অভিনয়-মডেলিংয়ের আড়ালে অনৈতিক কাজ করলে দায় তাকেই নিতে হবে: তথ্যমন্ত্রী
সম্প্রতি একাধিক অভিনয়শিল্পী-মডেল গ্রেফতার হওয়া নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, অভিনয়-মডেলিংয়ের আড়ালে অনৈতিক কাজ করলে দায় এড়ানো যাবে না।
তিনি বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীতে সরকারি বাসভবনে বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ ছেলে শহিদ শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বক্তব্য শেষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, অভিনয়-মডেলিং এগুলো আমাদের শিল্প-সংস্কৃতিরই অংশ। যারা এগুলো চর্চা করেন তারা এই অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করে এবং অনেকে জীবিকাও নির্বাহ করে। কিন্তু এর আড়ালে কেউ যদি অবৈধ-অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তিনি যেই হন, সেই দায় তো তাকে নিতেই হবে।
এ ধরনের অভিযোগে গ্রেফতারের প্রেক্ষিতে শিল্পাঙ্গণে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অনৈতিক বা অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত যে কারোর বিষয়ে সবসময়ই আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ব্যবস্থা নিতে পারে। এতে পুরো অঙ্গনের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে বলে আমি মনে করি না।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে র্যাব অভিযান শেষে পরীমনিকে আটক করে। আটকের পর তাকে র্যাব সদরদফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতভর সেখানেই রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পরীমনিকে। বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবারও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার বিকাল ৪টার দিকে পরীমনির বাসায় অভিযানে যায় র্যাব-১ এর সদস্যরা। এ সময় তাৎক্ষণিক ফেসবুক লাইভে এসে পরীমনি বিষয়টি সবাইকে জানান। তিনি বলেন, অজ্ঞাত বিভিন্ন পোশাকের কয়েকজন ব্যক্তি বাসার বাইরে থেকে কলিং বেল দিয়ে দরজা খুলতে বলছে। আমি ভয় পাচ্ছি।
সেসময় তিনি থানা-পুলিশ, ডিবির কর্মকর্তা ও তার পরিচিতদের কাছে ফোন করে তাকে বাঁচানোর আহ্বান জানান। বাইরে থেকে বারবার র্যাব তাদের পরিচয় দিলেও ভেতর থেকে দরজা খুলছিলেন না তিনি। পরে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বাসার বারান্দা দিয়ে দেখে বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে ভেতর থেকে দরজা খুলে দেওয়া হয়। এরপর র্যাব সদস্যরা ভেতরে ঢোকেন ও তল্লাশি শুরু করেন। পরে রাত ৮টার দিকে নতুন মাদক এলএসডি, আইস ও বিদেশি মদসহ পরীমনিকে আটক করে র্যাব সদরদফতরে নেওয়া হয়।
এরপর পরীমনির পাশেই রাজের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। তার বাসায় মাদকসহ পর্নোগ্রাফি ও বিকৃত যৌনাচারের বিভিন্ন আলামত এবং সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে ১ আগস্ট দিবাগত রাতে পৃথক বাসায় অভিযান চালিয়ে মডেল পিয়াসা ও মৌকে আটক করা হয়।তাদেরকে আটকের পর মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে মডেল মৌ-এর বাসার নিচে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (উত্তর) শাখার যুগ্ম-কমিশনার হারুন-অর-রশীদ।
তিনি বলেন, তারা দুজন একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে আমরা অনেক ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ পেয়েছি। সেসব ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে আজ তাদের বাসায় অভিযান চালানো হয়। দুইজনের বাসায় বিদেশি মদ, ইয়াবা, সিসা পাওয়া যায়। মৌয়ের বাড়িতে মদের বারও ছিল।
ডিবির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আটক দুই মডেল হচ্ছেন রাতের রাণী। তারা দিনের বেলায় ঘুমাতেন এবং রাতে এসব কর্মকাণ্ড করতেন। উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের পার্টির নামে বাসায় ডেকে আনতেন তারা। বাসায় আসলে তারা তাদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলতেন এবং ভিডিও করে রাখতেন। পরবর্তীতে সেসব ভিডিও এবং ছবি ভিকটিমদের পরিবারকে পাঠানোর হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করতেন এবং মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতেন।
আটকদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ার বিষয়ে ডিবির যুগ্ম-কমিশনার হারুন-অর-রশীদ বলেন, তাদের বাসায় মাদক পাওয়া গেছে। ফলে তাদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর ও গুলশান থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক মামলা হবে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের অভিযোগ থাকায় আলাদা মামলা হবে। এসব মামলায় তাদের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)