সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে লোকালয়ের কাছে বেড়েছে বাঘের আনাগোনা
সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে বেড়েছে বাঘের চলাচল। সাম্প্রতিককালে মানববসতির অদূরে প্রায়ই বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যাচ্ছে। তাদের ছোটাছুটি ও গর্জনের শব্দও আসছে লোকালয়ে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গোলাখালি এলাকার একাধিক বাসিন্দা এমন তথ্য দিয়েছেন।
সুন্দরবনের লাগোয়া দ্বীপগ্রাম গোলাখালির কামাল হোসেন খোকনের বাড়ি থেকে বনের দূরত্ব আধা কিলোমিটার। বাড়ির পাশেই পাঁচ নদীর মোহনা। ওপারেই কালিঞ্চি গ্রাম। তাঁর ঘর থেকে বের হলেই চারদিকে চোখে পড়ে বন আর বন।
কামাল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন পরে এবার গোলাখালির বনে বাঘের গর্জন শুনতে পাচ্ছি আমরা। বাঘ যখন ডাক ছাড়ে তখন আমরা সতর্ক হয়ে যাই। সবাই মিলে কান পেতে শোনার চেষ্টা করি। গোলাখালির হেতাল জঙ্গলে দুটি বাঘের বিচরণ অনুভব করছি। এর একটি বাঘ, অপরটি বাঘিনী। সচরাচর সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যার আগে বাঘ অথবা বাঘিনী হুংকার দিলে বিপরীত গলায়ও সাড়া দেওয়ার গর্জন শোনা যায়। পরে ঘন হেতাল বনে বেশ শব্দ মেলে। এতে বোঝা যায়, বাঘ-বাঘিনী একত্র হচ্ছে।
কামাল হোসেন খোকন আরো জানান, শ্রাবণ ও ভাদ্র বাঘের প্রজনন সময়। শীতেও তারা প্রজননে মিলিত হয়। তিনি আরও বলেন, ‘গোলাখালির সীমানার খালের চরের কাদায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গেছে। বাঘ এই সীমানা খাল পার না হলেও সেখানে চলাফেরা করছে বলে আমরা বুঝতে পারি। অবশ্য শীত মৌসুমে দুপুরে বাঘ সীমানার খাল পার হয়ে গোলাখালির জনপদে চলে আসে। তারা রোদময় খোলা জায়গার ফসল ক্ষেতে ও মাঠে আয়েশ করে। প্রজননের জন্য মিলিত হয়।
সুন্দরবনের গোলাখালির বাসিন্দা আবুল হোসেন একজন প্রতিবন্ধী হয়েও নিয়মিত জঙ্গলে যান। দূর থেকে তিনি আঁচ করেন বাঘের চলাফেরা। কানে শোনেন শব্দ। গর্জনও শুনতে পাচ্ছেন আজকাল।
আবুল হোসেন বলেন,বাঘের গর্জনে আমরা ধারণা করছি, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। তাদের বিচরণও বেড়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. আবু হাসান বলেন, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেশ বেড়েছে। তাদের পায়ের ছাপ দেখা যাচ্ছে। বনে তাদের বিচরণ বেড়ে যাওয়ায় প্রায়ই বাঘ নজরে আসছে। গর্জনের কথা আমাকে কেউ জানায়নি, তবে বাঘের গর্জন তো স্বাভাবিক। প্রজনন ক্রিয়া ছাড়াও বাঘ বিভিন্ন সময়ে গর্জন দেয়।
বনের কলাগাছি স্টেশনের কথা উল্লেখ করে আবু হাসান বলেন, আমার কাছেও বাঘের পায়ের ছাপের ছবি রয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)