এডভোকেট আব্দুর রহমান কলেজ
সাতক্ষীরায় ৫ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগে চাকুরির অভিযোগ
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা শহরের বিনেরপোতায় অবস্থিত এডভোকেট আব্দুর রহমান কলেজে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে চাকুরী করছেন ৫ শিক্ষক। এতবছর ধওে অবৈধ ও নিয়মবহির্ভূতভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে চাকুরী করলেও তাদের বিরুদ্ধে এখনও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। যেকারণে এমপিওভ’ক্ত হয়ে এখনও পর্যন্ত বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন দেদারসে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০০ সালের ৪ জুন জাতীয় দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন তৎকালীন অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আবুল হোসেন মোঃ মকছুদুর রহমান। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, যুক্তিবিদ্যা, জীববিদ্যা, ভূগোল, ব্যবস্থাপনা, কৃষি বিজ্ঞানসহ অন্যান্য বিষয়ে অনার্সসহ ২য় শ্রেণীর ¯œাতকোত্তরদের অগ্রাধীকার। ২০০০ সালের ১৮ আগস্ট নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই কমিটি প্রার্থী চূড়ান্ত করেন। চূড়ান্তভাবে জীববিজ্ঞান বিষয়ে প্রভাষক পদে নিয়োগ প্রাপ্ত সরদার রমেশ চন্দ্র ১৯৯২ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি পাশ করেছেন তৃতীয় বিভাগ নিয়ে, ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রভাষক পদে নিয়োগ প্রাপ্ত জাহাঙ্গীর হোসেন ১৯৯৪ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যায় থেকে বি,কম পাশ করেছেন তৃতীয় শ্রেণীতে এবং ভূগোল বিষয়ে প্রভাষক পদে আব্দুল কাদের ১৯৯৪ সালে বিএ(পাশ) কোর্স শেষ করেছেন দ্বিতীয় বিভাগ নিয়ে।
এদিকে জনবল কাঠামো ১৯৯৫ সালের প্রজ্ঞাপনে দেখা যায়, প্রভাষক পদে সরাসরি কেউ নিয়োগ পেতে চাইলে প্রার্থীকে সংশ্লিষ্ঠ বিষয়ে ২য় শ্রেণীর অনার্সসহ ২য় শ্রেণীর ¯œাতকোত্তর ডিগ্রী এবং সকল পরীক্ষায় ২য় শ্রেণী/বিভাগ থাকতে হবে। অথবা ১ম শ্রেণীর ¯œাতকোত্তর ডিগ্রীসহ সকল পরীক্ষায় ২য় শ্রেণী/বিভাগ থাকতে হবে। এতএব ১৯৯৫ সালের জনবল কাঠামো অনুযায়ী জীববিজ্ঞান বিষয়ে প্রভাষক পদে নিয়োগ প্রাপ্ত সরদার রমেশ চন্দ্র, ব্যবস্থাপনা বিষয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন এবং ভ’গোল বিষয়ে আব্দুল কাদের নিয়োগের আবেদনের সময়ই অযোগ্য ছিল।
এছাড়া যুক্তিবিদ্যা বিষয়ে প্রভাষক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত শামীম উল আলম ও কৃষি বিজ্ঞান/কৃষি শিক্ষা বিষয়ে শেখ আবু সাঈদের নিয়োগও অবৈধ। কারণ নিয়োগ পরীক্ষার দিন যুক্তিবিদ্যা বিষয়ে ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে ১ জন অনুপস্থিত, ১ জন শিক্ষাগত যোগ্যতা বিহীন বিএ(পাশ) কোর্স ও এমএ ফলপ্রার্থী এবং একজন ¯œাতক(সম্মান) পাশ ও এমএ ফলপ্রার্থী। আর কৃষি বিজ্ঞান/কৃষি শিক্ষা বিষয়ে ৩ জন প্রার্থীর মধ্যে একজন এমএস পরীক্ষায় ফলপ্রার্থী। ফলে নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডে যুক্তিবিদ্যা বিষয়ে প্রভাষক শামীম-উল-আলম ও কৃষি বিজ্ঞান/কৃষি শিক্ষার ফলাফল পত্র নিয়োগ বিধি বহির্ভূত প্রস্তুতকৃত। কারণ নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রাথমিক যাছাই বাছাইয়ে অযোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিলে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রার্থীদের কোরাম পূরণ হওয়ার কথা ছিলনা।
নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আক্তারুজ্জামান বলেন, প্রভাষক পদে সরদার রমেশ চন্দ্র, শামীম উল আলম, জাহাঙ্গীর হোসেন, আব্দুল কাদের ও শেখ আবু সাঈদকে অবৈধভাবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছিল। আমি ওই নিয়োগ বোর্ডের একজন অধ্যক্ষ পদপ্রার্থী ছিলাম। যে কারণে তৎকালীন সভাপতি আবুল হোসেন মোঃ মকছুদুর রহমান নিজেই প্রার্থীদের কাগজপত্র যাছাই বাছাই করেছিলেন। আমি অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেলে বারবার গভর্ণিং বডিকে বলেছিলাম যে কাগজপত্র অনুযায়ী এই ৫ শিক্ষকের নিয়োগ অবৈধ। তবুও তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
অডিটে এগুলো ধরা পড়েনি কেন? ্এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, তৎকালীন সভাপতি অডিট কর্মকর্তাদের বড় অংকের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে এসব অনিয়মগুলো ম্যানেজ করেছেন।
এডভোকেট আব্দুর রহমান কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ বলেন, কয়েকদিন হলো আমি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। সুতরাং এ ব্যাপারে আমি কিছুই বলতে পারবোনা।
তবে এ ব্যাপারে তৎকালীন সভাপতি আবুল হোসেন মোঃ মকছুদুর রহমানের কাছে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তাছাড়া অভিযুক্ত সরদার রমেশ চন্দ্র, শামীম উল আলম, জাহাঙ্গীর হোসেন, আব্দুল কাদের ও শেখ আবু সাঈদের সাথেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)