আশুরার রোজা এক বছরের গুনাহ মাফের সুযোগ


আশুরা হলো মহররম মাসের ১০ তারিখ, যা ইসলামী বর্ষপঞ্জির প্রথম মাসের একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এই দিনে বহু ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এই দিনেই মহান আল্লাহ নবী মুসা (আ.) ও বনি ইসরাইল জাতিকে ফেরাউনের জুলুম থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। একই দিনে, নবী নূহ (আ.)-এর নৌকা জুদি পাহাড়ে স্থির হয়েছিল। এসব ঘটনার কারণে ইসলামী শরীয়তে আশুরার দিনটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ও গুরুত্ববহ হিসেবে বিবেচিত।
আশুরার রোযার ফজিলত
মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমি আল্লাহর নিকট আশা রাখি যে, আশুরার রোযা বিগত এক বছরের গুনাহ মোচন করবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ১১৬২)
এটি মহান আল্লাহর বিরাট করুণা যে, মাত্র এক দিনের রোজায় তিনি বান্দার এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেন।
রাসূলুল্লাহ (সা.) আশুরার রোজা রাখার কারণ
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী (সা.) মদীনায় আগমনের পর দেখলেন, ইহুদিরা আশুরার দিন রোজা রাখে। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমরা এ দিন কেন রোজা রাখ?’ তারা বলল, ‘এই দিনটি একটি মহান দিন, যেদিন আল্লাহ তায়ালা মূসা (আ.) ও তার কওমকে মুক্তি দিয়েছিলেন এবং ফেরাউন ও তার বাহিনীকে ধ্বংস করেছিলেন। কৃতজ্ঞতা স্বরূপ মূসা (আ.) এই দিন রোজা রাখতেন।’ তখন নবী (সা.) বললেন, ‘আমরা মূসার অনুসরণের জন্য তোমাদের চেয়ে বেশি হকদার।
’এরপর তিনি নিজে রোজা রাখলেন এবং সাহাবীদেরও রোযা রাখার নির্দেশ দিলেন।’ (বুখারি, হাদিস: ১৮৬৫)
আশুরার রোজা রাখার সঠিক নিয়ম
হাদিসের ভাষ্য মতে রাসূল (সা.) শুধুমাত্র ১০ মহররমে রোজা রাখতেন না, বরং তিনি বলেন: “এই দিনে ইহুদিরাও রোজা রাখে, তাই তোমরা ইহুদিদের সঙ্গে মিল না রেখে ৯ তারিখও রোজা রাখো।” (মুসলিম, হাদিস: ১১৩৪)
তাই সুন্নত হলো ৯ ও ১০ মহররম দুদিন রোজা রাখা। আর যদি কোনো কারণে কেউ ৯ তারিখ রোজা রাখতে সক্ষম না হন; তাহলে ১০ ও ১১ মহররম এ দুদিনও রোযা রাখতে পারবেন। তবে মনে রাখতে হবে যে, শুধুমাত্র ১০ তারিখ রোজা রাখাও জায়েজ, কিন্তু এটি উত্তম পন্থা নয়।
ইমাম নববি (রহ.) বলেন, আশুরার রোজা ছোট গুনাহগুলো মাফ করে দেয়। বড় গুনাহগুলো ক্ষমার জন্য অবশ্যই তওবা করতে হয়।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ (রহ.) বলেন: নামাজ, অজু, রমযানের রোজা, আরাফার রোজা এবং আশুরার রোজা শুধু ছোট গুনাহই মাফ করে।
(আল-ফাতাওয়াল কুবরা: ৫/৩৮২)
আশুরার রোজা রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি বিগত বছরের ছোট গুনাহগুলো মাফ করে। আশুরার মাহাত্ম্য হলো, এ দিন আল্লাহ তায়ালা হযরত মূসা (আ.) ও তাঁর কওমকে মুক্তি দিয়েছিলেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)

একই রকম সংবাদ সমূহ

ইমাম-খতিবদের সুখবর দিলেন ধর্ম উপদেষ্টা
সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা সরকারি, ইমাম ও খতিবদের বেতন ২০১৫ সালের পে স্কেলবিস্তারিত পড়ুন

হযরত ইউসুফ (আঃ) এর কবরে ইহুদিরা, আটকে রাখলো ফিলিস্তিনিরা
ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীরের নাবলুসে হযরত ইউসুফ (আঃ) এর কবরে গিয়েছিল ইহুদিরা। তবে ইসরায়েলিবিস্তারিত পড়ুন

পবিত্র আশুরা ৬ জুলাই
দেশের আকাশে ১৪৪৭ হিজরি সনের মহররম মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে শুক্রবারবিস্তারিত পড়ুন