গৃহবধূকে নির্যাতন করে গভীর রাতে বাপের বাড়ি ফেলে গেল স্বামী
যৌতুকের টাকা না পেয়ে শশুর বাড়িতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সাতক্ষীরার গৃহবধূ রাবেয়া খাতুন। তাকে মারপিট করে অচেতন অবস্থায় বাবার বাড়িতে গভীর রাতে ফেলে এসেছে স্বামী নুরুজ্জামান। গুরুতর জখম রাবেয়া এখন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রাবেয়া খাতুন সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের আবদুর রহিমের ছেলে ট্রলি চালক নুরুজ্জামানের স্ত্রী ও সদর উপজেলার বৈচনা গ্রামের মহসিন আলি মেয়ে। আট বছর আগে নুরুজ্জামানের সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে রয়েছে একটি শিশু সন্তান।
রাবেয়ার ভাই মো. সালাহউদ্দিন বলেন, বিয়ের পর থেকে কারণে অকারণে তার বোনকে মারধর করে স্বামী নুরুজ্জামান। সে তার কাছে প্রায়ই যৌতুকের টাকা চায়। তিনি বলেন দরিদ্র মানুষ যা পারি তাই দিয়ে তাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করি। তিনি বলেন চাহিদামতো যৌতুকের টাকা না পেয়ে নুরুজ্জামান রাবেয়ার ওপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। বেশ কিছুদিন ধরে তাকে তালাক দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিতে থাকে নুরুজ্জামান।
সালাহউদ্দিন বলেন, রোববার একই বিষয়ে স্বামী নুরুজ্জামান, শশুর আবদুর রহিম ও শাশুড়ি আনজুমান আরা তাকে মারপিট করে। তার হাত পা ও দেহের বিভিন্ন অঙ্গে মারাত্মক জখম করে। মার খেয়ে রাবেয়া যখন চেতনা হারিয়ে ফেলে তখন তাকে শ্রীরামপুর থেকে নুরুজ্জামান ও তার সহযোগীরা রাবেয়ার বাবার বাড়ি বৈচনা গ্রামে ফেলে রেখে চলে যায়। হুমকি দিয়ে যায় যৌতুক দিতে না পারলে তোদের বোনকে পাঠাবি না। তারা এ নিয়ে কোনা মামলা করলেও ভালো হবেনা বলে হুমকি দেয়। সালাহউদ্দিন জানান রাতে গ্রাম্য ডাক্তার দিয়ে তার চিকিৎসা করানো হয়। সোমবার সন্ধ্যায় তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি জানান, মঙ্গলবার আমরা থানায় মামলা করবো।
মারপিটের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে রাবেয়ার চাচা শশুর শহিদুল ইসলাম বলেন যৌতুকের জন্য নয়, আমার বৌমা কালিগঞ্জে এক মৃতব্যক্তির বাড়িতে যেয়ে কিছু টাকা কাউকে না বলে নিয়ে এসেছিল। পরে ওই বাড়ির লোকজন এসে সেই টাকা তার কাছ থেকে উদ্ধারও করে। এই চুরির ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্বামী নুরুজ্জামান ও তার পরিবারের লোকজন রাবেয়াকে অস্বাভাবিকভাবে মারধর করেছে। এই ধরনের নির্যাতন করাটাই চরম অন্যায় কাজ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তবে রাবেয়ার ভাই মো: সালাউদ্দিন দাবি করেন, টাকা চুরির ঘটনা নয়, এটা নাটক মাত্র। তার কাছে যৌতুক আদায়ের জন্যই এই নির্যাতন করা হয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)