তৃতীয় স্ত্রীর মামলায় জামিন পেয়ে প্রবাসীর স্ত্রী নিয়ে উধাও


এর আগে বিয়ে করেছেন ৪টি। ৩নং স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় তার ১৪ বছরের জেল হয়। সেই মামলায় জামিনে বেরিয়ে আবার প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়েছেন মাওলানা জাকারিয়া (৩৫) নামে এক ইমাম। গত ১৯ সেপ্টেম্বর সকালে তিনি বাড়ি থেকে বের হন নতুন চাকরিতে যোগদানের কথা বলে। নিরুদ্দেশ হওয়ার ১০ দিন পার হলেও সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত তার সন্ধান পায়নি পুলিশ।
মাওলানা জাকারিয়া সিরাজগঞ্জর জেলার শাহাজাদপুর উপজেলার সানিলা গ্রামের বাসিন্দা ও কাশীনাথপুর আ. লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাওলানা আব্দুল খালেকের ছেলে। তিনি এতদিন সাঁথিয়া উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের গোপালপুর-আত্রাইশুকা গ্রামের মসজিদে ইমামতি করতেন।
জাকারিয়ার সঙ্গে পালিয়ে যাওয়া নাছিমা খাতুন (৩০) সাঁথিয়া উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের আত্রাইশুকা গ্রামের মৃত ইয়াদ আলীর মেয়ে। তার স্বামী সৌদি প্রবাসী।
সাঁথিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাশেদুল ইসলাম থানায় দেয়া অভিযোগের বরাত দিয়ে জানান, সাঁথিয়া উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের গোপালপুর-আত্রাইশুকা মসজিদের ইমাম ছিলেন মাওলানা জাকারিয়া। মসজিদের পাশেই বাবার বাড়িতে থাকা প্রবাসীর স্ত্রী নাছিমাকে তিনি বিভিন্ন সময় প্রেমের প্রস্তাব দিতেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর সকালে জাকারিয়া বিয়ের প্রলোভন দিয়ে নাছিমাকে নিয়ে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় নাছিমার স্বর্ণালংকার ও তার কাছে স্বামীর পাঠানো নগদ প্রায় ৫ লাখ টাকাও নিয়ে যান।
নাছিমার পরিবারের সদস্যরা ওইদিন অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাদের সন্ধান পায়নি। পরদিন ২০ সেপ্টেম্বর নাছিমার মামা আ. মান্নান বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে এই ঘটনার পর মাওলানার নানা কুকীর্তি একের পর এক বেরিয়ে আসছে। এর আগে তিনি একে একে ৪টি বিয়ে করেন।
মাওলানা জাকারিয়ার চার নম্বর স্ত্রী শারমিন আক্তার সাথী বলেন, তার স্বামী তাকেসহ চারটি বিয়ে করেছেন। এখন এটা দিয়ে হবে ৫ নম্বর বিয়ে। এর আগের এক স্ত্রী রাজশাহীর বাসিন্দা চম্পা খাতুন তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় তার ১৪ বছরের জেল হয়। উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিনে মুক্ত রয়েছেন।
শারমিন আক্তার সাথী আরও বলেন, মাওলানা জাকারিয়া সাঁথিয়া উপজেলার গৌরিগ্রামে মুক্তি নামে একজনকে বিয়ে করেন। সেই সংসারে জাকারিয়ার একটি ছেলেও রয়েছে। ওই স্ত্রীও তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। ওই ঝামেলায় মাওলানা জাকারিয়া টাকা দিয়ে মিমাংসা করে মামলা থেকে রেহাই পান।
সাথী বলেন, তাকে বিয়ের সময় তার বাবার কাছ থেকে জাকারিয়া তিন লাখ টাকা যৌতুক নেন। গত ১৯ সেপ্টেম্বর সুজানগর উপজেলায় এক মসজিদে ইমাম পদে চাকরির কথা বলে বাড়ি থেকে তিনি বের হন। কিন্তু এ পর্যন্ত তার হদিস নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ ক’জন ইমাম বলেন, জাাকরিয়া মসজিদের ইমাম নামের কলঙ্ক। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, মাওলানা জাকারিয়াকে গ্রেফতার করতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তাকে শিগগিরই গ্রেফতার করা সম্ভব বলে তিনি জানান।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
