কালের সাক্ষী শ্যামনগরের জাহাজঘাটা নৌদুর্গ


এবিএম কাইয়ুম রাজ: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার খানপুর গ্রামে অবস্থিত ঐতিহাসিক জাহাজঘাটা নৌদুর্গ। শ্যামনগর উপজেলা সদরের প্রায় ৪ কিলোমিটার উত্তরে যমুনা-ইছামতি নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত এই দুর্গটি নির্মাণ করেছিলেন বাংলার বিখ্যাত রাজা প্রতাপাদিত্য। মুঘলদের আক্রমণ প্রতিহত করতে তিনি এই শক্তিশালী নৌঘাঁটি স্থাপন করেন। এটি ছিল তার প্রধান কার্যালয় এবং পোতাশ্রয়।
জাহাজঘাটা নৌদুর্গে রাজা প্রতাপাদিত্যের রণতরী নির্মাণ ও মেরামতের কাজ হতো। দুর্গটি তিনতলা বিশিষ্ট হলেও বর্তমানে নিচের দুই তলা মাটির নিচে বিলীন হয়ে গেছে। উপরের একটি তলা এখনও ইতিহাসের নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ধারণা করা হয়, এটি ১৬ শতকের শেষ দশকে নির্মিত হয়েছিল।
বর্তমানে দেখা যায় একটি ভবনের ধ্বংসাবশেষ। লবণাক্ততার কারণে ভবনের চুন-সুরকি ধসে পড়ছে। উত্তর-দক্ষিণে লম্বা ভবনটিতে ছয়টি কক্ষ রয়েছে—অফিস, মালখানা, শয়নকক্ষ ও স্নানাগারসহ বিভিন্ন ব্যবহারের স্থান। ভবনের একাংশে কোনো জানালা ছিল না। ছাদের গম্বুজে বড় বড় ছিদ্র ছিল যেখানে স্বচ্ছ কাঁচ বা স্ফটিক বসানো ছিল, যা দিয়ে আলো প্রবেশ করত।
জাহাজঘাটার পাশেই ছিল নৌ সেনাপতি ডুডলির নামে নামকরণ হওয়া দুদলী গ্রাম। এখানেই ছিল রাজ্যের নৌকা ও জাহাজ নির্মাণ ও সংরক্ষণের ডকইয়ার্ড। বর্তমানে প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী আসে কালের সাক্ষী এই ঐতিহাসিক নৌদুর্গটি দেখতে।
কালিগঞ্জ উপজেলা থেকে শ্যামনগরের পথে মৌতলা পার হলেই খানপুর গ্রামের পথ ধরলেই দেখা মিলবে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনার।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
