সাতক্ষীরা পৌরসভার ১০ কাউন্সিলরের দুর্নীতির খতিয়ান তুলে ধরে মেয়রের সংবাদ সম্মেলন
অবৈধভাবে নিজেদের নামে দোকান বরাদ্দ নেওয়ার প্রতিবাদ করা ও দুর্নীতির প্রশ্রয় না দেওয়ায় দুই বারের নির্বাচিত সাতক্ষীরার পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন ১০ জন কাউন্সিলর।
বিশেষ করে কাউন্সিলরদের দুর্নীতির প্রমান মেয়রের হাতে আসায় নিজেদের রক্ষায় মিথ্যা কাল্পনিক অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে তিনি রোববার বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেয়র তাজকিন আহম্মেদ চিশতি বলেন, আমি ২০২১ সালের ১০ মার্চ টানা দ্বিতীয় বার মেয়র হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করি। গ্রহণের পর পৌরসভার সকল স্তরের দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধে কার্যকরি পদক্ষেপ নিয়েছি। মূলত এর ফলেই স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধনে গত ১৩ জানুয়ারি পৌরসভার ১০ জন কাউন্সিলর একত্রে আমার বিরুদ্ধে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দাখিল করেছেন। যেটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, কাউন্সিলরগণের অভিযোগের মধ্যে অন্যতম ক্ষমতা অপব্যবহার করে পৌর কর, ট্রেড লাইসেন্স, পানির বিল মহকুফ, করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্থ আবেদনকারী পৌরবাসীর কর মহকুফের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ, বাজার ও ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের মাধ্যমে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ, বাজেট ছাড়াই টেন্ডার ও আর্থিক সাহায্য প্রদান। তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে মেয়র চিশতি জানান, ইতিপূর্বে দায়িত্বে থাকা মেয়রগণ ক্ষতিগ্রস্থ পৌরবাসীর কর মহকুফের জন্য দাখিলকৃত আবেদন গ্রহণ করে বিধিমতে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন সেই ধারাবাহিকতায় আমিও বিধিমতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দপ্তরে আবেদনকারীদের দরখাস্ত দপ্তরে প্রেরণ করেছি।
প্রতিটি কার্য পরিচালনার জন্য টেন্ডার কমিটি রয়েছে। টেন্ডার কমিটির মাধ্যমে ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। যার আহবায়ক পদাধিকার বলে প্যানেল মেয়র-১ ও সদস্য একজন সহকারী পরিচালক স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। যাদের লিখিত সুপারিশে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তদন্ত কর্মকর্তার কাছে মিথ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে স্বপক্ষের কাগজপত্রসহ দাখিল করেছি। তিনি বলেন, আমি জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি জনগনের উন্নয়নের কাজ করাটাই আমার লক্ষ্য। মেয়র হিসেবে পৌর কর, ট্রেড লাইসেন্স, পানির বিল মওকুফ ইতোপূর্বে যে সব মেয়র ছিলেন তারাও করেছেন। আমিও পৌর বিধি অনুযায়ী এবং পূর্বের মেয়রদের সাথে সামঞ্জতা রেখেই অনুদান এবং বিল মওকুফ করেছি।
কোন ধরনের অনিয়ম আমাকে স্পর্শ করতে পারেনি। তবে পৌরসভার কাউন্সিলরবৃন্দ আমার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায় করতে না পেরে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আমি মনে করি কাউন্সিলরবৃন্দ যে অভিযোগ করেছেন, সেটি মেয়রের বিরুদ্ধে করেনি।
সাতক্ষীরা পৌরসভার জনগনের বিরুদ্ধে করেছেন, নিজেদের বিরুদ্ধে করেছেন। বিশেষ করে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ মাহমুদ পাপা অনৈতিকভাবে নিজের নামে ৬টি দোকান বরাদ্দ নিয়েছেন। তার ভাগ্নে ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিমেল তার বাবা এবং মায়ের নামে অনৈতিকভাবে আরো ২টি দোকান বরাদ্দ রেখেছেন। এর প্রতিবাদ করায় তারা আমার উপর ক্ষুদ্ধ। এছাড়া ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পৌর প্যানেল মেয়র(১) কাজী ফিরোজ হাসান দীর্ঘদিন ধরে আমাকে সরিয়ে নিজে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। যাতে তারা পৌরসভায় অনিয়ম দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করতে পারেন। সে কারনে গভীর চক্রান্ত করছেন তারা। আমি মেয়র থাকতে পৌরসভায় কোন অনিয়ম হতে দেবো না। তিনি এবিষয়ে সাতক্ষীরায় কর্মরত সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপীসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক এবং শতাধিক মেয়র সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)