স্বাস্থ্য নয়, অন্যান্য খাতের কোটি টাকা কানাডায় চলে গেছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক তার মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে উঠা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।উল্টো তিনি প্রশ্ন তুলে স্বাস্থ্য কোথায় দুর্নীতি হয়েছে- তা দেখাতে বলেছেন।তিনি অন্য খাতে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি ও বিদেশে পাচার হয়েছে বলেও বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তবে সুনির্দিষ্টভাবে সেই খাতগুলোর নাম উল্লেখ করেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে কোন জায়গায় হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে বা দুর্নীতি হয়েছে এরকম কোনো তথ্য কেউ দেখাতে পারবে? এ রকম কোনো তথ্য কেউ দেখাতে পারবে? কেউ এমন তথ্য দিতে পারবে না বরং অন্য অনেক খাতের কোটি টাকা কানাডায় চলে গেছে।
শনিবার দুপুরে করোনাযুদ্ধে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহমুদ মনোয়ারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে এক শোক সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
গত ৮ জুন এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে করোনা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে সুশাসনে ঘাটতি থাকার কথা উল্লেখ করে টিআইবি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। একইসঙ্গে করোনা মোকাবিলায় আগামী দিনের জন্য ১৯টি সুপারিশ তুলে ধরে সংস্থাটি। ওই প্রতিবেদনে করোনা প্রতিরোধের কার্যক্রমে রোগ শনাক্তকরণ, চিকিৎসা, লকডাউন, টিকা ক্রয় ও বিতরণে স্বচ্ছতা, সুশাসন এবং প্রয়োজনীয় সমন্বয় ছিল না বলে উল্লেখ করে সংস্থাটি।
টিআইবির এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, টিআইবি ঘরে বসে একটি সুন্দর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আমরা করোনা শনাক্ত করতে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি এমন মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছে। অথচ করোনা শনাক্তে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যখাতে কোনো দুর্নীতির ঘটনা ঘটেনি। টিআইবি এমন মিথ্যা রিপোর্ট প্রকাশ খুবই দুঃখজনক।
করোনা প্রতিরোধে বিশ্বের সব দেশ বা সংস্থা প্রশংসা করেছে বাংলাদেশের। বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে বলেও জাহিদ মালেক তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, তারা (টিআইবি) বলছে- রোগীদের জন্য আমরা কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা করিনি। অথচ সারা দেশে ১৫ হাজার বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে শুধুমাত্র করোনা চিকিৎসার জন্য। যে কারণে ভারতের মতো এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এখনো অনেক দেশ যথাযথভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পারেনি। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো লকডাউন চলমান।
টিকা ক্রয়ের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, টিকা ক্রয়ে সততা ছিল না বলে দাবি করছে টিআইবি। কিন্তু আমরা তাদের সঙ্গে স্পষ্ট চুক্তির মাধ্যমে টিকা ক্রয় করেছি। টিকার জন্য তাদের কত টাকা দিতে হবে সব বিস্তারিত ছিল।
আইসিইউ নিয়ে তিনি বলেন, করোনার মধ্যে আইসিইউ বাড়াতে পারিনি বলে টিআইবি যে দাবি করছে এটা সঠিক নয়। গত বছর যেখানে তিন থেকে চারশ’ আইসিইউ ছিল, সেখানে এখন ১ হাজারের বেশি আইসিইউর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিআইবির রিপোর্টটি শুধুমাত্র জনগণের কাছে ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য প্রকাশ করা হয়েছে। করোনার জন্য যে সরঞ্জাম কেনা হয়েছে, তার ব্যবহার করা হয়নি। অথচ আমরা সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে সরঞ্জাম পৌঁছে দিয়েছি। এমন মিথ্যাচার আমরা গ্রহণ করি না।
জাহিদ মালেক তার বক্তব্যে দুর্নীতিতে জড়িত কয়েকজন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যারা দুর্নীতি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ড্রাইভার থেকে শুরু করে যারা অন্যায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এমনকি ভুয়া রিপোর্টের দেওয়ায় সাবরিনা ও সাহেদদের গ্রেফতার করে আদালতে দেওয়া হয়েছে। সনদ দেওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: যুগান্তর
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)