সাতক্ষীরায় মার্চেন্ট সোসাইটির গ্রাহকদের জামানতের টাকা ফেরত এর দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
সাতক্ষীরা শহরের আবুল কাশেম সড়কস্থ জেড প্লাজায় অবস্থিত মার্চেন্ট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি. নামের সরকার অনুমোদিত একটি অর্থ লগ্নীকারি প্রতিষ্ঠান জেলার ৭শ’ গ্রাহকের প্রায় ১১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির পক্ষে মো. আব্দুল খালেক এই অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, মার্চেন্ট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি. সরকার অনুমোদিত একটি অর্থ লগ্নীকারি প্রতিষ্ঠান। যার রেজি: নং-৪৫/৩। সমিতির সদস্য সংখ্যা ৭শ’ জন। সমিতির ৬ সদস্যের পরিচালনা কমিটির সভাপতি শেখ আহসানুর রশিদ এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ মামুনুর রশিদ বার্ষিক সাধারণ সভা না করেই তাদের ইচ্ছামত কার্যক্রম চালাচ্ছেন। তারা অধিক মুনাফা (১৮% থেকে ২০%) দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মোট ১১ কোটি টাকা জামানাত নেন। গঠনতন্ত্রের ১৪ থেকে ২১ ধারা অমান্য করে কৌশলে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয় ও বন্ধুদের নামে মিথ্যা লোন দেখিয়ে শেখ আহসানুর রশিদ ১ কোটি ২৫ লাখ, শেখ মামুনুর রশিদ ২ কোটি ৩০ লাখ মেহেুবার ৭০ লাখ, তানিয়া ৫০ লাখ, হোসনে আরা ৫ লাখ, বাহারুল ১৯ লাখ, তৌফিক ১৯ লাখ, মনিরুজ্জামান ১৬ লাখ, সহিদুল ১১ লাখ, এহেসান ৭০ হাজার, শামীম ৫ লাখ, জান্নাতুল ২ লাখ, সোফিয়া ১০ লাখ, ইসমাইল পরিবারের নামে ২ কোটি ৪৯ লাখ, ব্যাংক থেকে নেয়া ১ কোটি টাকা, বেতনভাতা ২কোটি ১০ লাখ এবং মালামাল বাবদ ১কোটি অতিরিক্ত ভাউচার দেখিয়ে মোট ১১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। আব্দুল খালেক বলেন, সদস্যরা ২০২০ সালের জুন মাসে জামানতের এবং মুনফার টাকা দাবি করলে সভাপতি বার বার ওয়াদা করে তালবাহনা শুরু করেন।
অবশেষে ২০ সালের ২৯ অক্টোবর পাওনা টাকার জন্য সদস্যরা সমিতির কার্যালয়ে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করলে পৌর সভার ৯ ওযার্ডের কাউন্সিলর সাগরের মধ্যস্থতায় স্টাম্পে লিখিত সিদ্ধান্ত হয় যে, সভাপতি ৩ মাসের মধ্যে সমিতির তহবিলে ৫ কোটি টাকা জমা দিবেন এবং গ্যারান্টিস্বরুপ ৫ কোটি টাকার একটি চেক প্রদান করেন। এঘটনার পর তলবী নোটিশের প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর বিশেষ তলবী সাধারণ সভায় ৭ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। তিনি আরো বলেন, সমিতির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের প্রতারনার বিষয় জানতে পেরে ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুদক চেয়ারম্যান, ডিআইজি, ডিসি, এসপি ও সমবায় কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়। এরপ্রেক্ষিতে ডিআইজি নির্দেশনা মোতাবেক সাতক্ষীরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশা: ও অপরাধ) বাদি এবং আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদন্তে নির্দেশ দেন যে, শেখ আহসানুর রশিদ ও শেখ মামুনুর রশিদ প্রতি রবিবার ডিসি অফিসে হাজিরা দিবে। সাতক্ষীরা থানার বাইরে যাবে না। প্রতি সপ্তাহে জমা টাকার রির্পোট দিবে।
আব্দুল খালেক অভিযোগ করে বলেন, শেখ আহসানুর রশিদ তার গুন্ডা বাহিনী দিয়ে পাওনা দারদের উপর হামলা চালাচ্ছে ও জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে। বিষয়টি অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে গত ১২ জানয়ারি অবহিত করা হয়েছে। এদিকে তারা না জানিয়ে সমিতির অফিস থেকে ৩টি এসি সেট ও একটি কম্পিউটার নিয়ে গেছে। প্রতারকদের বিরুদ্ধে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। তিনি মার্চেন্ট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের গ্রাহকদের জামানতের ১১ কোটি টাকা ফেরত দাবি করে প্রতারক শেখ আহসানুর রশিদ ও শেখ মামুনুর রশিদ এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে প্রতরণার শিকার অর্ধশতাধিক গ্রাহক উপস্থিত ছিলেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)