বন্ধুত্বের নামে অহরহ যৌনতা হয়, এ দ্বায় রাষ্ট্রের নয়
বহু প্রজাতির “জীব সম্প্রদায়” আছে সে গুলো প্রধানত নারী কিংবা পুরুষ হিসেবে দুটি আলাদা শ্রেণীতে বিভক্ত, এমন শ্রেণী দু’টির প্রতিটি যেন পৃথক ভাবে এক একটি যৌনতা বা জৈবিক লিঙ্গ কিংবা সেক্স হিসেবে পরিচিত। ‘যৌন প্রজনন’ হলো জীব জগত এর মাঝে একটি সাধারণ প্রজনন এবং সন্তান জন্মদান প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার জন্যই যেন একই প্রজাতির দু’টি বিপরীত যৌনতার জীবের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভাবে সংযোগের প্রয়োজন হয়। তাই, মানুষের জৈবিক চাহিদা এটা কখনোই অন্যায় নয়, পুরুষ এবং নারীদের অবশ্যই ‘যৌনতা আসবে’ সেটাই স্বাভাবিক। তবে এ আলোচনার শুরুতে যে বিষয়ে বলতে চাই তা হলো এই- পারিবারিক বন্ধনের মাধ্যমে পারস্পরিক সম্মতিতে যৌনতা হওয়াটা যুক্তযুক্তি। কিন্তু আমাদের চার পাশে যে ভাবে যৌনতার ছড়াছড়ি হচ্ছে তা বিজ্ঞ মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে। দেখা যায় নাটকে যৌনতা, ছবিতে যৌনতা, সিরিয়ালের নামে যৌনতা। আনাচে-কানাচে প্রেমভালোবাসার নামেই যেন যৌনতা। নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনেও দেখানো হচ্ছে যে কীভাবে মেয়েদের প্রেমে ফেলানো যায়, আর কীভাবেই মেয়েদের কাজ থেকে অনৈতিক সুযোগ- সুবিধা আদায় করা যায়। ‘আনুশকা’ নামের মেয়েটি বিকৃত যৌনচারের শিকার হয়েছে। এরকম ভাবে শত শত নারীরা হয়তোবা বিকৃত যৌনাচারের শিকার হয়, হচ্ছে বা মারাও যাচ্ছে। সুতরাং এই বিকৃত যৌনাচার রোধের উপায়টা কী হবে।
শেক্সপিয়র বলেছেন,- ”একজন ছেলে কখনো একজন মেয়ের বন্ধু হতে পারে না, কারণ এখানে আবেগ আছে, দৈহিক আকাঙ্খা আছে।’ একই কথা বলেছেন আইরিশ কবি Oscar Wilde. “নারী এবং পুরুষের মাঝে কেবলই বন্ধুত্বের সুসম্পর্ক থাকাটা অসম্ভব। যা থাকতে পারে তা হলো আকাঙ্খা, দুর্বলতা, ঘৃণা কিংবা ভালোবাসা।” আর হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন,- ‘ছেলে আর মেয়ে বন্ধু হতে পারে কিন্ত তারা অবশ্যই প্রেমে পড়বে। হয়তো খুব অল্প সময়ের জন্যে অথবা ভুল সময়ে। কিংবা খুবই দেরিতে, আর নাহয় সবসময়ের জন্য। তবে প্রেমে তারা পড়বেই।’
সত্যি বলতে ছেলে ও মেয়েতে শুধুমাত্র বন্ধুত্ব অসম্ভব ও প্রকৃতি বিরুদ্ধ। কেননা শুধু মাত্র বন্ধুত্ব হলে যেন প্রকৃতি নিজের অস্তিত্ব হারাবে। চুম্বক আর লোহা কখনো পাশা পাশি থাকতে পারে না। আকৃষ্ট করবেই। বলতেই হয় যে আগুনের পাশে মোম গলবেই। ছেলে আর মেয়ের বন্ধুত্ব হতে পারে, কিন্তু একসময় প্রেমে কিংবা অবৈধ সম্পর্কে রুপ নিবেই। আর এটাই স্বাভাবিক। তাই বলতে চাই যে, বিপরীত লিঙ্গের বন্ধুত্বের পাশে ‘ছেলে বা মেয়েকে’ উঠা বসার দ্বায়িত্বটা বাবা মাকেই নিতে হবে। রাষ্ট্রীয় দ্বায়িত্বে এই গুলোর সমাধান করা খুবই কঠিন কাজ বলে আমি মনে করি।
বাবা মায়েরা জানেন ছেলে-মেয়েরা কি করছে, কোথায় যাচ্ছে, কি খাচ্ছে। তারা জেনেও না জানার ভান করেন। যতোই গলা ফাটিয়ে চিল্লানো হোক না কেন, প্রেম করো না। কেউ শুনবে না এমন ‘নীতি কথা’। আজকের ছেলে- মেয়ের পিতা মাতারাও হয়তো শুনবে না। আমাদের এই সোসাইটি এমনি হয়েছে, এটাই সত্য। কাউকে প্রেম করা থেকে রাষ্ট্র ফেরাতে পারব না। বরং দিনের পর দিন এটা বাড়ছে, বাড়বে। আবার, কিছু কিছু পিতা মাতার মুখেও বলতে শুনি প্রেমের মধ্যেও একটা সততা আছে, আছে- নাকি নৈতিকতা! আর সেই নৈতিকতা বা সততার বলেই অনেকে নাকি প্রেম করলেও ‘বিয়ের আগে ফিজিক্যাল’ রিলেশন করে না। কিন্তু আমি বলবো, ঐ সব বাবা-মারা ভুল ভাবনায় আছে। অষ্টম শ্রেনীর বইতেও যেন যৌনতা শেখানো হয়, দুজনের সম্মতিতে যৌনতা দোষের না। তা কি বিয়ে আগে হবে না পরে সেটা বাবা মায়েদের অবশ্য ভাবতে হবে। এই দ্বায়, অকপটে রাষ্ট্রের কিংবা সমাজের উপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবেনা। সমাজের কাঠামোতে তারাই নিজের সন্তানকে অনৈতিক লীলা খেলায় সুযোগ দিতে দিতেই যেন বিকৃত যৌনাচারগুলোকে মেনে নিতে পারছে না। এখনো সময় আছে নিজের সন্তানদের নিজ দ্বায়িত্বে ফিরিয়ে আনতে হবে। এমন বিকৃত যৌনাচারের ভয়াবহতা দিনে দিনে আরো বেড়ে যাবে বলে মনে করি।
লেখক:
নজরুল ইসলাম তোফা,
টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)