এবার ইসরায়েলে ইরানের অপারেশন ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ শুরু


অপারেশন ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ শুরু করে ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। শুক্রবার রাতে শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান, যা সরাসরি আঘাত হানে তেল আবিব ও আশেপাশের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি ও স্থাপনায়।
খবর তাসনিম নিউজ এজেন্সির।
প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রাজধানী তেল আবিবের অনেক এলাকা হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘরবাড়িতে ও স্থাপনায় আঘাত লেগেছে।
ইরান বলেছে, অপরেশনটি ছিল ভবন ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ইসরায়েলি হামলার পাল্টাজবাব। শুক্রবার গভীর রাতে ইসরায়েল আবাসিক এলাকা ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালালে অপারেশন ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ শুরু করে ইসলামী বিপ্লব গার্ড ও সেনাবাহিনী।
ইরান জানিয়েছে, এই হামলায় চিফ অফ স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ হোসেন বাঘেরি, আইআরজিসিতে কম্যান্ডার হোসেন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া ঘাঁটির কমান্ডার ঘোলাম আলী রাশিদ, অ্যারোস্পেস কম্যান্ডার আমির আলী হাজিজাদে ও অন্তত ছয়জন পারমাণবিক বিজ্ঞানী শহীদ হন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি এই অপরাধের জন্য জায়নিস্ট সরকারকে চরম শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই অপরাধের মাধ্যমে জায়নিস্টরা নিজেদের জন্য যে দুর্ভাগ্য ও যন্ত্রণা এনেছে, তা অল্প দিনেই দেখতে পাবে।’
ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান যে প্রতিশোধ নেবে, তার ইঙ্গিত বহু আগেই মিলেছিল। ইরান জানিয়েছিল, তারা একসাথে ছয়শ’রও বেশি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোঁড়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে। এ তথ্য সামনে আসার পর থেকেই নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছিলেন, ইসরায়েল যদি উত্তেজনা বাড়ায়, তবে তার পরিণাম ভয়াবহ হতে পারে।
ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ নামের বৃহৎ সামরিক প্রতিশোধ শুরু করেছে। এ অপারেশনের মূল লক্ষ্য হলো- ইসরায়েলের বিমানঘাঁটি, রাডার ব্যবস্থা, এবং ভূগর্ভস্থ সামরিক ঘাঁটি ধ্বংস করা। বিভিন্ন সামরিক সূত্র জানিয়েছিল, এই অপারেশন তিন ধাপে বাস্তবায়ন হবে-
১. প্রথম ধাপে বিমানঘাঁটি ও রাডার ব্যবস্থার ধ্বংস, ২. দ্বিতীয় ধাপে হিজবুল্লাহ ও হুতি বিদ্রোহীদের মাধ্যমে সীমান্তে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ৩. তৃতীয় ও চূড়ান্ত ধাপে ভূগর্ভস্থ ঘাঁটি থেকে হাইপারসনিক মিসাইল হামলা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের সমন্বিত আক্রমণ হলে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কতটা সক্ষমতা রয়েছে তা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াবে। বিশেষত, ইরানের বর্তমান সামরিক শক্তি আগের তুলনায় ১০ গুণ বেশি, যা এই যুদ্ধকে আরও ভয়াবহ করে তুলতে পারে।
এদিকে, ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট। ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মার্কিন নৌবাহিনীর বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে সক্ষম ধ্বংসকারী যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস থমাস হাডনারকে পশ্চিম ভূমধ্যসাগর থেকে পূর্ব ভূমধ্যসাগরের দিকে যাত্রা শুরু করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী জাহাজকেও অগ্রসর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (১৩ জুন) মার্কিন কর্মকর্তারা জানায়, যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সামরিক সম্পদ সরিয়ে নিচ্ছে, যার মধ্যে জাহাজও রয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েল-ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলার মাঝে মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলোও মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে টহল দিচ্ছে। বিমান ঘাঁটিগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। তবে বিষয়গুলো এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। এখনও এসব চলমান সামরিক অভিযানের অংশ।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
