সাজা হয় কুলসুমার, জেল খাটছেন মিনু


রমজান উপলক্ষে বিনামূল্যে দেওয়া হবে ভোগ্যপণ্য-এ আশায় কুলসুমা আক্তারের সঙ্গে যাওয়ার পর আকস্মিক কারগারে যেতে হয় মিনু আক্তারকে। কুলসুমা আক্তারের পরিবর্তে তিন বছর ধরে কারাভোগ করছেন চট্টগ্রামের মিনু আক্তার।
হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি কুলসুমার প্ররোচনায় তার এ কারাবাস বলে অভিযোগ মিনুর। এর সঙ্গে কারা কর্তৃপক্ষেরও গাফিলতির অভিযোগ করেছেন সরকার নিয়োজিত কৌঁসুলি।
চট্টগ্রাম আদালতের টুলে বসে থাকা তিন শিশু জানে না মা মিনু আক্তার জীবিত থাকা সত্ত্বেও গত ৩ বছর ধরে তাদের জীবন কাটছে এতিমখানায়। এক আইনজীবীর মাধ্যমে জানার পর আদালতের নির্দেশেই কারাগারে থাকা মা এবং এতিমখানা থেকে নিয়ে আসা হয় এ তিন শিশুকে।
২০১৮ সালের ১২ জুন থেকে কুলসুমা আক্তার নামে অন্য এক আসামির হয়ে কারাগারে রয়েছেন তাদের মা মিনু আক্তার। কোহিনূর বেগম নামে এক পোশাক শ্রমিককে হত্যার দায়ে এ মামলায় কুলসুমা আক্তারের যাবজ্জীবন সাজা দেন আদালত।
আবেদনকারী আইনজীবী গোলাম মওলা মুরাদ বলেন, মিনু আক্তার ও তার তিন শিশুকে এভাবে দেখার পর আমার মনে হলো ঘটনাটা তদন্ত করা দরকার। সেটি দেখতে গিয়ে দেখলাম আসলে যিনি হত্যা মামলার আসামি তিনি পলাতক। আর তার হয়ে কারাভোগ করছেন মিনু।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের অতিরিক্ত পিপি মোহাম্মদ নোমান চৌধুরী বলেন, কুলসুমা আক্তার এ মিনু আক্তারকে যেভাবেই হোক ম্যানেজ করে তাকে আদালতে দাঁড় করিয়ে দেন।
এদিকে আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে মিনু আক্তার দাবি করেন, তিন বছর আগে রমজান মাসে ভোগ্যপণ্য দেওয়ার নাম করেই কুলসুমা আক্তার তাকে আদালতে নিয়ে আসেন। কুলসুমা আক্তারের শেখানো মতো আদালতের ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে তাকে কারাবাস করতে হচ্ছে।
অথচ ২০০৬ সালের এ ঘটনার পর ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দুই বছর কারাগারে ছিলেন প্রকৃত আসামি কুলসুমা আক্তার। এক্ষেত্রে ভুল আসামি হিসেবে মিনু আক্তারের তিন বছরের সাজাভোগের জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে দুষছেন সরকার নিয়োজিত কৌঁসুলি গোলাম মওলা মুরাদ।
আবেদনকারী আইনজীবী গোলাম মওলা মুরাদ আরও বলেন, চাল-ডাল যখন দেবে তখন তোমার নাম ধরে ডাকবে, সেই সময় তুমি হাত তুলবে এভাবে মিনু আক্তারকে শেখায় কুলসুমা আক্তার। আদালতের লোকজন যখন নাম ধরে ডাকে তখন কুলসুমা আক্তারের শেখানো কথায় সাড়া দিয়ে হাত তোলে সে।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের অতিরিক্ত পিপি মোহাম্মদ নোমান চৌধুরী বলেন, কুলসুমার যে মূল্যায়ক ছিল, তার উচিত ছিল এটি দেখার। সে যদি আত্মসমর্পণ করে থাকে, সে সেটি জেনেশুনে এ অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। কারাগারের উচিত ছিল এ আসামির ছবি এবং আগের আসামির ছবি এবং স্বাক্ষর এক আছে কিনা সেটা দেখা।
চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁইয়ার আদালতে মিনু আক্তারের কারাবাসের তথ্য উঠে আসলেও উচ্চ আদালতে এ হত্যা মামলার আপিল শুনানি চলছে। এ অবস্থায় নিষ্পত্তির জন্য পুরো নথি উচ্চ আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
সৌজন্যে সময় সংবাদ

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
