কলারোয়ার ফোর মার্ডার মামলায় আসামী রাহানুরের ফাঁসির রায় ঘোষণা
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের চানজনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত চাঞ্চল্যকর মামলার একমাত্র আসামী রাহানুর রহমানকে ফাঁসিতে
ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষণা করেছে আদালত।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় সাতক্ষীরার সিনিয়র দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলার নথি ও তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে পিপি এডভোকেট আব্দুল লতিফ জানান, কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিষা গ্রামের শাহজাহান ডাক্তারের ছোট ছেলে রাহানুর রহমান (৩৬) বেকারত্বের কারনে বড় ভাই শাহীনুরের সংসারে খাওয়া দাওয়া করতো। শারীরিক অসুস্থতার কারনে কোন কাজ না করায় গত বছরের ১০ জানুয়ারি স্ত্রী তালাক দেয় রাহানুর রহমানকে। সংসারে
টাকা দিতে না পারায় শাহীনুরের স্ত্রী দেবর রাহানুরকে মাঝে মাঝে গালমন্দ করতো।
এরই জের ধরে গত বছরের ১৪ অক্টোবর রাতে ভাই শাহীনুর রহমান (৪০), ভাবী সাবিনা খাতুন (৩০), তাদের ছেলে ব্রজবক্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র সিয়াম হোসেন মাহী (১০) ও মেয়ে একই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী তাসনিম সুলতানাকে (৮) কোমল পানীয় এর সাথে ঘুমের বাড়ি খাওয়ায় এ মামলার একমাত্র আসামী রাহানুর রহমান (৩৬)।
এরপর ভোর চারটার দিকে হাত পা বেঁধে তাদেরকে একে একে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ সময় তাদের ৪ মাসের শিশু মারিয়াকে হত্যা না করে
তাকে লাশের পাশে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় নিহত শাহীনুরের শাশুড়ি কলারোয়া উপজেলার উফাপুর গ্রামের রাশেদ গাজীর স্ত্রী ময়না খাতুন বাদি হয়ে কারো নাম
উল্লেখ না করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তে নেমে সিআইডি সন্দিগ্ধ আসামী হিসেবে শাহীনুরের ভাই রাহানুর রহমান, একই গ্রামের রাজ্জাক দালাল, আব্দুল মালেক ও ধানঘরা গ্রামের আসাদুল
সরদারকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত রাহানুরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ২১ অক্টোবর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বিলাস মন্ডলের কাছে রাহানুর নিজেই হত্যার দায় স্বীকার করে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
নিহত পরিবারে বেঁচে থাকা একমাত্র শিশু মারিয়া বর্তমানে হেলাতলা ইউপি সদস্য নাছিমা খাতুনের কাছে বড় হচ্ছে।
গত ২৪ নভেম্বর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম আসামী রাহানুর রহমানের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলায় গত ১৪ জানুয়ারী অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।
মামলা চলাকালীন আসামী রাহানুর সাতক্ষীরা কারাগারেই আটক ছিল। পৌনে ১২টার দিকে আদালতে নিয়ে আসে, রায় ঘোষণা শেষে তাকে ফের আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ।
দশ মাস কারাগারে অবস্থানকালীন তার মুখে দাঁড়ি দেখা যায়। তবে রায় শেষে বিচলিত হতে দেখা যায় নি। ফাঁসির দন্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামী রাহানুরের মা বোন বা কাউকে আদালতে দেখাও যায়নি।
আসামী পক্ষের আইনজীবী এস এম হায়দার এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে উচ্চ আদালতে আপীল করবেন বলে জানান।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)