বর্ষায় সুস্থ থাকতে যা খাবেন
এখন বর্ষাকাল। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকে। যে কারণে পরিবেশ থাকে স্যাঁতসেঁতে। এই মৌসুমে সাধারণ সর্দিজ্বর হয়ে থাকে, যাকে আমরা ভাইরাল ফ্লু হিসেবে জানি। ভাইরাল ফ্লু হলে ৩-৪ দিনের মধ্যে রোগী ভালো হয়ে যায়। এ ছাড়াও ডেঙ্গুজ্বর এবং এখন আবার করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে আমাদের মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকাটা খুবই জরুরি। এ জন্য আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানো অত্যন্ত প্রয়োজন।
সাধারণত জ্বরের সময় আমাদের শরীরের বিপাক ক্রিয়ার হার (Metabolism rate) বেড়ে যাওয়ার কারণে আমাদের শক্তি ক্ষয় হয়ে থাকে। এই সময় অনেক ক্যালোরিযুক্ত ও তরল জাতীয় খাবারের দরকার হয়। সে জন্য এই সময় খাদ্যতালিকায় আমিষ ও তরল জাতীয় খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে। এ ছাড়াও ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার খেতে হবে। দৈনিক ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে এবং ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
দৈনিক আমাদের চাহিদা অনুযায়ী যে পরিমাণ ভিটামিন সি প্রয়োজন, তা দুটো আমলকী অথবা একটি মাঝারি আকারের পেয়ারা থেকে আমরা পেয়ে থাকি। প্রতি ১০০ গ্রাম আমলকীতে ৪৩৪.০৫ মি. গ্রাম, পেয়ারায় ২১০ মি.গ্রাম, কাগজি লেবুতে ৬৩ মি.গ্রাম, পাকা জাম্বুরায় ১০৫ মি.গ্রাম ভিটামিন সি রয়েছে।
প্রয়োজনীয় কিছু খাবারের উৎস
আমাদের আমিষ জাতীয় খাবারের উৎস মাছ, বিভিন্ন ধরনের মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, বীজ ও বাদাম। ভিটামিন সির উৎস আমলকী, পেয়ারা, লেবু, কমলা, মালটা, কামরাঙা, কালো জাম, জাম্বুরা, বিলাতি তেঁতুল, লটকন, আনারস, ডেউয়া, চেরি, স্ট্রবেরি, শালগম, পুঁইশাক, পালংশাক, কাঁচা মরিচ, পার্সলি পাতা, টমেটো, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, মিষ্টি আলু, ব্রাসেলস স্প্রাউট, বাঁধাকপি, ধনেপাতা, সিলারি, ডাঁটাশাক, মেথিশাক, সজনেশাক, নিমপাতা, কচুশাক, শালগম পাতা, করলা পাতা, সাজনে ডাঁটা, ফুলকপি, করলা, উচ্ছে, কাঁকরোল, সরিষা শাক ও যেকোনো টক জাতীয় ফল।
তরল জাতীয় খাবার, চিকেন স্যুপ, ভেজিটেবল স্যুপ, লেবুর শরবত, মালটা ও অরেঞ্জ জুস, ডাবের পানি, মিল্ক সেক, বিভিন্ন ফলের রস, দুধ অথবা দই এবং বিভিন্ন ফল দিয়ে তৈরি স্মুদি, লেবু-চা, আদা-চা, মসলা-চা, লাল-চা ইত্যাদি।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে এমন কিছু খাবার
রসুন: গবেষণায় দেখা গেছে, খালি পেটে রসুন খাওয়া হলে এটি অ্যান্টিবায়োটিকের মতো কাজ করে। খালি পেটে অথবা নাশতার পর ১ কোয়া রসুন খাতে পারেন। সামান্য তেলে অর্ধেক কোয়া রসুন ভেজে তা এক টেবিল চামচ মধুর সঙ্গে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে খেলে বুকে জমে থাকা কফ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। শরীর থেকে জ্বর ও ঠান্ডা দূর করতে প্রতিদিন ২-৩ কোয়া রসুন কাঁচা খেতে হবে।
লেবু: লেবুতে ‘রুটিন’ (Rutein) নামের বিশেষ ফ্লাভোনয়েড পাওয়া যায়, যা শিরা ও রক্ত জালিকার প্রাচীর শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়। এ ছাড়া লেবুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি ও বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, যা সর্দিকাশির সমস্যা দূরসহ বিভিন্ন ক্যানসার নিরাময়ে সহায়তা করে। স্নায়ু ও মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়, ফুসফুস পরিষ্কার রাখে এবং হাঁপানির সমস্যা দূর করে।
মধু: ফুসফুসের যাবতীয় রোগে মধু উপকারী। শ্বাসকষ্ট দূর করতে মধু দারুণ কাজ করে। আধা গ্রাম গুঁড়ো করা গোলমরিচের সঙ্গে সমপরিমাণ মধু ও আদা মিশিয়ে দিনে তিনবার খেলে হাঁপানি রোগে উপকার পাওয়া যায়।
ডাবের পানি: রিবোফ্লোবিন, নিয়াসিন, থায়ামিন ও পিরিডক্সিনের মতো উপকারী উপাদানে ভরপুর ডাবের পানি প্রতিদিন পান করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে জীবাণুরা আক্রমণ করতে পারে না।
সুত্র প্রথম আলো
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)