ভয়াবহ ব্যাংক জালিয়াতি, বিক্রীত জমি বন্ধক রেখে ২৭০ কোটি টাকা ঋণ
বিক্রিকরে দেওয়া জমির দলিল বন্ধকরেখে প্রতারণার মাধ্যমে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড থেকে ২৭০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। ২০২২ সালের শেষদিকে এসব জমি বিক্রিকরে দিলেও ঋণ নেন চলতিবছরের জুন মাসে। ঋণেরটাকা কোথায় বিনিয়োগ করা হয়েছে, তাকিছুই জানে না ব্যাংককর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি সংঘবদ্ধ চক্রপ্রতিনিয়ত এসব কাজ করছে।ব্যবস্থা না নিলে বন্ধহবে না এ জাতীয়অনৈতিক কর্মকান্ড।
ফার্স্টসিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতিবছরের ২২ জুন রংধনুগ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, তার ছেলে মেহেদীহাসান দীপু, কাউসার আহমেদ অপু ও মালিহাহোসেন জোয়ারসাহারা, ভাটারা ও গুলশান মৌজার৩৩৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ জমিবন্ধক রেখে ফার্স্ট সিকিউরিটিইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখা থেকে ২৭০কোটি ঋণ নিয়েছেন। এরমধ্যে ভাটারা মৌজার চারটি প্লটে রফিকুল ইসলামের বিক্রি করে দেওয়া ৯৩দশমিক ৮৭ শতাংশ জমিওরয়েছে।
ব্যাংকেদেওয়া নথি থেকে জানাগেছে, রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ২০১৭ সালের ২০ফেব্রুয়ারি ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টিডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের কাছ থেকে এওয়াজবদলদলিল মূলে জমির মালিকহয়েছিলেন।
এর মধ্যে ভাটারামৌজার ই ব্লকের ৪৮২, ৪৮৩, ৪৮৪, ৪৮৭, ৪৮৮ও ৪৮৯ প্লটের ২৮দশমিক ১৩ শতাংশ, ৫০৭, ৫০৮, ৫১১ ও ৫১২প্লটের ১৫ দশমিক ৫৩শতাংশ, ৫৩০, ৫৩১, ৫৩২, ৫৩৩, ৫৩৪ ও ৫৩৫প্লটের ২২ দশমিক ৭০শতাংশ, ৫৫১, ৫৫২, ৫৫৬, ৫৫৭ ও ৫৫৮ প্লটের২৭ দশমিক ৫১ শতাংশ জমিরয়েছে।
খোঁজনিয়ে জানা গেছে, উল্লিখিতজমি ২০২২ সালের ১৮এপ্রিল সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে বন্ধক রেখে ঋণ নিলেওরফিকুল ইসলাম তা পরিশোধ করেদেন একই বছরের ২৯সেপ্টেম্বর। একই দিন এসবজমির মধ্যে ৪৮২, ৪৮৩, ৪৮৪, ৪৮৭, ৪৮৮ ও ৪৮৯প্লটের ২৮ দশমিক ১৩শতাংশ ও ৫৩০, ৫৩১, ৫৩২, ৫৩৩, ৫৩৪ ও৫৩৫ প্লটের ২২ দশমিক ৭০শতাংশ আবুল কাশেম গংদেরকাছে বিক্রি করে দেন রফিকুলইসলাম। এ ছাড়া ২০২২সালের ২১ নভেম্বর ৫৫১, ৫৫২, ৫৫৬, ৫৫৭ ও৫৫৮ প্লটের ২৭ দশমিক ৫১শতাংশ জমি বিক্রি করেনইমরান করিমের কাছে।
এদিকেগত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি তামান্নাসুলতানার কাছে ৫০৭, ৫০৮, ৫১১ ও ৫১২ প্লটের১৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ জমিবিক্রি করে দেন রফিকুলইসলাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতবছরের ৮ ডিসেম্বর ইস্টওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট কর্তৃপক্ষ ইমরান করিমের পক্ষে জমির মালিকানা পরিবর্তনেরঅনুমোদন দিয়েছে।
এ ছাড়া আবুলকাশেম গংদের মালিকানাধীন ২৮ দশমিক ১৩শতাংশ এবং তামান্না সুলতানারনামে ১৫ দশমিক ৫৩শতাংশ জমির মালিকানা পরিবর্তনহয়েছে চলতি বছরের ৩১জানুয়ারি। এ ছাড়াও আবুলকাশেম গংদের মালিকানাধীন ২২ দশমিক ৭০শতাংশের আরেকটি প্লটের মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে চলতি বছরের ১৯মার্চ।
ব্যাংকসূত্রে জানা গেছে, চলতিবছরের ২২ জুন রংধনুগ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, তার ছেলে মেহেদীহাসান দীপু, কাউসার আহমেদ অপু ও মালিহাহোসেন জোয়ারসাহারা, ভাটারা ও গুলশান মৌজার৩৩৭ দশমিক ৫৯ ডেসিমেল জমিবন্ধক রেখে ফার্স্ট সিকিউরিটিইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখা থেকে ২৭০কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন।
এর মধ্যে ভাটারা মৌজার চারটি প্লটে রফিকুল ইসলামের বিক্রি করা ৯৩ দশমিক৮৭ শতাংশ জমিও রয়েছে। এসবজমি তিনি এর আগেসোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছিলেন।ঋণ পরিশোধের পরপরই জমিগুলো অন্যত্র বিক্রি করে দেন। কিন্তুবিক্রির তথ্য গোপন রেখেইফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে আবারও ২৭০কোটি টাকা ঋণ নেন।
ঋণের বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথায়, কোনখাতে বিনিয়োগ করেছেন, সে বিষয়ে ব্যাংকেরকাছে কোনো তথ্য নেই।তিন দফায় এসব অর্থছাড়করা হলেও প্রথম ওদ্বিতীয় কিস্তির টাকা কোথায় বিনিয়োগহয়েছে সেটাও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন মনে করেনি সংশ্লিষ্টব্যাংক। এর মধ্যেই ঋণেরতৃতীয় কিস্তির অর্থছাড় করেছে ব্যাংক।
এবিষয়ে গতকাল ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখায় যোগাযোগ করা হলে ম্যানেজার (অপারেশন) এইচ এম ফখরুল আলম সরকার বলেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)