কলারোয়ায় অপচিকিৎসায় মারা গেল কৃষকের ৮ লক্ষাধিক টাকার গরু
ভূয়া প্রাণী চিকিৎসকের অপচিকিৎসায় প্রাণ গেল ৮ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের গরুর। ফলে সর্বস্বান্ত হয়েছে এ দরিদ্র কৃষক।
ভূয়া চিকিৎসকের নাম – ইব্রাহিম হোসেন, সে উপজেলার কেরেলকাতা ইউনিয়নের নাকিলা গ্রামের বাসিন্দা। ভূক্তভোগী ঐ কৃষক আব্দুল গাফফার। তিনি একই ইউনিয়নের গৌরাঙ্গপুর গ্রামে মৃত শাগের গাইনের পুত্র।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কৃষক আব্দুল গাফফারের ৮ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের একটি হলিস্টিয়ান জাতের গরু কোরবানির হাটে বিক্রি না হয়ে অসুস্থ হলে কেরেলকাতার এআই ইব্রাহিম নিজেকে রেজিস্টার্ড প্রাণী চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে ২৫-২৬ দিন চিকিৎসা দিয়ে কোনো উন্নতি না হলে অভিযুক্ত ইব্রাহিম ভুক্তভোগীদের জানায় যে কলারোয়ায় মাজুবর নামের একজন ডিগ্রিধারী প্রাণী চিকিৎসক আছে। এর পর ঐ মাজুবরের অপচিকিৎসায় গত ৬ আগস্ট ঐ মূল্যবান গরুটি মারা যায়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিজেকে বড় ডিগ্রিধারী প্রাণী চিকিৎসক পরিচয় দানকারী মাজুবর, আসলে কলারোয়া উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসের কম্পাউন্ডার। সে ইতিপূর্বে কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নিজেকে বড় ডাক্তার পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অপচিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত প্রাণী চিকিৎসকদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে টাকা দাবি করা, বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির ঔষধ প্রেসক্রিশন করতে চাপ প্রয়োগ করে আসছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কেরেলকাতা ইউনিয়নের ভূক্তভোগী আব্দুল গাফফার বলেন, আমার গরু অসুস্থ হলে আমি ইব্রাহিম হোসেনকে ডাকি তিনিই আমাকে বড় ডাক্তার মাজুবর সাহেবের কথা বলেন। এবং তাকে ডেকে চিকিৎসা দেন। ৫-৭ টি ইন্জেকশন পুশ করেন আরো কিছু পাউডার দেন। পরে গরুটি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে অসংখ্যবার ফোন করলেও তারা রিসিভ করেনি। তিনি আরো বলেন, আমি দরিদ্র কৃষক আমি এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ঐ চিকিৎসক ইব্রাহিম হোসেন বলেন- আমি ঐ গরু চিকিৎসা করিনি। তারা আমাকে চিকিৎসার জন্য বলেছিলো। তবে তিনি যোগ্যতা না থাকলেও প্রাণী চিকিৎসা দেয়ার কথা শিকার করেন এবং কম্পাউন্ডার মাজুবরকে বড় ডাক্তার পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য ডাকার কথাও শিকার করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কলারোয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের কম্পাউন্ডার মাজুবর রহমান প্রথমে ঐ ষাড়টি চিকিৎসার কথা অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করেন। তবে বড় ডাক্তার পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা ও বিভিন্ন প্রান্তের চিকিৎসকদের নির্দিষ্ট কোম্পানির ঔষধ লিখতে প্রভাবিত করার কথাও অস্বীকার করেন।
কলারোয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা.অমল কুমার সরকার জানান, আমরা এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়ে তাকে শোকজ করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। তবে আমি জেনেছি প্রাথমিক চিকিৎসায় গরুটি সুস্থ্য ছিলো, কিন্তু পরবর্তীতে আর চিকিৎসা করানো হয়নি।
একজন কম্পাউন্ডার চিকিৎসা দিতে পারেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন- ভেটেরিনারি সার্জন ছাড়া আর কারো চিকিৎসা দেয়ার ক্ষমতা নেই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির বলেন, এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)