কুল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন শার্শার মিজানুর গাজী
মোঃ সোহাগ হোসেন, (শার্শা) যশোর: শীতের সুস্বাদু ফল কুল, কোন কোন জায়গায় এই ফলটিকে চেনে আবার (বরুই) ফল হিসাবে। দেশে এখন টক-মিষ্টি দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন জাতের কুল চাষ হয়ে থাকে। বাদ পড়েনি দেশের দক্ষিণের জেলা যশোরে।
জেলার একটি ইউনিয়নে নিজ উদ্যোগে কুল চাষ করে ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন হতদরিদ্র মোঃ মিজানুর গাজী নামে এক কৃষক। হয়েছেন স্বাবলম্বীও। আগে মাত্র ২ কাঠা জমির উপরে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন তিনি। পরিবারের সদস্য স্বামী-স্ত্রীসহ ৪ জন।
বর্তমানে কুল চাষ করে মাঠে ২ বিঘা ১২ কাঠা জমি ও বসতবাড়ির জন্য ১০ কাঠা জমি মোট ৩ বিঘা ২ কাঠা জমি কিনেছেন মিজানুর গাজী। বসবাসের জন্য করেছেন চাররুম বিশিষ্ট একটি ছাদের বাড়ি। তার এই বাগানে কাজ করে অনেকের ঘরে ফিরেছে স্বচ্ছলতাও। বাগানে চারজন শ্রমিক কাজ করেন, প্রতিজন মজুরি পায় ৪ শত টাকা।
জানা যায়, যশোরের শার্শা উপজেলার ৭নম্বর কায়বা ইউনিয়নের রাড়িপুকুর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ মিজানুর গাজী ছিলেন একজন দিনমজুর। দশ বছর আগে ২০১৪ সালে দিনমজুরের পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে ৬ বিঘা জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন ৩ জাতের কুলবাগানের চাষ। কুলবাগান লাগাতে শুরুতেই খরচ করেন ৩ লক্ষ টাকা।
ওই বছরেই তিনি কুল বিক্রয় করেন ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। প্রথম বছরেই কুল বিক্রি করে তার লাভ হয় ৬০ হাজার টাকা। জমি নিজ বিঘা প্রতি ২০ হাজার টাকা, ৬ বিঘা জমির লিজের মূল্য আশে একলক্ষ্য ২০ হাজার টাকা। আর সার ও কীটনাশক বাবদ খরচ হয় ৮০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে বছরে খরচ হয় ২ লক্ষ টাকা।
চলতি মৌসুমে জমি লিজ, কীটনাশক, ও গাছের পরিচর্যাসহ মোট ২ লক্ষ্য টাকা খরচ করে পুনরায় কুলের চাষ করেন তিনি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কুলের বাম্পার ফলন হওয়ায় খুশি মিজানুর গাজী। এবছর তিনি বাগানে থাই’আপেল, বল’সুন্দরী, ও টক কুলের চাষ করেছেন।
বাগান মালিক মিজানুর গাজী বলেন, এবছর বাজারে কুলের চাহিদা বেশি, দামও ভালো পাচ্ছি। প্রতি কেজি কুল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। তিনি আরো বলেন, এবছর আমার বাগানে যে পরিমাণ ফলন হয়েছে তাতে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকার কুল বিক্রি করবো বলে তিনি আশাবাদী। তবে মিজানুর গাজীর দাবি এ পর্যন্ত উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে কোন পরামর্শ বা সহযোগিতা পাননি।
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, এই উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে কুলের চাষ হচ্ছে। কুল চাষীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শের পাশাপাশি মিজানুরের মতো অন্য কৃষকদের এমন চাষে আগ্রহী করতে কাজ করছেন কৃষি বিভাগ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)