এডিসি হারুনের পর সানজিদাকেও রংপুরে বদলির বিষয়টি নিছক গুজব : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে পেটানো অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদকে কয়েক দফা বদলির পর রংপুর রেঞ্জে ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। যাকে নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত সেই এডিসি সানজিদা আফরিনকেও একই ঘটনায় রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে (পিটিসি) বদলি করা হতে পারে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। গত দুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও সয়লাব হয়ে গেছে এমন এমন খবরে।
তবে বিষয়টিকে নিছক গুজব বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও হতে পারে। ভুক্তভোগীরা চাইলেও মামলা করতে পারেন। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর রাতে শাহবাগ থানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাদের মারধরের অভিযোগ ওঠে এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে।
আহত নেতারা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন নাঈম, বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান।
এদের মধ্যে একজনের দাঁত ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগও পাওয়া গেছে। তবে ভুক্তভোগীরা এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা করেননি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগও পুলিশের তদন্তের ওপর আস্থা রাখার কথা বলেছেন।
এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা। এখন পর্যন্ত এডিসি হারুন-অর-রশীদের চাকরিচ্যুতির দাবি ছাড়া প্রায় সব দাবিই পূরণ হয়েছে। ছাত্রলীগ, পুলিশ ও সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ঘটনাটি ঘিরে যাতে কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেটি নিশ্চিত করাই ছিল মূল লক্ষ্য। এজন্য ঘটনার পরপরই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে দায়িত্বশীল ভূমিকায় থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শাহবাগ থানা ফটকে গিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করলে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এর পরদিন এডিসি হারুনকে রমনা জোন থেকে প্রত্যাহার করে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজম্যান্টে (পিওএম) সংযুক্ত করা হয়। আবার সেদিনই তাকে এপিবিএন-এ বদলি করা হয়। এ নিয়ে আপত্তি উঠলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। এ নিয়েও আপত্তি জানিয়েছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ তাকে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে। এতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অনেকটা শান্ত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, এডিসি সানজিদার সঙ্গে যোগাযোগের সূত্র ধরে রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল এডিসি হারুনের। ঘটনার ধারাবাহিকতায় গত শনিবার রাতে শাহবাগ থানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে বেধরক মারধর করেন এডিসি হারুন। এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় ১২ সেপ্টেম্বর বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেন সানজিদা। তিনি দাবি করেন, রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুনই এডিসি হারুনকে আগে মারধর করেছেন।
সানজিদা রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুনের স্ত্রী। তিনি ৩৩তম বিসিএসের কর্মকর্তা। ডিএমপির ক্রাইম বিভাগে অতিরিক্ত উপকমিশনার হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন সানজিদা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)