সাতক্ষীরায় গৃহহীনরা ঈদের উপহার পেলেন জমি-ঘর
পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে গৃহহীন মানুষদের ঈদের উপহার ঘর দিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিনামূল্যে দেশের সকল ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে ঘর করে দেয়ার সরকারি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তৃতীয় পর্যায়ে দেশে তৃতীয় ধাপে ৬৫ হাজারের বেশি ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে।
সেলক্ষ্যে তৃতীয় ধাপে ৩২ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে জমিসহ ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত জানুয়ারিতে প্রথম পর্যায়ে ৬৯ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে ঘর প্রদানের পর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে আরো ৫৩ হাজার ৩৪০ পরিবারকে দুই শতক জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা ঘর উপহার দিয়েছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার বেলা ১১টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশের ৪৫৯টি উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন এসব মানুষদের ঘর দেয়ার এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে জমির দলিল ও ঘরের চাবি উপকারভোগীদের হাতে তুলে দেন।
“বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবেনা” মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা ট্রাস্কফোর্স কমিটির মাধ্যমে জেলা প্রশাসন সাতক্ষীরা পর্যায়ক্রমে সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য গৃহ প্রদান কার্যক্রম অতি সফলতার সাথে পরিচালনা করেছেন। ক্ষুধামুক্ত দারিদ্রমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সাতক্ষীরা জেলার ৭টি উপজেলার ভূমিহীন, গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনে তালিকা প্রস্তুত করা হয়। এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে জেলায় মোট ১৮১৩টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়। বরাদ্ধকৃত একক গৃহের মধ্যে অধিকাংশ গৃহের নির্মাণ কার্যক্রম সমাপ্ত করা হয়েছে এবং বাকী গৃহের নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পথে। তৃতীয় পর্যায়ে ৮০৯টি বরাদ্দকৃত গৃহের কার্যক্রম চলমান আছে। তৃতীয় ধাপে ৬৫ হাজারের বেশি পরিবার পাবে এই উপহার । এমন পরিকল্পনা ও কর্মসূচি নিয়েই নির্মাণ কাজ করছে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প। এরইমধ্যে অর্ধেক বাড়ি প্রস্তুত হয়ে গেছে। যারা ঘর পাচ্ছেন, তাদের মাঝে যেন ঈদের আগেই ঈদ আনন্দ বইছে। জানা গেছে, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের তুলনায় তৃতীয় ধাপে কাঠামোতে আসছে বেশ পরিবর্তন। বাড়ানো হয়েছে নির্মাণ ব্যয়। যে কারণে ঘরগুলো মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী হবে। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের এরই মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে এক লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি ঘর দেওয়া হয়েছে। দুই শতাংশ জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা ঘর করে দেওয়া হয়েছে তাদের। এর সঙ্গে রান্নাঘর ও টয়লেট ছিল। আঙিনায় হাঁস-মুরগি পালন ও শাক-সবজি চাষেরও জায়গা ছিল।
সারা দেশের ন্যায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মিলনায়তনে গৃহ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. নজরুল ইসলাম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ মো. আসাদুজ্জামান বাবু, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা-তুজ-জোহরা, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপী, সদর সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুমনা আইরিন, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন উর রশিদ, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এস.এম মারুফ তানভীর হুসাইন সুজন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম কবির, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আব্দুর রশিদ, সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নাসেরুল হক, সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ইয়ারুল হক, সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. সফিউল আজম, সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম, বাঁশদহ ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মফিজুর রহমান প্রমুখ।
এসময় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এর আওতায় ঘর পাওয়া সুবিধাভোগিরা তাদেও অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন। এসময় রাজনীতিবিদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রান্তে সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শেখ সহিদুর রহমান।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)