স্থলবন্দরে ভারতের নিষেধাজ্ঞা
আনুষ্ঠানিকভাবে জানার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ: বাণিজ্য উপদেষ্টা


বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পোশাকসহ প্রায় সাত ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত। তবে বিষয়টি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে জানার পর প্রয়োজনে সকল কিছু করা হবে।
রোববার (১৮ মে) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
ভারত গতকাল যে পদক্ষপটা নিলো সেই পরিপ্রেক্ষিতে আপনারা কী করছেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা এখনো অফিসিয়ালি ভারতের পদক্ষেপের বিষয়ে কিছু জানি না। তবে সোস্যাল মিডিয়া ও নিউজ থেকে আমরা জানি তারা স্থলবন্দর বিশেষ করে আখাউড়া, ডাউকিসহ কিছু সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা ফর্মালি জানার পর ব্যবস্থা নিতে পারবো। আমাদের বিশ্লেষণ চলছে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা সেটা করছে। আমরা উপলব্ধি করার চেষ্টা করছি, তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা করণীয় নির্ধারণ করবো।
আমরা ভারতের যে সিদ্ধান্তের কথা জানতে পারছি তাতে আমাদের বাণিজ্য বড় ধরনের প্রভাব পড়বে, বিশেষ করে গার্মেন্টস পণ্য, আসবাবপত্র, ফলের জুসসহ বিভিন্ন পণ্যে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের দেশ থেকে খুব বেশি যে সবকিছু যায় তা কিন্তু না। গার্মেন্টস শিল্পের একটা বড় পরিমাণ যায়। আপনারা এটা জানেন যে প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অর্জনই আমাদের বড় লক্ষ্য৷ এটা দুইজনের জন্য লাভজনক বিষয়। আমরা নিশ্চয়ই মনে করি ভারত নিজেও একটা টেক্সটাইল বা বস্ত্রশিল্পে সমৃদ্ধ দেশ। এরপরও যখন আমাদের দেশ থেকে এসব পণ্য রপ্তানি হয় সেটা আমাদের সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করেই। তবে আমরা আশা করি উভয় দেশের ভোক্তা ও উৎপাদনের স্বার্থে এটা চলমান থাকবে।
এর আগেও ট্রান্সশিপমেন্ট, এখন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা; এই দুইটা বিষয় ভারত কেন করেছে বলে আপনি মনে করেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ট্রান্সশিপমেন্টের প্রভাব আমাদের নেই। আমরা নিজেদের সক্ষমতা ব্যবহার করে নিজস্বভাবেই এই সমস্যার সমাধান করেছি।
ভারতীয় ব্যবসায়ীরা কি এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আপনার মনে হয়- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অবশ্যই, এটাতো প্রতিযোগিতার সক্ষমতার বিষয়। বিভিন্ন সময় আপনারা দেখেছেন আমরা যেহেতু ভৌগোলিকভাবে কানেক্টেড একটা দেশ। আমাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা, পরিবহন ব্যয়সহ অন্যান্য জিনিস নির্দিষ্ট। এক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন সময় আমাদের কৃষিপণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করি, ভারতও করে। সেটা চলমান একটা প্রক্রিয়া। এটা বাণিজ্য ব্যবস্থাপনার প্রক্রিয়া আমরা সেটা বিষয়ে কাজ করছি। সেখানে যদি সমস্যা দেখা দেয় বা তৈরি হয় তাহলে উভয়পক্ষ আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবো।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের বেশ কিছু বন্দর এখনো চালু আছে। যে কয়টা বন্ধ হয়েছে সেখানে ৯০ শতাংশ নয়। আমাদের সংস্থাগুলো কাজ করছে। আমি এখনো রিপোর্টটা দেখিনি। আপনারা যেমন সোস্যাল মিডিয়াতে দেখেছেন আমিও সোস্যাল মিডিয়ায় দেখেছি। আমাদের আরও দু-একদিন সময় লাগবে পুরো পরিস্থিতিটা জানার জন্য আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। আজ না হয় কালের মধ্যে তথ্য পেয়ে যাবো, তখন আমরা আরও ভালোভাবে জানতে পারবো।
ভারতের সাথে কি তাহলে আলোচনায় যাবেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, প্রয়োজনে সকল কিছু করবো। তবে এ বিষয়টি আমাদের এখনো অফিসিয়ালি জানানো হয়নি।
যে দুইটি সিদ্ধান্ত আমরা দেখলাম সেটা সাম্প্রতিক দুই দেশের সম্পর্কের কারণে হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমার কাজ বাণিজ্য আমি এটাতেই সীমাবদ্ধ থাকতে চাই। সবসময় যেটা বলে এসেছি আমি উদার বাণিজ্যে বিশ্বাসী। আমার কাছে বাণিজ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমার দেশের ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বাণিজ্য উদারীকরণ ও বাণিজ্য ইনক্লুশন ছাড়া আর কোনো রাস্তা আমি দেখি না।
সরকার বলছে আমরা বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়ন করবো, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবো অথচ পরিস্থিতি উল্টো দেখা যাচ্ছে- এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এই জিনিসগুলোই আলোচনায় নিয়ে আসবো। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন ভারতের সাথে আমাদের যে বাণিজ্য সেটা ভারতের দিকেই অধিক ভারী। আমরা নিশ্চয়ই এই অবস্থানগুলো তুলে ধরবো। একই সঙ্গে আশা করছি এই সমস্যার সমাধান করতে পারবো।
এ ধরেনর সিদ্ধান্তে ভারতের সাথে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি বাড়বে সেটা কীভাবে কমিয়ে আনবেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, এটা দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, একদিনে তো আর বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পারবেন না। আমরা যেটা ভারত থেকে রিসোর্স করি সেটা পার্শ্ববর্তী অঞ্চল হিসেবে, ভারতও সেটা করে। সেটা প্রাকৃতিক বিষয়ের কারণেই হয়ে আসছে। আমরা আমাদের বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে ও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা বাণিজ্য বৃদ্ধি করবো।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
