ঝিকরগাছায় মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণ : মাইকিং এ অতিষ্ট পৌরবাসী
সুখবর, সুখবর, সুখবর। ঝিকরগাছা বাসীর জন্য সুখবর। মাথা ব্যথা, কোমর ব্যথা, হার্ট ও কিডনি বিশেষজ্ঞ, যৌন রোগ ও হাড়ের বিষয়ে বিশেষ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ডাক্তার সাহেব প্রতিদিন নিয়মিত রুগী দেখছেন অমুক ক্লিনিকে। এছাড়াও গরু জবাই, বিশেষ ছাড়ে ব্রয়লার মুরগি, টিভি ফ্রিজের মুল্য ছাড়, মাছের দাম কম সহ বিভিন্ন ধরনের প্রচারের ক্ষেত্রে উচ্চশব্দে নিয়মিত মাইকিং করা হচ্ছে। এ ধরনের মাইকিং ঝিকরগাছা পৌর শহরের নিত্যদিনের ঘটনা।
পৌরসভা থেকে মাইকিং করার সময় দুপুর ২টা থেকে মাগরিব পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে দেওয়া হলেও সেই নিয়ম কেউ মানছে কিনা তার তদারকি নেই। আবার নিয়ম না মানলে কোনো শাস্তি মুলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়না।
ফলে ভ্যান-রিকশা বা ইজিবাইকে মাইক বেধে উচ্চশব্দে দিন বা রাতের বিভিন্ন সময়ে চলে এই প্রচারণা। একবার রেকর্ড করে মেমোরি কার্ড দিয়ে বিরতিহীনভাবে চলে এই ঘোষণা। এতে কেউ কেউ বিরক্ত হয়ে কানে আঙ্গুল দিয়ে পথ চলেন। নামাজের সময়ও বন্ধ হয়না এই মাইকিং।
বাড়িতে অসুস্থ রোগী আর ছোটো বাচ্চাদের ঘুম ভেঙে যায় এই উচ্চ শব্দে। এইসব মাইকের যন্ত্রণা ছাড়াও রয়েছে ব্যাটারি চালিত ভ্যান, ইজিবাইক, জে এস এর হর্ণ, গাড়ির হাইড্রোলিক হর্ণ, রাজনৈতিক দলের প্রচার প্রচারণা সহ বিভিন্ন ধরনের শব্দ দূষণ। হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ যেসব স্থানে মাইক বন্ধ রাখার নিয়ম সেখানেও এইসব বিধি নিষেধ কেউ মানছেন না।
বাংলাদেশ পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে দিনের বেলা শব্দের মাত্রা ৫৫ ডেসিবেল এবং রাত ৯ টার পর ৪৫ ডেসিবেল অতিক্রম করা যাবে না এই আইন থাকা স্বত্বেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলায় বিষয়টি সম্পর্কে মানুষ অবগত নয়। আইন মানেও না কেউ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিকরগাছার ঐতিহ্যবাহী সেবা সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এবং জে ডি ও এর নির্বাহী পরিচালক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, প্রতিদিন মাইকের শব্দে অসুস্হ হয়ে পড়ছি। এরা স্কুল কলেজ হাসপাতাল সরকারি অফিস কিছুই মানে না। আশা করি এমন নির্যাতন থেকে এলাকাবাসীকে মুক্ত করতে প্রশাসন দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।
এ বিষয়ে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার রশিদুল আলম বলেন,শব্দদূষণ থেকে বধিরতা ছাড়াও নানা রকম জটিল রোগের সৃষ্টি হতে পারে। শব্দদূষণের কারণে রক্তচাপ বৃদ্ধি, হৃৎস্পন্দনে পরিবর্তন, হৃৎপিণ্ড ও মস্তিষ্কে অক্সিজেনের স্বল্পতা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব বা বমি, দিক ভুলে যাওয়া, শরীরের নিয়ন্ত্রণ হারানো, মানসিক ক্ষতিসহ বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতা তৈরির জন্য এই শব্দদূষণ দায়ী।
ঝিকরগাছা পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি জনাব মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল বলেন, আমরা নিয়ম মানার চেয়ে ভাঙায় বেশী আগ্রহী। পৌরসভা থেকে মাইকিং এর সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে কিন্তু অনেকেই আইন মানছে না। আমরা ইতিমধ্যে আইন অমান্য করায় কয়েকজনকে জরিমানা করেছি। এরপর যদি এরকম অভিযোগ পাওয়া যায় তবে মাইক সেট জব্দ, জরিমানা কিংবা তাদের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হবে।
এ ব্যপারে তিনি সকলকে সচেতন হওয়ার আহবান জানান। এদিকে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী অযাচিত মাইকিং বন্ধ করতে যথাযথ কতৃপক্ষকে আরও জোরালো ভূমিকা পালন করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)