মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরা, দেশ ও বিশ্বের সকল সংবাদ, সবার আগে

মেয়েদের জন্য ভিক্ষা ছাড়েন অন্ধ নজরুল, গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ

জন্ম থেকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নজরুল ইসলাম। জীবনের শুরুর দিকে ভিক্ষাবৃত্তি করতেন তিনি। তবে তার দুই যমজ মেয়ে হিরামনি ও মুক্তামনি যখন বড় ক্লাসে উঠতে শুরু করে তখন তাদের সম্মানের কথা ভেবে ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দিয়ে গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে শুরু করেন তিনি। সুরের মূর্ছনায় দর্শকদের খুশি করে যে টাকা পান সেটা দিয়ে কোন রকমে চালিয়ে নিচ্ছেন দুই মেয়ের পড়াশোনার খরচ। শত অভাবেও সন্তাদের পড়াতে চান তিনি।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নজরুল ইসলাম সাতক্ষীরা সদরের ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা। সংসার জীবনে দুটি জমজ মেয়ে ও একটি ১২ বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে তার। তবে অর্থ কষ্টের মধ্যেও চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় এ প্লাস পেয়ে কলেজে ভর্তি হয়েছেন মুক্তামনি ও হিরামনি।

নজরুলের মেয়ে হিরামনি ও মুক্তামনি জানান, পড়াশুনার সুবিধার্থে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপবৃত্তি পেতে তাদের দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়। ইংরেজিতে তারা বরাবরই দুর্বল ছিল। বাবুলিয়া জয়মণি-শ্রীনাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করাএ সময় টাকার অভাবে শুধুমাত্র জাহাঙ্গীর আলম ভুট্টো স্যারের কাছে দুই বোন মাসিক ৪০০ টাকায় পড়াশুনা করত। ইংরেজিতে একজন শিক্ষকের কাছে পড়তে পারলে তারা আরও ভালো ফল করতে পারত এসএসসিতে। বর্তমানে তারা শহীদ স্মৃতি কলেজে পড়াশুনা করছে।

জমজ দুই বোন বলেন, প্রতিদিন বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার পথ হেঁটে বাবুলিয়া বাজার যেতে হয়। সেখান থেকে ইজিবাইকে কলেজে যেতে আসতে তাদের দু’বোনের ৬০ টাকা লাগে। টিফিন তো দূরের কথা পথ খরচ যেদিন থাকে না সেদিন কলেজে যাওয়া হয় না। বই কেনার খরচ কমাতে দুই বোন বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। বিত্তবানদের সহযোগিতা না পেলে আমাদের পড়াশোনা অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নজরুলের প্রতিবেশী রাবেয়া খাতুন জানান, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নজরুল জীবনের শুরুর দিকে ভিক্ষাবৃত্তি করলেও পরবর্তীতে মেয়েদের সম্মানের কথা বিবেচনা করে ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে গান করা শুরু করেন। বিভিন্ন হাটবাজারে গান শুনিয়ে মানুষকে খুশি করে যে টাকা পান সেটা দিয়ে সংসার চালান ও মেয়েদের পড়াশোনার খরচ যোগান। মেয়ে দুটো ভালো ফলাফল করে কলেজে পড়ছে। তার বাবার সামান্য আয় দিয়ে একদিকে যেমন সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় অপরদিকে মেধাবী মেয়ে দুইটির পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিত্তবান কোনো মানুষের মানবিকতা হয়তো তাদের জীবনের চিত্র পাল্টে দিতে পারে।

নজরুলের স্ত্রী শরিফা খাতুন জানান, মেয়ে দুটো মেধাবী তবে তাদের যথাযথ পড়াশুনার খরচ চালাতে কষ্ট হচ্ছে আমাদের। আমার স্বামী অন্ধ মানুষ। বিভিন্ন বাজারে আমার স্বামী গান-বাজনা করে মানুষকে খুশি করে যে টাকা পান সেটা দিয়ে সংসার কোনরকমে চলে আবার তিনটা সন্তানের পড়াশোনা, সব মিলিয়ে নাজেহাল একটা অবস্থার মধ্যে রয়েছি আমরা। সরকারের পক্ষ থেকে বা কারো সহযোগিতা পেলে মেয়ে দুটো পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে তাছাড়া সম্ভব নয়।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নজরুল জানান, জন্ম থেকে আমার দৃষ্টিশক্তি নেই সুরটুকু দিয়েছেন তা দিয়ে খালি গলায় গান গেয়ে হাঁটে বাজারে গান শুনিয়ে মানুষের কাছ থেকে পাওয়া টাকা নিয়ে সংসার যাত্রা নির্বাহ করি। এভাবে পরিশ্রম করে অর্জিত পয়সা দিয়ে যমজ মেয়ে মুক্তমনি ও হিরামনিকে গত বছর এসএসসি পাস করিয়েছেন। ছোট ছেলে আরাফাতকে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াচ্ছেন। হীরামনি ও মুক্তামনি এ প্লাস পেয়ে বর্তমানে বাণিজ্য বিভাগে শহীদ স্মৃতি কলেজে পড়াশুনা করছে। তার স্ত্রী শরিফা খাতুন সংসারের হাল ধরে তার মতো একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর জীবনকে ধন্য করেছেন।

