মোদি-রাহুল ‘শক্তি’ বিতর্কে মুখোমুখি, পাল্টাপাল্টি তোপ দাগছেন
‘শক্তি’ বিতর্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছুড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জের পাল্টা জবাব দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস নেতার অভিযোগ, তার কথা বিকৃত করছেন মোদি। তিনি সব সময়ই চেষ্টা করেন অর্থ পরিবর্তন করার, কারণ মোদি জানেন সত্য তার কথা।
রবিবার থেকেই রাহুলের ‘শক্তি’ মন্তব্যকে হাতিয়ার করে আসরে নেমেছে বিজেপি।
সোমবার তামিলনাড়ুর এক জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী রাহুলকে কটাক্ষ করতে গিয়ে বলেন, ‘কংগ্রেসের উদ্দেশ্য শক্তির বিনাশ করা। আমি সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করছি। জীবন থাকতে আমি শক্তির বিনাশ ঘটাতে দেব না। ” সেই কথার কয়েক ঘণ্টা পরেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাহুল।
নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে মোদিকে আক্রমণ করেছেন তিনি।
রাহুল লিখেছেন, ‘মোদিজি আমার কথাগুলি পছন্দ করেন না, তিনি সব সময়ই কোনও না কোনও ভাবে সেগুলির অর্থ পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন কারণ তিনি জানেন যে আমি সত্য বলেছি। আমি যে শক্তির কথা বলেছি এবং যার বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করছি তা একটি মুখোশ। তা মোদীজি ছাড়া আর কেউ নয়।
তিনি আরও লেখেন, ‘এটি এমন এক শক্তি, যার খপ্পরে পড়ছে ভারতের কণ্ঠস্বর, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ইডি, সিবিআই, আয়কর দফতর, ভারতীয় শিল্প এবং দেশের সমগ্র সাংবিধানিক কাঠামো। ’ এখানেই থেমে থাকেননি রাহুল। তার অভিযোগ, ক্ষমতার জন্য মোদি ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ মওকুফ করে দেন। কিন্তু এক জন ভারতীয় কৃষক কয়েক হাজার টাকার ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন।
তার পরই মোদিকে আক্রমণ করে রাহুল বলেন, ‘তিনি কোনও ধরনের ধর্মীয় ‘শক্তি’ নন।
তিনি অধার্মিকতা, দুর্নীতি এবং অসত্যের ‘শক্তি’। তাই আমি যখনই তার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি, তখনই মোদীজি এবং তার মিথ্যাচারের যন্ত্র বিরক্ত এবং ক্ষুদ্ধ হন। ’’
উল্লেখ্য, ‘শক্তি’ বিতর্কের সূত্রপাত রবিবার রাহুলের বক্তৃতার পর থেকেই। রবিবার ছিল কংগ্রেস নেতার ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’র শেষ দিন। মণিপুর থেকে শুরু হওয়া এই ‘যাত্রা’ শেষ হয় মুম্বাইয়ে এসে। শিবাজি পার্কে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ‘ন্যায় যাত্রা’র সমাপ্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করার সময় রাহুল বলেন, ‘‘হিন্দু ধর্মে একটা শব্দ আছে, শক্তি। আমরা শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছি। কিন্তু কী সেই শক্তি? ইভিএম এবং দেশের তদন্তকারী সংস্থা ইডি, সিবিআই, আয়কর দফতরে রয়েছে রাজার আত্মা। ’ এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। রাহুল আরও দাবি করেন, মহারাষ্ট্রের এক প্রবীণ নেতা কংগ্রেস ছাড়ার সময় তার মা সনিয়ার কাছে স্বীকার করেছেন যে, তিনি ‘শক্তি’কে চ্যালেঞ্জ করতে পারেননি। জেলে যাওয়ার ভয়ে লজ্জিত ছিলেন। কংগ্রেস নেতৃত্বের কথায় ‘শক্তি’ বলতে রাহুল বোঝাতে চেয়েছেন ‘ইডি, সিবিআই’-এর মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাকে।
কিন্তু রাহুলের এই মন্তব্যের পরেই বিতর্ক শুরু হয়। দেশ জুড়ে অনেক বিজেপি নেতা কংগ্রেস নেতার মন্তব্যে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সেই একই পথে হেঁটে সোমবার মোদিও ‘শক্তি’ বিতর্কে কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের আক্রমণ করেন।
তামিলনাড়ুর জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ইন্ডিয়া জোট তাদের ইশরতেহারে বলছে তাদের লড়াই শক্তির বিরুদ্ধে। আমার কাছে প্রত্যেক মা, মেয়ে এবং বোন হল এক একটি শক্তি। তাদের (বিরোধী) উদ্দেশ্য হল শক্তি শেষ করা। আমি সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করছি। সেই চ্যালেঞ্জ রক্ষা করতে আমি আমার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত লড়াই করে যাব। ’’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)