সাতক্ষীরায় পাওনা টাকা চাওয়ায় গৃহবধূ ও তার ভাইকে মারপিট, এজাহার দায়ের
গাজী হাবিব, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় পাওনা টাকা চাইতে যাওয়ায় এক গৃহবধূ ও তার ভাইকে বেদম মারপিট করে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে সদর উপজেলার বাঁশদহা এলাকার নিবরাজ ব্রিকস মালিক শেখ শাহেদ ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সাতক্ষীরা সদরের ধলবাড়িয়া গ্রামে শেখ শাহেদের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী গৃহবধু সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।
এজাহার সুত্রে জানা যায়, গত ৬ ডিসেম্বর সকাল অনুমান সাড়ে ৯টার দিকে আমার আপন ভাই মাসুম (২৭)কে সাথে নিয়ে আমি শেখ সাহেদের বাড়িতে যেয়ে টাকা চাইলে শেখ সাহেদ আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। আমি প্রতিবাদ করলে আগরদাঁড়ী ইউনিয়নের ধলবাড়িয়া গ্রামের শেখ আঃ মাজেদের ছেলে শীর্ষ সন্ত্রাসী শেখ সাহেদ(৩৬), তার বাবা শেখ আঃ মাজেদ, আনসার আলীর ছেলে মোঃ মাসুম (২৮), শিয়ালডাঙ্গা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে মাদকাসক্ত শাওন (২৫), নুরুল ইসলামের ছেলে মাহমুদুল ইসলাম (২৪) আবাদের হাট এলাকার যুবলীগ নেতা সোহাগসহ আরও অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন আমাকে ও আমার প্রবাসী ভাইকে ব্যাপক মারপিট করে। তারা আমার কাপড়-চোপর খুলে ফেলে শ্লীলতাহানি ঘটায়। তাদের মারপিটের শিকার হয়ে আমরা শেখ শাহেদের ঘরে যেয়ে দরজা আটকে দেই। এরপর সাবেক মেম্বর ও যুবলীগ নেতা হেলাল এসে আমাদের বুঝিয়ে দরজা খুলিয়ে বাইরে আনার চেষ্টা করেন। সংবাদ পেয়ে বাঁশদহা ইউপি মেম্বর মোর্শেদুল ও আমার মামা কাশেম শেখ শাহদের বাড়িতে আসলে তাদের উপস্থিতিতে যুবলীগ নেতা হেলাল আবারও দরজা খুলতে বললে আমরা দরজা খুলি। তারপর বাইরে আসার পর তারা আবারও আমাদের মারপিট করে। পরে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে।’
শিবপুর ইউনিয়নের গোদাঘাটা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী ভুক্তভোগী সাবিনা খাতুন বলেন, ‘বাঁশদাহ ইউনিয়নের কয়ারবিলে অবস্থিত নিবরাজ ব্রিকস নামে শেখ শাহেদের একটি ইট ভাটা আছে। তার ভাটা হতে ১ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ ইট ক্রয়ের জন্য ২০২০ সালে এককালীন ১০ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা শেখ শাহেদকে প্রদান করি। এরপর ভাটায় ইট পোড়ানোর পর আমি ইট আনতে গেলে শেখ শাহেদসহ ভাটা সংশ্লিষ্টরা আমাকে বলেন যে, ‘উন্নত মানের ইট তৈরী হয় নাই, পরবর্তীতে উন্নত মানের ইট তৈরী হলে আপনাকে ডেকে ইট দেবে।’ আমি তাদের কথা বিশ্বাস করে অপেক্ষা করতে থাকি। পরবর্তীতে তারা কয়েক দফায়, কয়েক সিজনে ইট তৈরী করে বিক্রয় করলেও আমাকে কোন ইট দেয়নি। আমি তাদের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তারা আমার সাথে টাল-বাহানা শুরু করে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে শালিস বিচার হয়। কিন্তু শাহেদসহ তারা কোন শালিস বিচার মানেননি।
উপজেলার বাঁশদহা ইউপি মেম্বর মোর্শেদুল বলেন, ‘আমরা যাওয়ার পর সাবিনা ও তার ভাই বাইরে চলে আসে। এরপর হঠাৎ শেখ সাহেদসহ কয়েকজন এসে সাবিনা ও তার ভাইকে ব্যাপক মারপিট করে। পরে সদর থানার এসআই শফিকসহ পুলিশ সদস্যরা সংবাদ পেয়ে তাদের উদ্ধার করে।’
এ ব্যাপারে জানার জন্য অভিযুক্ত শেখ শাহেদের কাছে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সাতক্ষীরা থানার ওসি শামিনুল ইসলাম বলেন, ‘এই ঘটনায় একটি লিখিত এজাহার পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)