আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে গণঅভ্যুত্থানে নৃশংসতা চালিয়েছিল: জাতিসংঘ
![](https://kalaroanews.com/wp-content/uploads/2025/02/UN.jpg)
![](https://kalaroanews.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
জনতার বিরোধিতার মুখে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে সাবেক সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নৃশংসতা চালিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নৃশংস প্রতিক্রিয়া ছিল সাবেক সরকারের একটি পরিকল্পিত এবং সমন্বিত কৌশল, যা জনতার বিরোধিতার মুখে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে করা হয়েছিল।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সাবেক সরকারের নৃশংসতা নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদনে হাইকমিশনার এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিক্ষোভ দমন করার কৌশলের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জ্ঞাতসারে, তাদের সমন্বয় ও নির্দেশনায় শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও আটক এবং নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে।
ভলকার তুর্ক বলেন, আমরা যে সাক্ষ্য এবং প্রমাণ সংগ্রহ করেছি তা ব্যাপক রাষ্ট্রীয় সহিংসতা এবং লক্ষ্যভিত্তিক হত্যাকাণ্ডের এক উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর এবং যা আন্তর্জাতিক অপরাধও গঠন করতে পারে। জাতীয় নিরাময় এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য দায়বদ্ধতা এবং ন্যায়বিচার অপরিহার্য।
হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের জন্য এগিয়ে যাওয়ার সর্বোত্তম পথ হলো একটি বিস্তারিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই সময়ে সংঘটিত ভয়াবহ অন্যায়গুলোর সত্য উন্মোচন, নিরাময় এবং জবাবদিহিতার মুখোমুখি হওয়া এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ধারাবাহিকতার প্রতিকার করা এবং এর পুনরাবৃত্তি যাতে আর কখনও না ঘটতে পারে তা নিশ্চিত করা।
আমার কার্যালয় এই গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় জবাবদিহিতা এবং সংস্কার প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন ভলকার তুর্ক।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বিক্ষোভ দমনে নৃশংসতা, পদ্ধতিগত নিপীড়নের তথ্য, এবং গুরুতর অধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ন্যায়বিচারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
জুলাই আন্দোলনে নিহতদের সংখ্যা জানাল জাতিসংঘ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ৪৪ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় সংস্থাটি।
জাতিসংঘ বলছে, বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে যে তাদের ৪৪ জন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে বিভিন্ন সময় তারা নিহত হন।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সময় ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। এ সময় আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। আহতদের বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীসমূহের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ ছিল শিশু।
এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক সরকার এবং নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহিংস উপাদানগুলোর পাশাপাশি, গত বছরের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের সময় পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাসমূহের সাথে জড়িত ছিল।
প্রতিবেদনটি কিছু বিস্তারিত পরিসরে সুপারিশ প্রদান করেছে, যেমন নিরাপত্তা ও বিচার খাতের সংস্কার, নাগরিক ও রাজনৈতিক ভিন্নমতকে দমিয়ে রাখার জন্য প্রণীত দমনমূলক আইন ও প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ করা এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক শাসন ব্যবস্থায় বৃহত্তর পরিবর্তন বাস্তবায়ন করা।
অন্তর্বর্তী সরকার তদন্তের সাথে ব্যাপক সহযোগিতা প্রদর্শন করেছে, অনুরোধকৃত প্রবেশাধিকারের অনুমতি দিয়েছে এবং যথেষ্ট নথিপত্র সরবরাহ করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
![](https://kalaroanews.com/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
![](https://kalaroanews.com/wp-content/uploads/2023/09/kalaroa-homio-hall-1024x549.jpeg)