শ্যামনগরে ভূমিহীন নেতার বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক সংবাদ প্রকাশ এবং চক্রান্তের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সরকার পরিবর্তনের সুযোগে ভূমিহীন পল্লীতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ভূমিহীণ নেতা মোকছেদসহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা হয়রানি মূলক সংবাদ প্রকাশ এবং চক্রান্তের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শ্যামনগরের নকিপুর গ্রামের ছকিমুদ্দিনের ছেলে মোকছেদ আলী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত ১৯৭৭ সালে শ্যামনগর মৌজায় এস এ খতিয়ান নং- নামজারী খতিয়ান নং- ১/১১৫, ১/২২, ১/২০, ৭৫৬,৭৫২, ৭৫৯, ৭৮১ ও ৭৫৭ দাগে মোট ৪ একর ৬ শতক সম্পত্তি সরকার বাহাদুরের কাছে ভূমিহীনদের নামে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত গ্রহন দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছি। সেখানে উপজেলার অসহায় ভূমিহীন ৪৩টি পরিবার ঘরবাড়ি নির্মান করে মাথাগোজায় ঠাঁই পেয়েছে। অথচ নকিপুর গ্রামের মৃত সামছুদ্দীন গাজীর পুত্র সুজা মাহমুদ ওরফে সুজাউদ্দীন আহমেদ জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র সৃষ্টি করে ওই ভূমিহীণ পল্লী অবৈধভাবে দখলের পায়তারা করতে থাকে। ওই জাল কাগজপত্রের বুনিয়াদে সুজা মাহমুদ ৬২/২১ মামলা দায়ের করেন। আদালত তার কাগজপত্র পর্যালোচনা করে কাগজপত্র জাল সেটি প্রমানিত হলে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফারুক ইকবাল সাতক্ষীরা আদালতে সিআর ৫৬৮/ ২২(শ্যাম:) ধারা ৪৬৭/ ৪৬৮/ ৪৭১/ ৪৭৫/ ৪৭৬ পেনাল কোড ১৮৬০ মোতাবেক মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে। আদালতে জায়গা না পেয়ে ২০০৮ সাল থেকে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থেকে তৎকালিন এমপি জগলুল হায়দারের ছায়াতলে থেকে বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে সুজা মাহমুদের পুত্র মেহেদী হাসান মারুফ ও ইয়াছিন আরাফাত বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ছিলো। আতাউল হক দোলন এমপি হওয়ার পর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পান তার ছোট ভাই ইয়াছিন আরাফাত। তারা পুরো পরিবার আওয়ামীলীগের হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার মতো মানুষ শ্যামনগরে কেউ ছিলো না। অথচ বর্তমানে ভোলপাল্টে বিএনপি সাজার চেষ্টা করছেন তারা।
তিনি আরো বলেন, শ্যামনগর উপজেলার জাল জালিয়াতি চক্রের সভাপতি সুজা মাহমুদ। তার ছেলে মারুফ সেক্রেটারী, মারুফের স্ত্রী তানজিলা দফতর এবং পুত্র ইয়াছিন আরাফাত সহ-সভাপতির ভূমিকা পালন করে আসছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পালায়নের পর ১২টি ইউনিয়নের জাল জালিয়াতি চক্রের হোতাদের সাথে আলোচনা করে মারুফ নকিপুরস্থ কাটখালী মোকছেদ নগর ভূমিহীন পল্লীতে অগ্নিসংযোগ,লুটপাট, গাছপালা কর্তন, নারী নির্যাতন ও ভাংচুর চালিয়ে ভূমিহীনদের উচ্ছেদের চেষ্টা করে। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সুজা মাহমুদের সাথে মিশেছে আরেকজন জালিয়াতির হোতা বারেক গাজী। সে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় ৬০ বিঘা সরকারি জমি ভোগদখল করে যাচ্ছে। দীর্ঘ ৩৪ বছর মামলা করে ১২০ বিঘা জমি আমি মুক্ত করেছি। সে সময় তৎকালিন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল হাই বলেন সরকারের ৮০ কোটি টাকার সম্পদ উদ্ধার করেছেন। কিন্তু তিনি বদলী হয়ে যাওয়ার পর আবারো ওই সম্পত্তি দখল করে ভূমিদস্যু বারেক গাজী গং। এ ঘটনায় দেওয়ানী ৬৫/১১ নং মামলা করেন বারেক গাজীর স্ত্রী জাহানারা খাতুন। ওই মামলায় সরকার পক্ষকে বিবাদী করা হয়। মামলায় আমাকেও বিবাদী করা হয়। মামলায় দীর্ঘদিন কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ১৪/৬/২০২৩ তারিখে আদালত ভূমিহীনদের পক্ষে রায় দেন। অথচ মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি মেহেদী হাসান মারুফ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় আমাকে ভূমিদস্যু উল্লেখ্য করে নানা মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। মিথ্যাচার করা হচ্ছে আমার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেও। অপরাধ থাকলে আমার আছে। পরিবারের সদস্যরা তো কোন অপরাধ করেনি। যারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন, তাদের কাছে আমার দাবি কোথায় কার জমি দখল করেছি, কোথায় অত্যাচার করেছি নাম ঠিকানাসহ প্রকাশ করুন। যদি না পারেন তাহলে কিন্তু আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। প্রকৃতপক্ষে ভূমিহীনদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারনে আমার বিরুদ্ধে এধরনের মিথ্যাচার করা হচ্ছে। বিশেষ করে যারা মানববন্ধন করেছেন তারা সকলেই ভূমিহীন পল্লীতের অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের সাথে জড়িত।
অবিলম্বে ওই ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক ভূমিহীন পল্লীতে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)