পাকিস্তানের কাছে যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার করলো ভারত


সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলন ‘শাংরি-লা ডায়ালগ’-এ প্রথমবারের মতো মে মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার করেছেন ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান।
শনিবার (৩১ মে) ব্লুমবার্গ টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়া বড় কথা নয়, বরং কীভাবে সেগুলো ভূপাতিত হলো, সেটিই আসল বিষয়।’ পাকিস্তান দাবি করেছিলো তারা ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি রাফাল, একটি মিগ-২৯ ও একটি এসইউ-৩০ রয়েছে। জেনারেল চৌহান এই সংখ্যাটিকে অস্বীকার করলেও, ভারত যে কিছু যুদ্ধবিমান হারিয়েছে তা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি নির্দিষ্ট সংখ্যা প্রকাশে অস্বীকৃতি জানান।
তিনি আরও জানান, যুদ্ধের প্রথমদিকে ভারতের কৌশলগত কিছু ভুল ছিল, তবে তা দ্রুত সংশোধন করে নতুন করে অভিযান চালিয়ে দূরপাল্লার লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হানা হয়েছে। তাদের বিমান নির্ভুলভাবে পাকিস্তানের লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাতে পেরেছে বলে দাবি করেন তিনি।
জেনারেল চৌহান বলেন, এই সংঘর্ষ কখনোই পারমাণবিক যুদ্ধের পর্যায়ে যায়নি। তিনি আরও বলেন, প্রচলিত যুদ্ধ আর পারমাণবিক যুদ্ধের মধ্যে পরিষ্কার পার্থক্য রয়েছে এবং উভয় পক্ষই সেই সীমারেখা বজায় রেখেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পারমাণবিক যুদ্ধ ঠেকাতে ভূমিকা রেখেছেন সেই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
পাকিস্তানের কাছে চীনের প্রযুক্তি ও অস্ত্র নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ভারতীয় সিডিএস দাবি করেন, এসব প্রযুক্তি বাস্তবে কার্যকর ছিল না। চীনা সহায়তা যে পাকিস্তানকে যুদ্ধক্ষেত্রে কোনো সুবিধা দিতে পারেনি বলে দাবি করেন তিনি।
জেনারেল চৌহান সতর্ক করেছেন যে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি পুরোপুরি নির্ভর করবে পাকিস্তানের আচরণের ওপর। ভারত তার ‘রেড লাইন’ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, এবং তা লঙ্ঘন করা হলে কঠিন জবাব আসবে বলে জানান তিনি। এদিকে পাকিস্তানের হাতে রাফাল ভূপাতিত হওয়ার দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে ফ্রান্স। প্যারিসে এক সংবাদ সম্মেলনে ফরাসি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র জানান, তারা এই বিষয়ে ভারতীয় প্রতিরক্ষা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রাখছে এবং ঘটনাগুলোর সত্যতা যাচাই করছে।
কাশ্মীর ইস্যু ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে এমন সংঘর্ষ বহুদিন পর এতোটা তীব্র আকার ধারণ করেছিলো। অনেকের মতে, এটি গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ। ১০ মে উভয় দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়।
তথ্যসূত্র: ব্লুমবার্গ

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
