নড়াইলে ৬ ডাকাত গ্রেফতার, লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার
নড়াইলে ছয় জন আন্তঃ জেলা ডাকাত ও ডাকাতির মালামাল ক্রয়কারী দুই জন গ্রেফতার এবং লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার হয়েছে। গত (২ জুলাই) দিবাগত রাত ২.৩০ মিনিটের সময় নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানায় নলামারা গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে মোঃ মফিজুর রহমান চৌধুরী (৩৫) এর বাড়িতে অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন ডাকাত কলাপসিকলের তালা ভেঙ্গে দেশীয় অস্ত্র (রামদা ও ছোরা) নিয়ে ঘরে প্রবেশ করে। ডাকাতদল মফিজুর রহমানকে ঘরে থাকা উড়না দিয়ে বেঁধে জিম্মি করে রাখে। তারা শোকেজের ড্রয়ার ভেঙ্গে নগদ ৫১,০০০/- (একান্ন হাজার) টাকা, ০১ টি Bajaj Discovery 135 সিসির মোটর সাইকেল ও ০১ টি ৩২ ইঞ্চির এলইডি টিভি লুন্টন করে। অত:পর তারা পাশের রুমে থাকা তার স্ত্রীর গলা থেকে একটি চার আনা ওজনের চেইন, তার মেয়ের কানের চার আনা ওজনের ২ টি কানের দুল, ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার ভেঙ্গে ০১ টি আট আনা এবং চার আনা ওজনের ২টি স্বর্ণের চেইন এবং আট আনা ওজনের ২ জোড়া স্বর্ণের দুল, ছয় আনা ওজনের ২টি আংটি লুন্টন করে নেয়। এছাড়া তার ০৩ সেট সিট কাপড় এবং মেয়ের স্কুল ব্যাগে থাকা কিছু টাকা লুণ্টন করে। ডাকাত দল আনুমানিক রাত ২.৫৫ মিনিটের সময় উক্ত বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান,
তারা গামছা, টাওয়েল এবং মাস্ক পরে মুখ ঢেকে রেখেছিল। এই ঘটনায় মোঃ মফিজুর রহমান বাদী হয়ে
নড়াগাতি থানায় একটি ডাকাতি মামলা রুজু করেন। যার মামলা
নং-৩, তারিখ-(৭ জুলাই) ধারা ৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড। মামলা রুজুর পর নড়াইল জেলার পুলিশ সুপার মোহাঃ মেহেদী হাসান’র নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা টিম, সিসিআইসি টিম এবং নড়াগাতি থানার টিম মাঠে নামে। অতঃপর নড়াগাতি থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্সসহ একটি টিম এবং জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই (নিঃ) ফারুক হোসেন, সিসিআইসি শাখার এসআই (নিঃ) মোঃ আলী হোসেন ও এসআই (নিঃ) ফিরোজ আহমেদ সঙ্গীয় ফোর্সসহ আরো একটি টিম ০৭/০৭/২৪ খ্রিঃ ভোর রাত ০৪.৪৫ ঘটিকায় নড়াগাতী থানাধীন পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের চাপাইল ব্রিজের নিচে পাকা রাস্তা হতে ০৬ জন ডাকাত গ্রেফতার করে। তারা হলোঃ আল-আমিন (৩১), পিং-মোঃ শাহেদ আলী মোল্লা, সাং-ফলসী ফুকরা, থানা-কাশিয়ানী, জেলা-গোপালগঞ্জ, পেশা- ভ্যানচালক; মোঃ জাকির হোসেন মোল্লা (৩৮), পিং-মৃত জলিল মোল্লা, সাং-নলিয়ার চর, থানা-তেরখাদা, জেলা-খুলনা, পেশা- ঝালমুড়ি বিক্রেতা; অরুন ভৌমিক (৫২), পিং-মৃত কালো শশি ভৌমিক, সাং-নলামারা, থানা-নড়াগাতী, জেলা-নড়াইল, পেশা-মোটর সাইকেল ভাড়ায় চালায়; মোঃ তারিকুল ইসলাম (৩২), পিং-মোঃ বালাম শেখ, সাং-ফলসি, থানা-কাশিয়ানী, জেলা-গোপালগঞ্জ, পেশা- ভ্যান চালক; মোঃ রাকিবুল ইসলাম (৩৩), পিং-মৃত দাউদ আলী শিকদার, সাং-আটলিয়া, থানা-তেরখাদা, জেলা-খুলনা, পেশা- মোটর সাইকেল ভাড়ায় চালক;
