বোট ক্লাবে সেই রাতে পরীমনি-নাসিরের এক ভিডিও প্রকাশ
বোট ক্লাবে সেই রাতে ক্লাবটির সাবেক সদস্য গ্রেপ্তার নাসির উদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে চলচ্চিত্র নায়িকা পরীমনির একটি ভিডিও প্রকাশ হয়েছে।
৯ জুন মধ্যরাতে ক্লাবের ভেতরে পরীমনির সঙ্গে কী ঘটেছিল, নতুন ১০ সেকেন্ডের ওই ভিডিও থেকে কিছুটা ধারণা পাওয়া গেছে। ওই ভিডিওটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও পর্যবেক্ষণ করছে।
মঙ্গলবার একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে ওই ভিডিটির ক্লিপস প্রকাশ করেছে। তবে কে ওই ভিডিওটি প্রকাশ করেছে বা এর সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
এতে দেখা গেছে, পরীমনি ক্লাবে ঢুকেই বারের সামনে চেয়ারে বসে তার সঙ্গে থাকা অমি ও জিমিকে নিয়ে মদ পান করছেন। এ সময় দূর থেকে বোট ক্লাবের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য নাসির ইউ মাহমুদ তাকে মদ পান করতে নিষেধ করেন। তখন পরীমনি একটি বোতল নিতে চাইলে নাসির ইউ মাহমুদ বলেন, আপনি কোনো বিদেশি মদ নিতে পারবেন না। এখানেও তাকে নিবৃত করার চেষ্টা করেন পরিচালনা পর্ষদের এ সদস্য।
ভিডিওতে দেখা যায়, পরীমনিকে উদ্দেশ করে নাসির বলেন, ‘হোয়াট ইজ দিস, প্লিজ স্টপ ইজ, ডোন্ট ডু দিস, ইটস ঠু মাচ।’
নাসিরের উত্তরে পরীমনি বলেন, ‘অ্যাই যা…যা! বেরিয়ে যা!’
পরীমনি যে বর্ণনা দিয়েছিলেন সেই রাতের
১৪ জুন রাতে গণমাধ্যমকে সেই রাতের বর্ণনা দেন পরীমনি। যেখানে তিনি বলেন, ‘কাজের ব্যাপারে বোট ক্লাবে গিয়েছিলাম। অমি অনেক দিন থেকেই বলছিল একটা কাজ করতে হবে। কিন্তু সময়ের কারণে কাজের ব্যাপারে কথা বলতে পারছিলাম না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিচিত বলে কাজের জন্য কথা বলতে রাজি হই।
‘সেখানে আগে থেকে উপস্থিত ছিলেন চার থেকে পাঁচ ব্যক্তি। তারা বসতে বলে প্রথমে কফি ও পরে কোক খাওয়ার প্রস্তাব দেন।
‘কফি আসতে দেরি হচ্ছে বলে দেয়া হয় কোক। কিন্তু সেই কোকের স্বাদ ছিল সন্দেহজনক।
“ক্লাবের ভেতরে থাকা ‘মুরব্বি’ গোছের একজন নিজের নাম নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলে জানান। কথাবার্তার একপর্যায়ে আমার মুখে মদের বোতল ঠেলে দেন। জিমিকে মারধর করেন ব্যাপকভাবে।”
নতুন প্রকাশ হওয়া দশ সেকেন্ডের এই ভিডিও দেখে মনে হয় যে, নাসির কিছু একটা করতে মানা করছেন পরীমনিসহ অন্যদের। কিন্তু পরীমনি সেটা শুনছেন না। যা কিনা নাসির গ্রেফতার হওয়ার দিন তার যে বক্তব্য, তার সঙ্গে মিলে যায়।
নাসির বলেছিলেন, ‘আমি যখন বের হচ্ছিলাম, তখন তারা ঢোকে। তারা কাউন্টার থেকে দামি মদ জোর করে নেয়ার চেষ্টা করছিল। আমি বাধা দিতে গেলে পরীমনি আমার ওপর উত্তেজিত হয়ে যায়। গালিগালাজ করে ও গ্লাস প্লেট ভাঙতে থাকে।’
এর পর (১৩ জুন) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেন পরীমনি। স্ট্যাটাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহায্য চান তিনি। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে মা ডেকে তার কাছে সঠিক বিচার ও মেয়ে হিসেবে আশ্রয় চান।
এরপর বিষয়টি নিয়ে ওইদিন রাতেই বনানীর নিজের বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেন অভিনেত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ‘গত বুধবার (৯ জুন) রাত ১২টায় আমাকে বিরুলিয়ায় নাসির উদ্দিন মাহমুদের কাছে নিয়ে যায় অমি। ওই সময় নাসির নিজেকে ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন। সেখানে নাসির আমাকে মদ খেতে অফার করেন। আমি রাজি না হলে আমাকে জোর করে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। এতে করে সামনের দাঁতে আঘাত পাই। একপর্যায়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। তারপর আমাকে নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টা করেন।’
পরের দিন সাভার থানায় মামলা দায়ের করেন পরীমনি। পরে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। সেই মামলায় নাসির ও অমি সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বাকি তিন নারীর ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ভিডিও সংগৃহীত
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)