জলাবদ্ধতায় দীর্ঘ দুর্ভোগের আড়ালে
কংক্রিটে আচ্ছাদিত ঢাকা শহর থেকে প্রাকৃতিকভাবে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ বহু আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক ব্যবস্থাপনার মিশেলে হয় পানিনিষ্কাশন। এরও সর্বোচ্চ ব্যবহার হয় না। পানিনিষ্কাশনের পথগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হয় আংশিক। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে চলা জলাবদ্ধতা সমস্যারও সমাধান হয় না। গতকাল মঙ্গলবারের বৃষ্টিতেও এই সমস্যা দেখা গেছে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন অংশ কয়েক ঘণ্টা ডুবে থেকেছে পানিতে।
ঢাকা শহরে বৃষ্টি হলে পানির সামান্য একটি অংশ মাটির নিচে যায়। বড় অংশই ছোট নালা, রাস্তার পাশের ক্যাচপিট (রাস্তার পাশে পানিনিষ্কাশনের ছোট পথ) হয়ে তুলনামূলকভাবে বড় আকৃতির নালায় পড়ে। সেখান থেকে পানি যায় খালে। এরপর স্লুইসগেট বা পাম্পস্টেশনের মাধ্যমে পানি নদীতে গিয়ে জমা হয়। পুরো এই প্রক্রিয়ার কোথাও কোনো ব্যত্যয় ঘটলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। যেসব সংস্থা পানিনিষ্কাশনের এই কাজে জড়িত, তাদের মধ্যে আছে ঢাকা ওয়াসা, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
সংস্থাগুলোর মধ্যে ঢাকা ওয়াসা রক্ষণাবেক্ষণ করে ৩৮৫ কিলোমিটার বড় আকৃতির নালা, ৮০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের খাল ও চারটি স্থায়ী পাম্পস্টেশন। দুই সিটি করপোরেশন দেখভাল করে দুই হাজার ২১১ কিলোমিটার নালা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আছে ৫২টি স্লুইসগেট ও একটি পাম্পস্টেশন (ডিএনডি এলাকা ছাড়া)। রাজউকের হাতে আছে ৩০০ একরের হাতিরঝিল এবং প্রায় ২৫ কিলোমিটার লেক (পূর্বাচল ছাড়া)। সংস্থাগুলোর সাম্প্রতিক বছরগুলোর কাজের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কোনো বছরই বর্ষার আগে কোনো সংস্থাই তার হাতে থাকা নালা বা খাল পুরোপুরিভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে না। ফলে এসব নালা ও খাল দিয়ে যতটুকু পানি প্রবাহিত হতে পারত, সেই পরিমাণ প্রবাহিত হয় না। ফলে জলাবদ্ধতার সমস্যাও প্রকট হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকায় ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এতেই ঢাকার বিভিন্ন অংশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। যানজট আর জলাবদ্ধতার ভোগান্তিতে নাকাল হতে হয়েছে নগরবাসীকে। পুরান ঢাকার কিছু এলাকায় ঘরের মধ্যে ঢুকে গেছে রাস্তার পানি।
সুত্র প্রথম আলো
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)