৬) গোলাম রসুল (৩৪), পিং-মৃত তারা ভুইয়া, সাং-নলিয়ার চর, থানা-তেরখাদা, জেলা-খুলনা, পেশা- ভ্যান চালক।
উক্ত ডাকাতদের বডি ও তাদের হাতে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে নিম্ন বর্ণিত লুণ্ঠিত মালামালঃ
১) স্বর্ণের চেইন ২ টি
২) স্বর্ণের চুড়ি ২ টি
৩) স্বর্ণের হার ২ টি
৪) স্বর্ণের কানের দুল ৫ জোড়া ৫) স্বর্ণের আংটি ৪ টি
৬) স্বর্ণের ভাঙ্গা চুড়ি ২ টি
৭) রূপার নুপুর ২ টি এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র রামদা, ছোড়া, চাপাতি উদ্ধার করে জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে, নড়াগাতী থানাধীন চালনা গ্রামে ডাকাতি করে মালামাল নিয়ে যাচ্ছিল। অতঃপর তাদের আরো জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে স্বীকার করে যে, গত (২ জুলাই) মোঃ মফিজুর রহমান চৌধুরীর বাড়িতে একই ডাকাত দল ডাকাতি করেছে। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গোপালগঞ্জ সদর থানাধীন চরমানিকদিয়া গ্রামের জনৈক সামাদ মিয়ার বাড়ি হতে রবিবার (৭ জুলাই) লুণ্ঠিত একটি Bajaj Discover 135 সিসি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি থানায় অভিযান পরিচালনা করে দুপুরে অমৃত বালা (৩৯), রামদিয়া বাজারস্থ কলেজ রোডে অবস্থিত পূজা জুয়েলার্সের মালিক, পিতা-মনিমোহন বালা, সাং- সাফলিডাঙ্গা,থানা-কাশিয়ানী, জেলা-গোপালগঞ্জকে আটক করা হয়। অমৃত বালার নিকট থেকে একটি সাত আনা ৪ রতি ওজনের স্বর্ণের চেইন, গলানো স্বর্ণ সাত আনা ৪ রতি উদ্ধার করা হয়। এছাড়া নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানার বড়দিয়া বাজারস্থ অপূর্ব জুয়েলার্সের সত্ত্বাধিকার অপরেশ সিকদার (৩৫)কে রবিবার (৭ জুলাই) গ্রেফতার করা হয়। তার নিকট হতে দুইটি স্বর্ণের চেইন, একজোড়া কানের দুল, একটি আংটি যা গলানোর পর মোট ওজন চৌদ আনা স্বর্ণ জব্দ করা হয়। উক্ত আটককৃত ডাকাতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আরো ৩/৪ জন এ ঘটনায় জড়িত রয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতার করার জন্য এবং লুণ্ঠিত এলইডি টেলিভিশন ও অন্যান্য মালামাল উদ্ধারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, গ্রেফতারকৃত ডাকাত মোঃ জাকির হোসেন মোল্লার নামে খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় একটি ডাকাতি ও দুইটি চুরির মামলা রয়েছে এবং গোলাম রসুল (৩৪) এর নামে খুলনা, গোপালগঞ্জ ও যশোর জেলায় সাতটি ডাকাতি মামলা, একটি চুরির মামলা ও ০১ অস্ত্র আইনের মামলা রয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)