কারাগার নিয়ে হাইকোর্টের ৮ দফা নির্দেশনা


কারাগারের ভেতরে সব ধরনের অবৈধ মাদক দ্রব্যের সরবরাহ বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ ও ব্যবস্থা নেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে আটটি নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক আসামির ওকালতনামায় ডেপুটি জেলারের সই না থাকা নিয়ে গত ১৯ অক্টোবর হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি রোববার (২৭ ডিসেম্বর) প্রকাশিত হয়।
নির্দেশনাগুলোতে আদালত বলেন,
১. বিচারাধীন মামলায় বা দণ্ডিত কারাবন্দিদের নাম, ঠিকানা, মামলার নাম্বার, মামলার ধারা, কোন আদালতে মামলা বিচারাধীন বা কোন আদালতের রায়ে কি দণ্ড হয়েছে, কারা মহাপরিদর্শক, জেলার, সহকারি জেলারকে সেসব তথ্য রেজিস্ট্রারে রাখতে হবে।
২. কারা কর্তৃপক্ষকে দণ্ডিত বা বিচারাধীন মামলায় কারাবন্দির কারাগারে আসা এবং বের হওয়ার তারিখ রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
৩. যথাযথভাবে যাচাইয়ের পর নিশ্চিত হয়ে কারা কর্তৃপক্ষ বা কারা কর্মকর্তাকে দণ্ডিত ব্যক্তি বা বিচারাধীন মামলায় কারাবন্দির ওকালতনামায় সই করতে হবে বা সিল দিতে হবে।
৪. সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষ অথবা কারা কর্মকর্তা ওকালতনামার যেখানে সই ও সিল দেবেন তার পাশে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার পুরো নাম, কারাগারের ল্যান্ডফোন ও মোবাইল ফোন নাম্বার উল্লেখ করবেন।
৫. কোনো অশোভন, অযাচিত পরিবেশ-পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সে জন্য যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি কারাগার ও কারা প্রাঙ্গনের শান্তি, নিরাপত্তা বজায় রাখতে কারা কর্তৃপক্ষকে সবসময় সতর্ক এবং সজাগ থাকতে হবে।
৬. কারাগারের ভেতরে সব ধরনের অবৈধ মাদক দ্রব্যের সরবরাহ বন্ধে কারা কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ ও ব্যবস্থা নিতে হবে।
৭. দর্শনার্থীদের কঠোরভাবে তল্লাশি করতে হবে এবং দর্শনার্থী কারো কাছে কোনো মাদকদ্রব্য, অবৈধ কিছু পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় এবং যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।
৮. কারা আইন, ১৮৯৪, কারাবন্দি আইন, ১৯০০ এবং বাংলাদেশ জেলকোডসহ সংশ্লিষ্ট সব আইনের বিধান কারা কর্তৃপক্ষকে কঠোরভাবে প্রতিপালন করতে হবে।
প্রতি তিন মাস পর পর এ রায় বাস্তবায়নের প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবরে দাখিল করতে হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, র্যাবের মহাপরিচালক, আইজি প্রিজন,সকল জেলার ও ডেপুটি জেলারের কাছে আদেশটি পাঠাতে বলা হয়েছে।
এর আগে চলতি বছর ১৯ অক্টোবর বিচারপতি মো.নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ, এই নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছিলেন। পূর্ণাঙ্গ রায়ে আদালত দুদকের করা মামলায় জামিন পেয়ে বের হওয়া আসামিকে চার সপ্তাহের মধ্যে পুনরায় বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করারও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন (মানিক) ও সহকারী অ্যাটর্নি মাহজাবিন রাব্বানী দীপা।
ডেপুটি জেলারের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মোহাম্মদ আলী আজম। আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ও শামীমা আক্তার।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
