তালায় কপোতাক্ষ নদে ভয়াবহ ভাঙ্গন, সংস্কার কাজ নিয়ে অসন্তোষ আতঙ্কিত এলাকাবাসী
সেলিম হায়দার, তালা (সাতক্ষীরা) : সাতক্ষীরার তালায় মেলা বাজার এলাকায় কপোতাক্ষ নদে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রাথমিক ভাঙ্গনের সময় যথাউপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে মেলা বাজার-মাঝিয়াড়া সংযোগ পাকা রাস্তাসহ নদের পাড়ের কয়েকটি বাড়ি। এলাকাবাসীর দাবি অতিসত্বর ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে যে কোন সময় রাস্তা, মন্দিরসহ বাড়ীটি নদের গর্ভে বিলীন হয়ে বিস্তির্ণ এলাকা প্লাবিত হবে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা যায়, আপৎকালীন জরুরি প্যকেজে-১ এর মাধ্যমে গাছ দিয়ে পাইলিং ও মাটি দিয়ে ভরাট করার জন্য ২৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। মেসার্স তানিয়া এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ভাঙ্গন রোধে ২৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পাইলিং ও মাটি ভরাটের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। সে মোতাবেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে বাঁেধর পাইলিং ও মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন করেছে। কিন্তু সপ্তাহ পার না হতেই পাইলিংসহ পাকা রাস্তার সিংহভাগ কপোতাক্ষ নদের গর্ভে চলে য়ায়। পরবর্তীতে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড, (পাউবে)একই স্থান রক্ষার জন্য আবারও আপৎকালীন জরুরি প্যকেজে-২ এর আওতায় বালির বস্তার ডাম্পিংয়ে ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তানিয়া এন্টারপ্রাইজকে। যার কাজ চলমান রয়েছে।
স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে নিম্নমানের পাইলিং ও মাটি ভরাট করার কারণে সপ্তাহ না যেতেই পাইলিংসহ পাকা রাস্তাটি কপোতাক্ষে চলে গেছে। এখন শুনছি বালুর বস্তা দিয়ে নাকি ডাম্পিং করবে। সেখানে নাকি আরো ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এত টাকা বরাদ্দ দেওয়ার পরেও ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণে কখন যে মন্দীরসহ ঘরবাড়ী নদীতে মিশে যায় সেই আশংকায় রয়েছেন তারাসহ স্থানীয় এলাকাবাসী। স্থানীয়রা বলেন, বালুর বস্তায় ১শ ৭৫ কেজি করে বালু দেয়ার কথা থাকলেও দিচ্ছে অনেক কম, তাই ভাঙ্গন পয়েংন্টে এই বালুর বস্তার ডাম্পিং করলে কোনো উপকারে আসবে বলে মনে হয় না। সরকারের এত টাকা বরাদ্দের পরেও কাজের ধীরগতির ও নিম্মমানের পাইলিং এর কারণে বেড়িবাঁধটি চলে গেলো নদের মধ্যে। এখন বাঁধ যে টুকু আছে দ্রুত ডাম্পিং করে সংস্কার না করা হলে বাকি বাঁধসহ, মন্দীর, ঘরবাড়ি কপোতাক্ষ নদের গর্ভে বিলিন হয়ে বিস্তর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকায় দিন কাটছে তাদের।
ঠিকাদার আব্দুল মতিন বলেন, আপৎকালীন জরুরি প্যকেজের-১ পাইলিং ও মাটি দিয়ে ভরাটের কাজ করেছেন। প্রথম পর্যায়ে ভাঙ্গন এলাকায় ৫শ বালির বস্তা ফেলা হয়েছে। বর্তমানে বালির বস্তা ভরাটের কাজ চলছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাকী বস্তা গুলো ফেলে ডাম্পিংয়ের কাজ শেষ করা হবে বলে জানান তিনি।
সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-১ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিরুল ইসলাম জানান, প্যাকেজের আওতায় প্রথমে ২৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গাছ ও বাঁশ দিয়ে পাইলিং করলেও সেটা টেকেনি। একই জায়গায় আবারও আপৎকালীন জরুরি প্যাকেজের ২৭ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৭হাজর ২শ বালুর বস্তা দিয়ে ডাম্পিং করা হচ্ছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)