তালায় ওসি পরিচয়ে চাঁদাদাবির অভিযোগে কনস্টেবল মাসুদের নামে মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার তালায় ঈদের ছুটিতে এসে ওসি পরিচয় দিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মাসুদ রানা নামে এক পুলিশ কনস্টেবলের নামে আদালতে মামলা হয়েছে। সোমবার (২৪ জুন) আদালতে মামলটি দায়ের করেন আলামিন মোড়ল নামের এক ব্যক্তি।
অভিযুক্ত মাসুদ রানা সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার হাজরাকাঠী গ্রামের মহিউদ্দীন শেখের ছেলে। একই সাথে তিনি রংপুর পুলিশ লাইনে কনস্টেবল পদে চাকুরীরত রয়েছেন। মামলার বাদী আলমিন মোড়ল একই উপজেলার বারুইহাটি গ্রামের মৃত. আব্দুস ছাত্তারের ছেলে।
মামলার বিররণীতে জানা যায়, অভিযুক্ত মাসুদ রানার বোন মেহেরুন্নেছার সঙ্গে আলআমিনের তিন বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর আল আমিন জানতে পারেন মেনেরুনেচ্ছার আগে একটি বিয়ে ছিলো একই সাথে সেখানকার একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিষয়টি জানতে পারলে মেনেরুন্নেছা তার কাবিনের টাকার দাবীতে আদালতে মামলা করেন। মামলায় আলআমিন খালাস পেয়েছে সাম্প্রতি।
এদিকে, ১৯ জুন ভোর রাতে আল আমিনের বাবা আব্দুস ছাত্তার মারা যায়। ওইদিন সকালে মরদেহ দাফনের সকল প্রস্তুতি চলাকালে পুলিশ কনস্টেবল মাসুদ ও তার বোন মেহেরুন্নেছা আলআমিনের বাড়ীতে এসে হাজির হন। এসময় মাসুদ রানা পুলিশের ওসির পরিচয় দিয়ে আলআমিনের আত্নীয়স্বজনদের কাছে তার বোনের ভরণপোষণসহ মোট ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাহিদা মতে টাকা না পেলে তার বাবার দাফন করতে দিবেন না বলে জানিয়ে দেন।
বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা জানতে পারলে অবস্থা খারাপ হওয়ার উপক্রম থাকায় কোন উপায়ন্ত না পেয়ে মাসুদ রানা ও তার বোন দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে দাফন কাজ শেষে বিষয়টি নিয়ে তালা থানাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আলআমিন। একই সাথে সোমবার (২৪ জুন) আলআমিন বাদী হয়ে মাসুদ রানাকে আসামী করে আদালতে চাঁদাদাবির মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বাদী আল-আমিন মোড়ল জানানা, ১৯ জুন তার বাবা মারা গেলে সকাল ১১ টার দিকে মাসুদ রানা ও মেরুন্নেছা তাদের বাড়ীতে আসেন। এসময় মাসুদ নিজেকে পুলিশের ওসি পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি দেখান আত্নীয়-স্বজনদের সঙ্গে। মাসুদ ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন, টাকা না পেলে মরহেদ দাফন করতে দিবে না বলে জানান।
বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়দের ভয়ে মাসুদ দ্রুত সেখান থেকে চলে যায়। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে তালা থানাতে জানালে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসেন। চাঁদা দাবির বিষয়টি সুষ্ট বিচারের দাবিতে আদালতের শরাণাপন্ন হয়েছি।
তিনি আরও জানান, আগের বিয়ে ও সন্তান গোপন করে মাসুদের বোনের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে বিষয়টি জানতে পারলে প্রায় মেহেরুন্নেছা কাবিনের টাকার চাপ দিতো। পরে আদালতে মামলা করলে আদালত সাম্প্রতি খালাস দিয়ে আমাকে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মাসুদ রানা জানান, তার বোনের সাথে আলামিনের বিয়ে হয়। তবে সংসারিক নানাবিধ সমস্যার কারনে আদালতে মামলা করেন তার বোন মেহেরুন্নেছা বেগম। যে মামলাটি চলমান রয়েছে। বোনের শ্বশুর গত ১৯ জুন মারা গেলে সেখানে যান। তবে ওসির পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবি করা হয়নি।
তালা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক খলিল জানান, মরদেহ দাফনে বাঁধাগ্রস্ত করা হচ্ছে এমন সংবাদ আসলে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে স্থানীয়দের বক্তব্যের মাধ্যমে জানতে পারি মাসুদ রানা ও মেহেরুন্নেছা টাকা চেয়েছে, টাকা না দিলে দাফন সম্পূর্ন করতে দিবেনা। আবার মাসুদ রানা ও মেহেরুন্নেছাদের পক্ষ থেকে লোকমারফতে জানতে পারি তারা মরদেহ দেখতে এসেছিলেন। আদালতে মামলা চলমান থাকায় বিষয়টা থানাতে নেওয়া হয়নি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)