সরকার সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী ও আধুনিকায়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যুদ্ধের জন্য নয়, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য। বাংলাদেশ যুদ্ধ নয়, শান্তিতে বিশ্বাসী।
রোববার (৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০২২ পরিদর্শন শেষ এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী ও আধুনিকায়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০৪১ সালে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কাজ করা হচ্ছে।
নবীন ক্যাডেটদের দেশসেবায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তোমাদের মনে রাখতে হবে, তোমরা এ দেশের সন্তান; জনগণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই তোমাদের সবাইকে সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্নার সমান অংশীদার হতে হবে। সুযোগ্য নেতৃত্ব, সার্বিক দিক-নির্দেশনা, পেশাদারিত্ব, দেশপ্রেম ও আন্তরিকতার মাধ্যমে তোমাদের দেশের সেবা করে যেতে হবে। দেশপ্রেমের মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করাই হবে তোমাদের পেশাগত জীবনের প্রধান ব্রত।
তিনি বলেন, ‘৭৫-এর পর দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। তখন সেনাবাহিনীকে আধুনিকায়ন করার পদক্ষেপ নেয়া হয়। আমরা শান্তি চাই, যুদ্ধ নয়। জাতির পিতাই বলেছেন – সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়; আমরা তা মেনে চলছি। সেভাবে আমরা আমাদের দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে বিজয় অর্জন করে স্বাধীন হয় দেশ। আর এই স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এ সশস্ত্র বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতির পিতা স্বাধীনতার পর দেশ গঠনের দায়িত্ব নেন, ওই সময় তার একটাই লক্ষ্য ছিল আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে সশস্ত্র বাহিনীকে পেশাদার ও শক্তিশালী বাহিনীতে গড়ে তোলা।
সরকার প্রধান বলেন, ১৯৭৫ সালের পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস হারিয়ে যেতে বসেছিল, আমরা সরকার গঠন করার পর তা উদ্ধার করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এবং আদর্শ নিয়ে সশস্ত্র বাহিনী গড়ে উঠতে পারে সেই পদক্ষেপ নেয়া হয়।
যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ার সময়ে বঙ্গবন্ধু সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে কাজ করেছেন। তারই নীতি অনুসরণ করে বর্তমান সরকারও সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নে কাজ করে চলেছে বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের সৌভাগ্য ২০২১ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আমরা যেহেতু ২০২১ সালে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছি, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আজকের নবীন অফিসাররাই হবে ২০৪১ এর সৈনিক। যারা বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবে।
ভাষণের শুরুতে তিনি ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টে ঘাতকদের হাতে তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করেন।
এর আগে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০২২ পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল ১০টার দিকে সেখানে পৌঁছে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন তিনি।
মিলিটারি একাডেমি থেকে দুপুরে হেলিকপ্টারে চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামে আসবেন শেখ হাসিনা। স্টেডিয়াম থেকে গাড়িতে করে প্রধানমন্ত্রী পলোগ্রাউন্ড মাঠে জনসভায় যোগ দেবেন।
চট্টগ্রাম নগর, চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে একটি ১৬০ ফুট লম্বা নৌকার আদলে তৈরি সভা মঞ্চে ভাষণ দেবেন তিনি।
এরই মধ্যে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাস্থল ঘিরে কঠোর নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলা হয়েছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে এখন উৎসবের আমেজ। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, উত্তর জেলা সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীসহ দলের ঊর্ধ্বতন নেতারা এরই মধ্যে জনসভার মাঠ পরিদর্শন করেছেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)