পিরোজপুরে ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক শিক্ষকের! অতঃপর ধরা
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে এক মাদ্রাসা শিক্ষককে গণধোলাই দিয়েছে স্থানীয়রা। অভিযুক্ত হাবিবুল বাশার উপজেলার সূর্যমনি হাচানিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক। শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে নিবন্ধনকৃত তিনি।
শিক্ষক হাবিবুল বাশার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাকে নিয়ে যে কথা উঠেছে তা সবই শুনা কথা। এর কোন ভিত্তি নেই। এলাকায় একেকজনে একেক কথা বলে।
ওই শিক্ষকের তথ্যানুযায়ী স্থায়ী ঠিকানা বরগুনা সদরের ১০নং নলটানা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড নিশান বাড়িয়া এলাকায়। পিতার নাম বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তিনি।
শিক্ষক হিসেবে ইনডেক্স নাম্বারও দিতে চান না তিনি। সূর্যমণি এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থেকে ১০ বছর ধরে ওই মাদ্রাসায় কর্মরত আছেন।
সঠিকভাবে তথ্য না দেওয়ার কারন হিসেবে জানা যায়, ইনডেক্সধারী এই শিক্ষক সম্প্রতি এনটিআরসিএ’র ৩য় গণবিজ্ঞপ্তিতে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে সিলেক্ট হয়েছে। সামনে পুলিশ ভেরিফিকেশন। এজন্য স্থায়ী নাম ঠিকানা গোপন রাখার চেষ্টা করেন।
জানা গেছে, ঘটনার দিন গত মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে ওই শিক্ষক ছাত্রীর বাড়িতে যায়। বাড়িতে ছাত্রীর বাবার উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড়ে পালাবার চেষ্টা করে শিক্ষক। কিন্তু পালাবার সময় পুকুরে পড়ে যাওয়ায় শেষ রক্ষা হযনি তার। তাকে ধরে ঘরের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। পাশের ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ওই রাতে এসে ছাড়িয়ে নেয়। ২/১ দিনের মধ্যেই এলাকা ছাড়ার শর্ত সাপেক্ষে তাকে পুলিশে না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা আরও জানান, এলাকায় হাবিব মাষ্টার নামে পরিচিত স্থানীয় মাদ্রাসার ওই শিক্ষক বাড়িতে গিয়ে ইংরেজিসহ অন্যান্য বিষয়ে প্রাইভেট পড়াতেন। এতে একই প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেনীর এক ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। বিষয়টি জানাজানি হলে অভিভাবকরাও বিষয়টি অবগত হন। ঘটনার দিন বিষয়টি আরও নিশ্চিত হন অভিভাবকরা।
মান সম্মানের ভয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী বা অভিভাবক এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ না দিলেও স্থানীয়ভাবে মিমাংসার চেষ্টা চলছে।
শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়ে মাদ্রাসা থেকে ছুটি নিয়ে চিকিৎসা নেন ওই লম্পট শিক্ষক। ছুটি নেওয়ার বিষয়টি মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ শাহ আলম নিশ্চিত করেছেন।
ভারপ্রাপ্ত সুপার বলেন, এলাকার একটি বিষয় নিয়ে মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) হাবিবুল বাশার ওরফে হাবিব মাষ্টারের সাথে একটু ঝামেলা হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা পর্যায়ের একজন রাজনৈতিক নেতা মিমাংসা করে দিচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্রীর বাড়িতে শিক্ষককে জিম্মি করে রাখা হয়েছে এমন খবরে সূর্মমনি (২ নং ওয়ার্ড) গ্রামের ইউপি সদস্য হানিফ মিয়া ওই বাড়িতে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে একটি মুচলেকা তৈরি করে অভিভাবক ও স্থানীয়দের হাত থেকে ওই শিক্ষককে উদ্ধার করেন। ইউপি সদস্য মোবাইল ফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, ইউপি সদস্য স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা না করে তাৎক্ষণিক ভাবে অভিযুক্তকে পুলিশে দেওয়া উচিত ছিল।
মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমজাদ হোসেন জানান, ওই শিক্ষক চিকিৎসার জন্য ছুটি নিয়েছে। একটি ঘটনা শুনেছি। কোন লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাঃ নূরুল ইসলাম বাদল জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায় নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)