আগুন লাগা ভবনটি ছিলো এক মৃত্যুকূপ
অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায়, বেইলি রোডের সাততলা ভবনটির মালিককে তিন দফা চিঠি দিয়েছিলো ফায়ার সার্ভিস। তারপরও ত্রুটি সারানোর কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। নিচতলার ছোট্ট আগুন নেভানোর মতো কোনো ফায়ার এক্সটিংগুইশার ছিলো না।
আটকে পড়া মানুষদের নেমে আসার জন্য ছিলো না কোনো প্রশস্ত সিঁড়ি। সব মিলে ভবনটিকে মৃত্যুকূপ বলছেন নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবীব।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছিলো ছুটির আমেজ। আর লিপ ইয়ার উদযাপনে রেস্তোরাঁগুলোতে ছিলো নানা অফার। তাই ভিড়টাও ছিলো বেশি। ভবনের বিভিন্ন তলায় ছিলো কাচ্চি ভাই, পিৎজা ইন, স্ট্রিট ওভেন, খানাস’সহ আরও কয়েকটি রেস্টুরেন্ট।
ভবনটি তৈরি করে আমিন মোহাম্মদ গ্রুপ। পরে বিক্রি হয় ফ্ল্যাট। ফ্লোর ভাড়া নিয়ে গড়ে ওঠে রেস্তোরাঁ বিপণী বিতান। ভবনে লিফট ছিলো দু’টি। সিঁড়ি একটি। ছিলো না কোনো জরুরি পথ। নামার পথে চার তলার সরু সিঁড়িতে ছিলো রান্নার সিলিন্ডার। সেই সিঁড়ি আবার নিচতলা পর্যন্ত যুক্ত নয়। তাই আটকে পড়ারা আটকে ছিলেন এক মৃত্যুকূপে।
ভবনটি ঘুরে দেখে স্থপতি ইকবাল হাবীবের অভিযোগ, সরকারি সংস্থাগুলোই এই মৃত্যুকূপকে অনুমোদন দিয়েছে।
স্থপতি ও নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবীব বলেন, বাণিজ্যিক বা অফিস হিসেবে তৈরি করার কথা বলে এখানে রেস্টুরেন্ট করা হয়েছে। ভবনটির প্রবেশদ্বার ও সিঁড়ি কোনোটিই আইনকানুন অনুযায়ী তৈরি করা হয়নি। ভবনের ফায়ার স্কেপও যথাযথভাবে তৈরি করা হয়নি।
অভিযোগ আছে তিনবার চিঠি দেয়ার পরও ভবনটির বিরুদ্ধে ফায়ার সার্ভিসকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেয়া হয়নি। ছিলো অদৃশ্য চাপ। সবশেষ ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালের দেয়া চিঠিতে দেখা যায়; ভবনটির ওপরের তলায় ফায়ার সেফটি প্লান ছিলো না। ফায়ার অনাপত্তিও ছিলো না। নেই ফায়ার লিফট ও পাম্প হাউজ।
বেইলি রোড ট্রাজেডিতে হতাহতদের পরিচয়বেইলি রোড ট্রাজেডিতে হতাহতদের পরিচয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ভবনটি আমাদের মনিটরিংয়ের মধ্যেই ছিলো।
ভবন থেকে বের হওয়া বা বাতাস চলাচলের পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার কারণেই তিন তলায় আটকে পড়া বেশির ভাগ মানুষ আগুনের ধোয়ায় মারা যায়। চিকিৎসকরাও বলছেন একই কথা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)