নজরুল ইসলাম তার জীবনের স্মৃতিচারণা করে বলেন, পেট চালাতে এক সময় পাড়ায় পাড়ায় সাহায্য চেয়ে চলেছি। হীরামনি ও মুক্তমণি বিদ্যালয়ে যত উঁচু ক্লাসে উঠতে থাকে তখন থেকে সন্তানদের আত্মসম্মানের কথা ভেবে ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দিয়ে শুরু করি গান। বাড়ি থেকে নিকটবর্তী সাতক্ষীরা, খুলনা ও যশোরের হাট বাজারে গান শুনিয়ে মানুষকে মুগ্ধ করে পয়সা উপার্জন করি। এজন্য আমি একটি সাউন্ড বক্স, একটি মাইক্রোফোন কিনেছি। আর ইজিবাইকের ভাড়া বাদ দিয়ে প্রতিদিন আমার ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়। প্রতি তিন মাস পরপর প্রতিবন্ধী ভাতা পাই দুই হাজার ২৫০ টাকা। এ দিয়েই আমাদের চলে সংসার। তবে কলেজে মেয়ের পড়াতে অনেক খরচ। সামান্য আয়ে মেয়েদের পড়ালেখা চালানো সম্ভব নয়। বিত্তবান মানুষের সহযোগিতা না পেলে মেধাবী মেয়েদের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে।

বাবুলিয়া জয়মনি-শ্রীনাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রসাদ কুমার বিশ্বাস বলেন, হীরামণি ও মুক্তামণি খুভ ভালো স্বভাবের মেয়ে। তারা পড়াশুনায় যথেষ্ট ভালো। তাদের বাবা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জেনে সেশন চার্জ, পুনঃভর্তি ফি ও পরীক্ষার ফি যথাসম্ভব কম নিয়ে তাদেরকে পড়াশুনা করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে যে কলেজে তারা ভর্তি হয়েছে সেখান থেকেও তারা একই ধরণের সুবিধা পাবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

সাতক্ষীরা সদরের উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু জানান, যেহেতু জন্ম থেকে নজরুল ইসলাম দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিষয়টা অত্যন্ত মানবিক। তার দুটি মেয়েকে নিয়ে আমার কাছে আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও সরকারি সহায়তা করা হবে। তাছাড়া যেহেতু মেয়ে দুটো মেধাবী তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

একই রকম সংবাদ সমূহ

কলারোয়ার ধানদিয়া চৌরাস্তায় মাদক বিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

দেবাশীষ চক্রবর্ত্তী বাবু: মাদক মুক্ত সমাজ গড়ি, সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলি এবিস্তারিত পড়ুন

পেশাদারিত্বের সাথে মানবসেবা করতে চাই: সাতক্ষীরার এসপি মনিরুল ইসলাম

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেছেন, আমরা পেশাদারিত্বের সাথে মানবসেবা করতেবিস্তারিত পড়ুন

সাতক্ষীরায় পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেলেন ৫৮ জন

গাজী হাবিব, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরাতে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষায়বিস্তারিত পড়ুন

  • সাতক্ষীরায় হারানো মোবাইল উদ্ধার করে মালিকদের ফেরত দিল পুলিশ
  • উপকূলীয় নারীদের অভিযোজিত ও টেকসই সবজি চাষের লক্ষ্যে বীজ ও সার বিতরণ
  • সাতক্ষীরায় টাকা ছাড়া ৫৮ জনের পুলিশে চাকরি
  • কলারোয়ায় থানা পুলিশের সাথে সুধীজনদের মতবিনিমেষ সভা
  • সাতক্ষীরার আশাশুনিতে মাটি চাপা পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
  • সাতক্ষীরায় স্বর্ণের বারসহ আটক ১
  • একবার ব্যবহার যোগ্য প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ক স্কুল সচেতনাতামূলক সভা
  • সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ৫নং শিবপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড কমিটি ও কর্মীসভা অনুষ্ঠিত
  • কলারোয়ার মডেল মসজিদ: উদ্বোধন হয়েছে আড়াই বছর আগে, ‘অসম্পন্ন’ এখনো; ছাগল-কুকুরের বিচরণ!
  • কলারোয়ায় বিএসএইচ সিংগা হাইস্কুলে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত
  • কদমতলা বাজার কমিটির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে আইয়ুব সভাপতি, রফিকুল সম্পাদক
  • সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত