেলোয়াড় কিন্ত জেলার কোনো না কোনো একাডেমির সঙ্গে যুক্ত থেকে প্র্যাকটিস চালিয়ে যায়।
মাহবুবর রহমান জানান, তিনি স্বচ্ছতার ভিত্তিতে জেলার ক্রীড়াঙ্গনকে এগিয়ে নিতে চান। আগে কী হয়েছে তা আমি জানি না, তবে আমি থাকাকালে কোনো ধরনের দুর্নীতি হতে দেব না। গত বছর আমি সবাইকে আমার ব্যক্তিগত নম্বর দিয়ে বলেছিলাম, যদি কেউ কোচদের স্বজনপ্রীতি বা অনিয়মের শিকার হন, যেন সরাসরি আমাকে জানান। এবছর যদি সময়মতো মাঠ প্রস্তুত করতে পারি, তবে অবশ্যই ম্যাচ খেলার মাধ্যমে খেলোয়াড় বাছাই করা হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)

একই রকম সংবাদ সমূহ

জলবায়ু পরিবর্তন ও নারীর প্রতি সহিংসতা: সাতক্ষীরার উপকূলে বাড়ছে দ্বৈত সংকট
গাজী হাবিব, সাতক্ষীরা: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূল সাতক্ষীরা। সুন্দরবনের সন্নিকটে এই অঞ্চলটি শুধুবিস্তারিত পড়ুন

সাতক্ষীরায় জামায়াতের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন, যুবদলের ৬ নেতাকর্মীর যোগদান
হাফিজুল ইসলাম, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ৯নং ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের বাংলাদেশ জামায়াতেবিস্তারিত পড়ুন

স্বদেশ’র আয়োজনে কমিউনিটি লিগ্যাল ক্যাম্প
স্বদেশ সংস্থার বাস্তবায়নে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এর সহযোগিতায় দাতা সংস্থাবিস্তারিত পড়ুন