সাতক্ষীরায় সুন্দরবন দিবসের আলোচনা সভা
সুন্দরবনের মধু- জিআই স্বীকৃতি বাংলাদেশের প্রাপ্য- চাই রাষ্ট্রিীয় উদ্যোগ। সুন্দরবন দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, সুন্দরবন বাংলাদেশের উপক‚লীয় এলাকায় বসবাসরত মানুষকে প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে মায়ের মতো আগলে রেখে রক্ষা করে।
সুন্দরবন বাংলাদেশ তথা ধরিত্রী রক্ষায় অন্যতম রক্ষাকবর হিসেবে কাজ করে। সুন্দরবন আমাদের জাতীয় সম্পদ। এটি এখন বিশ্বঐতিহ্য। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে আলাদা করে চিহ্নিত করা যায়। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমা লকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে আগলে রেখেছে সুন্দরবন।
অনেকটা মায়ের কোলে একটি শিশু যেমন পরম নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকে তেমনি দক্ষিণ-পশ্চিমা লের এক বিরাট এলাকা সুন্দরবনকে অবলম্বন করে নিরাপদ রয়েছে। বিগত ২০০১ সালে খুলনায় অনুষ্ঠিত হয় ১ম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন। সম্মেলনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন সেই সময়ের রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ। সেই থেকে ১৪ ফেব্রæয়ারিকে সুন্দরবন দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
বক্তারা আরও বলেন, সুন্দরবন শুধুমাত্র পৃথিবীর একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনই নয়, বিশ্বে সুন্দরবনের মত এত সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য আর কোন বনে নেই। এই জন্যই সুন্দরবনকে বলা হয় ‘জীববৈচিত্র্যের জীবন্ত পাঠশালা’। সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় শিল্প স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল মানুষকে সচেতন করতে হবে। বন রক্ষায় স্থানীয় বন সংরক্ষণে সম্পৃক্ত করতে হবে এবং তাদের জ্ঞান কাজে লাগাতে হবে। সুন্দরবন বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সুন্দরবন ভ্রমণে আগ্রহী ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য ইকো টুরিজম নিশ্চিত করতে হবে। যথেচ্ছভাবে সুন্দরবনে গমনাগম বন্ধ করতে হবে।
বর্তমানে এই দিবস পালনের কর্মকাÐে সংযুক্ত থাকে সুন্দরবন একাডেমী, বন বিভাগ এবং বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংগঠন, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুন্দরবন সংলগ্ন সাংবাদিক সমাজ এবং প্রকৃতিপ্রেমী আপামর মানুষ। অতিমারি করোনার কারণে ২০২০ সালের পর অন-লাইন ভিত্তিক এবং খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে সুন্দরবন দিবস পালন করা হয়েছিল। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও প্রতিবারেরমত এবারও নানান আনুষ্ঠানিকতায় সুন্দরবন দিবস পালন করা হচ্ছে।
‘সুন্দরবনকে ভালোবাসুন, ১৪ ফেব্রæয়ারি সুন্দরবন দিবস ঘোষণা করুন’-শ্লোগানকে সামনে রেখে সাতক্ষীরায সুন্দর দিবস উদযাপিত হয়েছে। স্বদেশ সংস্থার নির্বাহি পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্তএর সঞ্চলনায় ১৪ ফেব্রæযারি ২০২৪ বুধবার সকাল ১০ টায় র্যালী শেষে শহরের ম্যানগোভ সভাঘরে সুন্দরবন দিবসের আহবায়ক প্রথম আলো পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি কল্যাণ ব্যানার্জীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সামাজিক ও রাজনৈতিকব্যক্তিত্ব জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক এড. আজাদ হোসেন বেলাল, শিক্ষাবিদ্ আঃ হামিদ, বীরমুক্তিযোদ্ধা সাবেক অধ্যক্ষ্য ওযাহেদুজ্জামান স্যার, টিআইবি সনাক সভাপতি হেনরি সরদার, প্রেসক্লাব সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপ্পী, এসএ টিভি জেলা প্রতিনিধি শাহিন গোলদার, সাংবাদিক ফরিদউদ্দীন ময়না,যুব প্রতিনিধি হাবিবুল হাসান, জয়সরদার,তারিক উদ্দীনজাহাঙ্গীর আলম, রপান্তরের জেলা সমন্বয়ক মাসুদ, ফরিদা আকতার বিউটি, উদিচির সভাপতি সিদ্দীকুর রহমান প্রমুখ।
সমগ্র অনুষ্ঠান আয়োজনে অংশগ্রণ করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা স্বদেশ, টিআইবি, আশা লোককেন্দ্র, সৃজনী মহিলা লোককন্দ্রে, অর্জন ফাউন্ডেশন, সুন্দরবন ফাউন্ডেশন, বিজিএফ, সুশীলন, উত্তরণ, সামস, হেড, অগ্রগতি সংস্থা, লিডার্স, ক্রিসেন্ট, প্রথম আলো বন্ধুসভা, রূপান্তর, সিপিএফ, সিডো, আশ্রয়, বারসিক।
দাবিসমূহ-
*১৪ ফেব্রুয়ারীকে জাতীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস ঘোষনা করা।
* সুন্দরবনের মধু- জিআই স্বীকৃতি বাংলাদেশের প্রাপ্য- চাই রাষ্ট্রিীয় উদ্যোগ।
*জীববৈচিত্র ও সুন্দরবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করা;
* সুন্দরবনের বিশেষ অঞ্চলকে অভয়ারণ্য অঞ্চল বৃদ্ধি করা।
*জলবায়ু অভিঘাত মোকাবেলায় সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহন ও বাস্তবায়ন।
*সুন্দরবন অ লকে ঘিরে জলবায়ু অর্থায়নের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
*প্রতিবেশ ও পরিবেশ বান্ধব পর্যটন নিশ্চিত করা;
*সুন্দরবনে প্লাষ্টিক ও পলিথিন নিষিদ্ধ করা এবং সুন্দরবনের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)