যতই কৌশল করুক এবার পার পাবে না : রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গণআন্দোলনকে নস্যাৎ করতে কোন কারণ ছাড়াই নাশকতার মামলা দিচ্ছে সরকার। নির্বাচনকে সামনে রেখে সর্বনাশা আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরী করতে মরিয়া সরকার। জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় মাঠ সাজানোর অংশ হিসেবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী রণপ্রস্তুতি শুরু করেছে, ঝাপিয়ে পড়েছে বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপর।
সোমবার (৮ মে) বিএনপির নয়াপল্টনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, জনগণ রাজপথে নেমেছে, যতই কৌশল করুক এবার পার পাবেনা, জেল জুলুম হুলিয়া দিয়ে পার পাওয়া যাবেনা।
সরকার ভয় থেকে বিরোধী নেতাদের গ্রেফতার করছে, যাতে একটা কার্যকর আন্দোলন গড়ে উঠতে না পারে।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে সরকারের অনড় ও এক গুঁয়েমি অবস্থান জনগণ নস্যাৎ করে দেবে।
এসময় দলটির অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ভোট ‘ডাকাতি’ নিয়ে রিজভীর নতুন তথ্য
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গায়েবি মামলা-গ্রেফতার নিয়ে বিশ্বের গণতন্ত্রকামী দেশ, জাতিসংঘ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানালেও নিশিরাতের সরকার নিজেকে রক্ষা করতে এই অপকর্মে মরিয়া।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের ২৪ জুন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ গায়েবি মামলা করে নিরাপরাধ মানুষকে হয়রানি থেকে রক্ষায় পাঁচ দফা নির্দেশনা দিলেও তা পরোয়া করে না আওয়ামী সরকারের পুলিশ প্রশাসন। পুলিশ বাহিনী সরকারদলীয় সংস্থায় পরিণত হয়েছে- এমন আলোচনা এখন সর্বত্র। নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশ প্রশাসনের দলবাজ হোমড়া চোমড়া ও প্রশাসনের অফিসাররা আবারও ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের বিয়াম ভবনসহ এখানে সেখানে ভোট ডাকাতির কলাকৌশল ও মাঠ সাজানো নিয়ে গুপ্ত বৈঠক শুরু করেছেন।’
সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন যখন ঘনিয়ে আসে তখন বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা, হামলা নির্যাতন এবং পাইকারি গ্রেফতার অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়ে আওয়ামী দলবাজ প্রশাসন। ভোট ডাকাতির নানা রকম কারিগরি করতে মাঠ সাজানো শুরু হয়েছে। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতো সেই একই প্রক্রিয়ায় পুরোনো পথে হাঁটতে শুরু করেছে তারা। ইতোমধ্যে প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী রণপ্রস্তুতি শুরু করেছে, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকার নিজেদের ‘তখতে তাউস’ রক্ষা করতে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিতে শুরু করেছে। এখনও আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এই আওয়ামী আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও গায়েবি মামলায় সারাদেশে প্রায় ৪০ লাখের অধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে সম্প্রতি গায়েবি মামলা দায়েরের সূত্রপাত করেছে গণবিচ্ছিন্ন স্বৈরাচারী সরকারের প্রশাসন।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা অভিযোগ করে বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করার প্যাকেজ খরচ হিসেবে ১ হাজার ২২৬ কোটি টাকার বাজেট চেয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমনে ১৫৮ কোটি টাকায় অস্ত্র ও গোলাবারুদ কেনাকাটায় ব্যয় হবে। সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঠেকাতে ৫৪০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি ক্রয়ের প্রস্তাব রয়েছে তাদের বাজেটে। তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি সরঞ্জামাদি ও কম্পিউটার এবং সফটওয়্যার কিনতে মোট ব্যয় হবে ২০ কোটি টাকা। সর্বশেষ ৮ নম্বর খাতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক কর্মসূচি বৃদ্ধির ফলে পুলিশের গতিও বাড়াতে হবে। এখানেই থেমে নেই আওয়ামী নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় পরিচয় দেখে পুলিশে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনী রদবদল ও পদোন্নতি শুরু হয়েছে। তবে এতোসব করে এবার আর পার পাওয়া যাবে না। জনগণ রাজপথে নেমেছে অধিকার আদায়ের আন্দোলনে। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে সরকারের পতন হবে।
রিজভী বলেন, সরকারের স্বেচ্ছাচারিতার শিকার হয়ে বেশ কয়েক মাস কারাগারে কাটাতে হয়েছে। অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দি থাকা হাজার হাজার মানুষ যেভাবে কারামুক্তির প্রহর গুনছে, একইভাবে দেশের কোটি কোটি গণতন্ত্রকামী মানুষ দেশে ক্ষমতাসীনদের মিথ্যাচার, অবিচার, অনাচার আর গণতন্ত্রহীনতার অন্ধকার থেকে মুক্তি চাইছে। মাদার অফ ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীন সংগ্রামের অনুপ্রেরণায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্রহীনতার অন্ধকার থেকে গণতন্ত্রকামী মানুষের মুক্তির চলমান এই মিছিলকে গুম খুন অপহরণ করে কিংবা অন্যায়ভাবে জেল জুলুম হুলিয়া দিয়ে স্তব্ধ করা যাবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুইয়া, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, সেলিমুজ্জামান সেলিম, মীর নেওয়াজ আলী, মনির হোসেন, তরিকুল আলম তেনজিং, আবু নাসের রহমত উল্লাহ প্রমুখ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)