ইয়াবার টাকা না পেয়ে মায়ের পেটে কাঁচি ঢুকিয়ে দিলেন মেয়ে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে মাদক সেবনের টাকা না দেওয়ায় মেয়ের কাঁচির আঘাতে মা রহিমা বেগম (৫০) নিহত হয়েছেন। রোববার সকাল ছয়টার দিকে উপজেলার আইয়ূবপুর ইউনিয়নের দশআনী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতের স্বামীর নাম বাবুল মিয়া। স্বামীর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আখাউড়া উপজেলার দেবগ্রামে হলেও বিয়ের পর থেকে তিনি বাবার বাড়িতেই থাকতেন। এ ঘটনায় ঘাতক মেয়ে পাপিয়া বেগমকে (২৭) আটক করেছে পুলিশ।
এলাকাবাসী জানায়, আইয়ুবপুর ইউনিয়নের দশআনী গ্রামের করিম মিয়ার মেয়ে রহিমা বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় আখাউড়া উপজেলার দেবগ্রাম বাবুল মিয়ার সাথে। বিয়ের পর থেকে স্বামীসহ বাবার বাড়িতে বসবাস করছিলেন তিনি। তাদের দুই মেয়ে পাপিয়া ও পপি। বড় মেয়ে পাপিয়া বেগম( ২৭) প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর দুই বছর আগে আইয়ুবপুর গ্রামের ইসহাক মিয়া নামের এক যুবককে বিয়ে করেন। কিন্তু ইসহাক মিয়ার পরিবার এই বিয়ে মেনে না নেওয়ায় তিনিও পাপিয়ার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। পাপিয়া মাদকাসক্ত ছিলেন। মাদকের টাকার জন্য পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কলহ লেগেই থাকতো পাপিয়ার। তার স্বামী ইসহাকও মাদকাসক্ত।
পুলিশ জানায়, রোববার সকাল ছয়টার দিকে মার কাছে ইয়াবা কেনার জন্য টাকা চান পাপিয়া বেগম। এ নিয়ে মা-মেয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে পাপিয়া মায়ের পেটে কাঁচি দিয়ে আঘাত করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হলে তাকে প্রথমে দশআনী বাজারে বাবুল মিয়ার ফার্মেসিতে নেওয়া হয়। পরে তাকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রহিমা বেগমের ছোট মেয়ে পপি বলেন, সকালে আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ শব্দ শুনে উঠে দেখি পাপিয়া মার পেটে কাঁচি ঢুকিয়ে দিয়েছে। এসময় আমরা মাকে বাবুল ডাক্তারের দোকানে নিয়ে যাই। সেখানে ব্যান্ডেজ করে বাড়িতে নিয়ে আসলে তার অবস্থা খারাপ হওয়ার বাঞ্ছারামপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মা মারা যায়।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার আতাউল করিম জানান, রহিমা বেগমকে হাসপাতালে আনার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখি তিনি আগেই মারা গেছেন।
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ওসি রাজু আহমেদ জানান, মেয়ের কেচির আঘাতে মা মারা যাওয়ার খবর পেয়ে আমরা অভিযান চালিয়ে ঘাতক পাপিয়াকে আটক করেছি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে এই পরিবারের অনেকেই মাদকসেবন করেন বলে শুনেছি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)