তারেকের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সম্প্রতি দেওয়া সব বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরাতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-কে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (২৮ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রোববার (২৭ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেন অ্যাডভোকেট নাসরিন সিদ্দিকা লিনা।
গত ২২ আগস্ট গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত রুলে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এর মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা প্রশ্নে রুল শুনানিতে পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদন করেছেন বিএনপিপন্থি একজন আইনজীবী।
বুধবার (২৩ আগস্ট) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে পক্ষভুক্তির এ আবেদন উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি ও বিএনপির আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল জব্বার ভূইয়া। ওইদিন শুনানি নিয়ে ওই আবেদন খারিজ করেন হাইকোর্ট।
এদিকে, একই দিন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে রুলের লিখিত জবাব দেওয়ার কথা আদালতকে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
এর আগে গত মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) হাইকোর্টের একই বেঞ্চ তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে রুলের চূড়ান্ত শুনানির জন্য বুধবার (২৩ আগস্ট) দিন ধার্য করেন। তারই ধারাবাহিকতায় সেটির শুনানি শুরু হয়।
তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার নিয়ে প্রায় সাড়ে আট বছর শুনানি না হওয়া রুলটি রিটকারীদের পক্ষ থেকে সম্প্রতি শুনানির আবেদন করা হয়।
হাইকোর্টের নির্দেশে রুলের নোটিশ তারেক রহমানের গুলশানের বাসার ঠিকানায় পাঠানো হয় বলে আদালতকে জানান রিটকারী পক্ষের আইনজীবীরা। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের নোটিশ বোর্ডে এবং একটি জাতীয় দৈনিকে প্রচার করা হয়।
জবাবে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, গুলশানের যে ঠিকানায় নোটিশ পাঠানো হয়েছে সেটি তারেক রহমানের সর্বশেষ ঠিকানা নয়। তিনি এখন লন্ডনে, তাই তার ওই ঠিকানায় নোটিশ পাঠাতে হবে।
বাংলাদেশের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্যের অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান (তৎকালীন জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান) তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ২০১৫ সালে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাসরিন সিদ্দিকী লিনা। ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ রুল জারিসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন।
হাইকোর্টের রুলে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, বিটিভির মহাপরিচালক, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, একুশে টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও তারেক রহমানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
অন্যদিকে, অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে হাইকোর্ট তারেক রহমানের অবস্থান জানাতে পররাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি পুলিশ মহাপরিদর্শককে তারেক রহমানের পাসপোর্টের মেয়াদ জানিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
পরবর্তীকালে ঠিকানা ভুলের পরিপ্রেক্ষিতে তারেক রহমান বাদে রিট আবেদনের অন্য সব বিবাদী বরাবর রুলের নোটিশ জারি হয়। গত ৩ আগস্ট রুল শুনানির আবেদন করেন রিটকারী পক্ষের আইনজীবী কামরুল ইসলাম। ওইদিন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার বন্ধের বিষয়ে জারি করা রুল শুনবেন বলে জানিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
আইনের দৃষ্টিতে পলাতক তারেক রহমানের বক্তব্য বা বিবৃতি সব ধরনের গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন এ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে তারেক রহমানের বিদেশে অবস্থান সম্পর্কে জানাতে পররাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার পাসপোর্টের মেয়াদের বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) একটি প্রতিবেদন দিতেও বলেছিলেন আদালত।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)